সূচীপত্র
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের মতে বাংলাদেশ আবারও স্বাধীন হয়েছে- সেনা প্রধান বাংলাদেশের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন-অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৪
সেনা প্রধান কি বললেন? সেনা প্রধান সরাসরি বক্তব্য দিয়ে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেনা বাহিনী এখন দেশ রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে। তিনি বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের প্রধানদের সাথে আলোচনা পূর্বক অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দিবেন। সকল হত্যার বিচার কার্য ইন্টারিম সরকার করবেন। এছাড়াও দেশ পরিচালনা ও সংস্কার করবে নতুন সরকার এমনটিই জানিয়েছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
কারফিউ কি বহাল থাকবে? না। ছাত্ররা ঘরে ফিরে গেলে এবং রাস্তার পরিবেশ ভাল হয়ে গেলে অবশ্যই কারফিউ থাকবে না। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সেনা নিয়ন্ত্রণে। আজ রাতেই রাষ্ট্রপতির সাথে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হতে পারে। দেশের ভিতর শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সেনা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। ছাত্র হত্যা বিচারের সকল কার্য সঠিক ভাবে সম্পন্ন হবে বলেও সেনা প্রধান বার বার বিষয়টি মিডিয়া কর্মীদের আশ্বস্ত করেন।
মিডিয়ার সাহায্য চাইলেন কেন? সেনা প্রধান সঠিক সংবাদ বা তথ্য প্রচারের জন্য মূলত মিডিয়ার সাহায্য চাইলেন। দেশবাসীর সাহায্য নিয়েই সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দেশ পরিচালনা করবেন বলে বার বার উল্লেখ করেন। তিনি রাতের মধ্যেই রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে এবং এ বিষয়ে সবাই মিলে একটি সিদ্ধান্ত পৌছাবেন। অন্যদিকে এসব কাজ করতে ১-২ দিন সময় চাইলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ করে সরকার প্রধান দেশ ত্যাগ করেছেন / সামরিক হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
গণভবন থেকে প্রধান মন্ত্রীর পালিয়ে যাওয়ার ভিডিওটিও ফাঁস হয়েছে। আন্দোলনকারীগণ মূলত গণ ভবনে ঢুকে পড়েন তার আগ মুহুর্তেই শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করেন।
Caption: Prime Minister Leave
অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ২০২৪ । নতুন সরকার গঠন নিয়ে ৫টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে
- অবিলম্বে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর সম্মতিক্রমে, নাগরিক ও রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষক, বিচারপতি, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের অংশীজনদের নিয়ে একটি জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-শ্রেণির অন্তর্ভুক্তিমূলক অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই সরকারের সদস্য নির্বাচনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। এই সরকারের কাছে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করবে।
- শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর অংশীজনদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে সর্বদলীয় শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি ছায়া সরকার গঠিত হবে। তারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, যেন দেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয় এবং এই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত দাবি ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পথে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ছায়া সরকার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও অব্যাহত থাকতে পারে।
- অন্তর্বতীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো পালন করবে সেগুলো হলো: ক. জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং জনগণের ওপর নৃশংস জোরজুলুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতায় তদন্ত কমিটি এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে। খ. সাম্প্রতিক সময়ে করা মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রানিমূলক মামলা বাতিল করবে এবং এসব মামলায় আটক সবাইকে মুক্তি দিবে।
- সরকার গঠনের ৬ মাসের মধ্যে একটি সংবিধান সভা (কনস্টিটিউশনাল এসেম্বলি) গঠনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। নির্বাচিত সংবিধান সভা এমন এক গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রস্তাব করবে যে সংবিধানে স্বৈরতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক, জনবিদ্বেষী, বৈষম্যমূলক কোনো ধারা থাকবে না। সেই সংবিধানের ভিত্তিতে সরকার অবিলম্বে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে।
- শিক্ষার্থী-নাগরিকদের অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর মধ্যে সংলাপের ভিত্তিতে একটি ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে হবে যেখানে বৈচিত্র্য ও ভিন্নতার মেলবন্ধনে জনগণের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথ নির্দেশ করা হবে।
- প্রস্তাবিত অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন, মূল অংশীজনের তালিকা প্রণয়ন এবং শিক্ষার্থী জনতার ছায়া সরকার গঠনের প্রয়োজনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক যেকোনো দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত।
শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করলে ক্ষমতা কে নিবে?
ইতোমধ্যে সরকারের পতন হয়েছে কিন্তু এখনও মাঠে অস্থিরতা চলছে। এ সময় শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের যাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে রূপরেখা পাঠ করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। শিক্ষক নেটওয়ার্ক অন্তর্বর্তীকালীন বা ছায়া সরকার গঠনের ঘোষনা দিয়েছে যেখানে ছাত্র আন্দোলনকারীদের মতামত বিবেচনায় রাখা হবে এবং দেশের গুনী জ্ঞানীজনদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় নেটওয়ার্কের রূপ রেখা মাথায় নিয়েই ছায়া সরকার গঠন করা হবে।
সরকার গঠনের রূপরেখা ২০২৪ । সরকার কার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে?