সূচীপত্র
রমজান মাসের রোজা রাখার পর গ্রামে গঞ্জে ঈদ পরবর্তী স্বাক্ষী রোজা রাখে যা মূলত শাওয়াল মাসের রোজা – এ রোজা মূলত সারা মাস যারা রোজা রাখে তাই রেখে থাকেন- সাক্ষী রোজা
সাক্ষী রোজা কি? – স্বাক্ষী রোজা বলতে কোন রোজা নাই। এটি শাওয়াল মাসের ৬ রোজা নামেই পরিচিত। এ রোজা মূলত সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়ার জন্য রাখা হয়। মুমিনগণ এ রোজা রেখে থাকেন, তবে গ্রামের মহিলাগণ এ রোজা অধিকতর রেখে থাকেন যদিও সকল মুমিন ও নিয়মিত রোজাদারগণ এ রোজা রেখে থাকে। কেউ কেউ সারা বছরই প্রতি সপ্তাহে সোমবার রোজা রেখে থাকেন।
শহর-গঞ্জে এখনও ঈদ পরবর্তী রোজা ‘৬ রোজা’ হিসেবেই বেশি পরিচিত। শাওয়াল মাসের ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ এ ৬ রোজার রয়েছে অনেক প্রতিদান। এ রোজাগুলো পালনে বছরজুড়ে রোজার সাওয়াব পাওয়ার সুখবর দিয়েছেন বিশ্বনবি। সুন্নত রোজা ছয়টি রাখা খুবই মর্যাদাপূর্ণ।
শাওয়াল মাস ইসলামিক ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ মাস। এই মাসে মুসলমান দুইটি রমজানী রোজা রাখতে পারেন, যা হলো রমজানের উত্তরদিকে রোজার দিন বা শক্তিশালী রোজা বা সুন্নাত রোজা। শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখা হলে তা কোন ফরজ নয় কিন্তু সুন্নাত রোজা হিসেবে গণ্য হয়। এই রোজাগুলি একত্রে রাখা বা ভিন্ন ভিন্ন রাখা যেতে পারে। ইসলামিক শরীয়তে রোজা রাখার মাধ্যমে মুসলমানরা তাদের আত্ম পরিষ্কার করে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আশীর্বাদ এবং কৃপা পান। এছাড়াও রোজা রাখা মুসলমানদের আধ্যাত্মিক উন্নয়নে সহায়তা করে এবং তাদের শক্তি এবং সত্বরতা বৃদ্ধি করে।
স্বাক্ষী রোজা বলতে কোন রোজা নেই, শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখা সুন্নত / সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পেতে শাওয়াল মাসের ৬ রোজা
আরবি ১২ মাসের নাম হলো মহরম, সফর, রবিউল আউয়াল, রবিউস সানি, জমাদিউল আউয়াল, জমাদিউস সানি, রজব, শাবান, রমজান, শাওয়াল, জিলক্বদ, জিলহজ্জ।
Caption: Source of information
শাওয়াল মাসের রোজা রাখা সম্পর্কে হাদিস । যে সকল কারণে ৬ রোজা রাখতে হয়
- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আবু আইয়ুব (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল এরপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল।”[সহিহ মুসলিম, সুনানে আবু দাউদ, জামে তিরমিজি, সুনানে নাসায়ী ও সুনানে ইবনে মাজাহ]
- এ হাদিসকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্য বাণী দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি বলেন: “যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পরে ছয়দিন রোজা রাখবে সে যেন গোটা বছর রোজা রাখল:যে ব্যক্তি একটি নেকি করবে সে দশগুণ সওয়াব পাবে।
- অন্য বর্ণনাতে আছে- “আল্লাহ এক নেকিকে দশগুণ করেন। সুতরাং এক মাসের রোজা দশ মাসের রোজার সমান। বাকী ছয়দিন রোজা রাখলে এক বছর হয়ে গেল।”[সুনানে নাসায়ী, সুনানে ইবনে মাজাহ]হাদিসটি সহিহ আত-তারগীব ও তারহীব (১/৪২১) গ্রন্থেও রয়েছে।
- সহিহ ইবনে খুজাইমাতে হাদিসটিএসেছে এ ভাষায়- “রমজান মাসের রোজা হচ্ছে দশ মাসের সমান। আর ছয়দিনের রোজা হচ্ছে- দুই মাসের সমান। এভাবে এক বছরের রোজা হয়ে গেল।”
নারী পুরুষ সকলকেই কি শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখতে হয়?
হ্যাঁ, শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখা মুসলিম লোকের জন্য সুন্নাত রোজা হিসেবে গণ্য হয়। এতে কোন জাতীয় বা লিঙ্গের প্রশ্ন নেই, অর্থাৎ নারী ও পুরুষ উভয়ই শাওয়াল মাসের ৬ রোজা রাখতে পারেন। তবে, কোন কারণে নর্মল শর্ত পূর্ণ করা অসম্ভব হলে, উদাহরণস্বরূপ স্বাস্থ্য সমস্যা বা গর্ভবতী নারী এমন কেসে রোজা রাখা অসম্ভব হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের সুস্থ হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখতে অবসর নেওয়া উচিত।