ভূমি সংস্কার আইন, ২০২৩ অনুযায়ী, বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি একক নামে ৬০ বিঘার (১ বিঘা = ৩৩ শতাংশ) বেশি কৃষি জমির মালিক হতে পারবেন না। যদি কারো একক নামে ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকে, তবে সরকার অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে এবং এর জন্য সাধারণত কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন:
চা, কফি, রাবার বা অন্য কোনো ফলের বাগানের জন্য ব্যবহৃত ভূমি।
শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজস্ব কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য ভূমি ব্যবহার করলে।
কোনো সমবায় সমিতির সকল সদস্য তাদের জমির মালিকানা সমিতির অনুকূলে হস্তান্তর করলে।
শতভাগ রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্য বা কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য ব্যবহৃত ভূমি।
কোনো কোম্পানি সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে ৫০০-১০০০ বিঘা পর্যন্ত জমি রাখতে পারে (তবে এর জন্য যুক্তি দেখাতে হবে)।
ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ (Land Reforms Ordinance, 1984) সম্পর্কিত। সেই অধ্যাদেশেও একজন ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ জমির মালিকানার সীমা ৬০ বিঘা ছিল।

- সীমা: একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৬০ বিঘা কৃষিজমির মালিক হতে পারবেন। ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে সরকার তা অধিগ্রহণ করতে পারে।
- ব্যতিক্রম: নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে, যেমন রপ্তানিমুখী কৃষিপণ্য বা অন্য কোনো প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প হলে, ৬০ বিঘার বেশি জমি রাখা সম্ভব হতে পারে, তবে তার জন্য বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন হবে।
- আইন: এই নিয়মটি ২০২৩ সালের “ভূমি সংস্কার আইন” এর আওতায় কার্যকর রয়েছে।
- বাস্তবায়ন: সরকার এই আইন বাস্তবায়নের জন্য ৬০ বিঘার বেশি কৃষিজমির মালিকদের চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে।
কোনো ব্যক্তি যদি স্বীয় মালিকানাধীন ভূমির অতিরিক্ত ভূমি অথবা অন্যের মালিকানাধীন ভূমি তার অনুমতি ব্যতিরেকে অন্য কারো বরাবর হস্তান্তর বা সমর্পণ করেন, তবে তা ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ অনুযায়ী গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
⚠️ মূল নির্দেশনাসমূহ:
মিথ্যা পরিচয়: কোনো ব্যক্তি যদি মিথ্যা পরিচয় প্রদান করে বা জ্ঞাতসারে এক ব্যক্তিকে অন্য ব্যক্তিরূপে প্রতিস্থাপিত করে কোনো ভূমি সম্পূর্ণ বা আংশিক হস্তান্তর বা সমর্পণ করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিথ্যা বিবরণ: মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনো দলিল স্বাক্ষর বা সম্পাদন করাও আইনত দণ্ডনীয়।
অসত্য তথ্য: কর্তৃপক্ষের নিকট মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করা যাবে না।
আইনের প্রয়োগ: এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষসমূহকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংবিধিবদ্ধ সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এই পরিপত্র জারির ফলে ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা ও জালিয়াতি রোধ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। ভূমির সঠিক রেকর্ড ও ব্যবহার নিশ্চিত করা, এবং সাধারণ মানুষের সম্পত্তি সুরক্ষিত করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
এক বিঘায় কত শতাংশ জমি?
এক বিঘা জমিতে ৩৩ শতাংশ জমি থাকে। তবে, এই পরিমাপ অঞ্চলভেদে সামান্য ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত এক বিঘা বলতে ৩৩ শতাংশ জমিকেই বোঝায়। ৬০ বিঘায় কত একর জমি তা হিসেব করা যাক: আমরা জানি, ১ বিঘা = ০.৩৩ একর তাহলে, ৬০ বিঘা = ৬০ × ০.৩৩ একর ৬০ বিঘা = ১৯.৮ একর সুতরাং, ৬০ বিঘায় প্রায় ১৯.৮ একর জমি হয়।
