জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য আয়কর নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে, যাতে ব্যক্তি করদাতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ও নতুন নিয়মাবলী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রধান পরিবর্তনসমূহ:
- অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক: ২০২৫-২০২৬ করবর্ষ থেকে সকল ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
- করমুক্ত আয়ের সীমা: সাধারণ ব্যক্তি করদাতার জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৩,৫০,০০০ টাকা রাখা হয়েছে। মহিলা, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের করদাতা, তৃতীয় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধী করদাতাদের জন্য এই সীমা যথাক্রমে ৪,০০,০০০ টাকা এবং ৪,৭৫,০০০ টাকা করা হয়েছে। গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সীমা ৫,০০,০০০ টাকা।
- নতুন কর হার: করমুক্ত সীমার পরের ধাপে ১,০০,০০০ টাকার জন্য ৫% এবং পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকার জন্য ১০% হারে কর প্রযোজ্য হবে।
- সারচার্জ: ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত নিট সম্পদে কোনো সারচার্জ দিতে হবে না। তবে, ৪ কোটি টাকার বেশি নিট সম্পদ এবং কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণকারী করদাতাদের জন্য ন্যূনতম ১০% সারচার্জ প্রযোজ্য হবে।
- ন্যূনতম কর: ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ন্যূনতম করের পরিমাণ ৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- অগ্রিম করের হার পরিবর্তন: কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম করের হার ৩% থেকে কমিয়ে ২% করা হয়েছে, অন্যদিকে বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ৫% থেকে বাড়িয়ে ৭.৫% করা হয়েছে।
৩০ নভেম্বর ২০২৫ রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। নির্দেশিকাটি নতুন আয়কর আইন, ২০২৩ এর গুরুত্বপূর্ণ ধারা ও ব্যাখ্যা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছে।
আয়কর নির্দেশিকা ২০২৫-২০২৬ পিডিএফ ডাউনলোড লিংক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য “আয়কর নির্দেশিকা ২০২৫-২০২৬” প্রকাশ করেছে। এই নির্দেশিকায় স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের জন্য আয়কর রিটার্ন পূরণ ও কর পরিপালনের বিস্তারিত নিয়মাবলী তুলে ধরা হয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার এবং কর ব্যবস্থা আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর মাধ্যমে আয়কর আইন, ২০২৩-এ এই পরিবর্তনগুলো আনা হয়েছে ।
মূল পরিবর্তন ও ঘোষণাগুলি:
- অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক: ২০২৫-২০২৬ করবর্ষ থেকে সারাদেশের সকল ব্যক্তি শ্রেণির আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে ।
- রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ: স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার জন্য রিটার্ন দাখিলের নির্দিষ্ট তারিখ হলো নভেম্বর ৩০, ২০২৫ ।
করমুক্ত আয়ের সীমা বৃদ্ধি:
সাধারণ ব্যক্তি করদাতার জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৩,৫০,০০০ টাকা রাখা হয়েছে । তবে বিভিন্ন শ্রেণির করদাতার জন্য এই সীমা ভিন্ন ভিন্ন:
- মহিলা এবং ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতা: ৪,০০,০০০ টাকা
- তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা: ৪,৭৫,০০০ টাকা
- গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতা: ৫,০০,০০০ টাকা
- কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনি অভিভাবকের ক্ষেত্রে প্রতিটি সন্তান/পোষ্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা বেশি হবে ।
নতুন কর হার:
করমুক্ত আয়ের সীমার পরের স্তরগুলোতে আয়ের পরিমাণ অনুযায়ী নিম্নোক্ত হারে কর প্রযোজ্য হবে:
- প্রথম ১,০০,০০০ টাকার উপর ৫%।
- পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকার উপর ১০%।
- পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকার উপর ১৫%।
- পরবর্তী ৫,০০,০০০ টাকার উপর ২০%।
- পরবর্তী ২০,০০,০০০ টাকার উপর ২৫%।
- অবশিষ্ট আয়ের উপর ৩০%।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন:
- ন্যূনতম কর: ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য ন্যূনতম কর ৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
- সারচার্জ: কোনো ব্যক্তির নিট সম্পদ ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে সারচার্জ দিতে হবে না। তবে, যাদের নিট সম্পদ ৪ কোটি টাকার বেশি এবং ৮০০০ বর্গফুটের বেশি জায়গার কোনো বাড়ি এবং একটির বেশি গাড়ি আছে, তাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০% সারচার্জ প্রযোজ্য হবে।
- অগ্রিম করের হার পরিবর্তন: কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম করের হার ৩% থেকে কমিয়ে ২% করা হয়েছে এবং বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য ৫% থেকে বাড়িয়ে ৭.৫% করা হয়েছে।
নির্দেশিকাটিতে নতুন আয়কর আইন, ২০২৩ এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারা, রিটার্ন ফরম (যেমন- আইটি ঘ (২০২৩) এবং আইটি-১১গ (২০২৩)) এবং কর পরিগণনার উদাহরণ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।