জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আকতার মাহমুদ বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে ঢাকা শহরে ৭ মাত্রার চেয়ে বড় ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার বিল্ডিং ধসে পড়বে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আজ শুক্রবার ভোর ৫টা ৪৮ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ছয় দশমিক এক। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে।
তাদের দেওয়া তথ্য মতে, আজকের ৬ দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্তসংলগ্ন স্থান। মিয়ানমারের চীন রাজ্যের হাখা শহরের ১৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এর উৎপত্তি।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী এই ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, ভুটান ও চীনে। ভূমিকম্পটি সৃষ্টি হয় ভূপৃষ্ঠের ৪২ কিলোমিটার গভীরে।
ঢাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্পের দুটি ঝাঁকুনি অনুভূত হয়েছে। এতে বহুতল ভবনগুলো বেশ জোরালোভাবে দুলেছে। জানা গেছে, ভারতের কলকাতায়ও এই ভূমিকম্প বেশ জোরালোভাবেই অনুভূত হয়েছে। সূত্র: কালেরকন্ঠ
কেন ভূমিকম্প হয়? ভূমিকম্প হওয়ার প্রধান কারণ হল পৃথিবীর ভূত্বকের পাত (tectonic plates)গুলোর ধীরে ধীরে চলমান অবস্থা। এই পাতগুলো কখনো কখনো একে অপরের সাথে ধাক্কা লাগে, ঘষা লাগে বা একে অপরের নিচে চলে যায়। এই ধাক্কা বা ঘষার ফলে ভূত্বকের ভিতরে প্রচণ্ড শক্তি জমে। এই শক্তি একসময় মুক্ত হয়ে যখন ভূকম্প হিসেবে প্রকাশ পায়।বড় বড় জলাধার তৈরি করা বা পাহাড়ে খনন কাজের ফলেও ভূমিকম্প হতে পারে। জ্বালামুখী অগ্ন্যুৎপাতের সময়ও ভূমিকম্প অনুভূত হতে পারে। বিস্ফোরণ, গভীর খনি খনন ইত্যাদি মানবসৃষ্ট কারণেও ক্ষুদ্র আকারের ভূমিকম্প হতে পারে।
ভূমিকম্পের প্রভাব কি? ভূমিকম্পের প্রভাব খুবই বিস্তৃত হতে পারে। এর ফলে ভবন ধসে পড়া, ভূমি ফাটল, সুনামি, ভূমিধস ইত্যাদি ঘটতে পারে। এছাড়াও, ভূমিকম্পের কারণে মানুষের জীবনহানি, আর্থিক ক্ষতি এবং মানসিক ক্ষতি হতে পারে। বর্তমানে ভূমিকম্পের সঠিক পূর্বাভাস দেওয়া বিজ্ঞানীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। তবে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও গবেষণার মাধ্যমে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা করা সম্ভব।
ভূমিকম্পের সময় করণীয় কি?
- শক্তিশালী আসবাবের নিচে আশ্রয় নেওয়া
- খোলা জায়গায় দৌড়ে যাওয়া
- বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা
- ভারী বস্তু থেকে দূরে থাকা
- ভূমিকম্প থামার পর নিরাপদ স্থানে যাওয়া
ভূমিকম্প প্রতিরোধ- ভূমিকম্প প্রতিরোধের জন্য ভবন নির্মাণের সময় বিশেষ ধরনের নকশা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও, ভূমিকম্প প্রস্তুতির জন্য মানুষকে সচেতন করা এবং মহড়া দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।