বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফলে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্র ও সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে- এক দফা সরকার পদত্যাগ একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে- বর্তমান সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক কর্তৃক প্রস্তাবিত ছায়া সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করবে–সরকার গঠনের রূপরেখা ২০২৪

শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করলে ক্ষমতা কে নিবে? মাঠে অস্থিরতা চলছে। এ সময় শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের যাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে রূপরেখা পাঠ করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। শিক্ষক নেটওয়ার্ক অন্তর্বর্তীকালীন বা ছায়া সরকার গঠনের ঘোষনা দিয়েছে যেখানে ছাত্র আন্দোলনকারীদের মতামত বিবেচনায় রাখা হবে এবং দেশের গুনী জ্ঞানীজনদের অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

ক্ষমতা কি সেনাবাহিনী নিয়ে নিবে? না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতা সেনা বাহিনী নিতে পারে না। তাছাড়া সেনা কর্মকর্তাদের মাঠ ভিত্তিক আচারণে এমনটা মনে হচ্ছে না। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, সাধারণ জনগন এখন মাঠে আছে। তাদের দাবী আদায়ে তরুন প্রজন্ম প্রাণ দিচ্ছে। বুক পেতে গুলি খেয়ে মারা যাচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে সেনা বাহিনী জনগনের বিপরীতে অবস্থান নেয় না। সাধারণ সেনা বাহিনা জনগণের নিরাপত্তা ও কল্যাণে কাজ করে থাকে তাই এটি পরিস্কার যে সেনা বাহিনী ক্ষমতা নিয়ে নিচ্ছে এমনটি হবে না।

তাহলে কি বিএনপি ক্ষমতায় আসবে? না। এটির সম্ভবনাও নেই। যদি আপনি হাসপাতালগুলো খোজ নেন তবে আপনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাশগুলোই বেশি পাবেন। সরকার যদিও বলছে জামায়াত বিএনপি তান্ডব চালাচ্ছে। তবে কথা হচ্ছে গুলি ও আহত হওয়ার সংখ্যায় ছাত্র সমাজই বেশি। এক্ষেত্রে আরও একটি কথা বিবেচনায় রাখা যেতে পারে যে, সুশীল সমাজ ও নাগরিক সমাজসহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নতুন সরকার গঠনের রূপ রেখা ইতিমধ্যে প্রেসনোট হিসেবে প্রকাশ করেছে যেখানে তারা ছায়া সরকার বা অস্থায়ী সরকার তৈরির ঘোষনা দিয়েছে এবং পরবর্তীতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে বলে প্রস্তাব করেছে।

অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বা ছায়া সরকার গঠনপ প্রক্রিয়া / বর্তমান সরকার ঠিক কাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে

দেশের এমন পরিস্থিতিতে সরকার ক্ষমতা ছাড়লে বা পদত্যাগ করলে কিভাবে নতুন সরকার গঠন করা হবে বা সরকারের সদস্য নির্বাচিত হবে সেই রূপ রেখা প্রকাশ করা হয়েছে।

Caption: Versity Teachers Network

অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ২০২৪ । নতুন সরকার গঠন নিয়ে ৫টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে

  1. অবিলম্বে শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর সম্মতিক্রমে, নাগরিক ও রাজনৈতিক শক্তিসমূহের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষক, বিচারপতি, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের অংশীজনদের নিয়ে একটি জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ-শ্রেণির অন্তর্ভুক্তিমূলক অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করা হবে। এই সরকারের সদস্য নির্বাচনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন। এই সরকারের কাছে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করবে।  
  2. শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর অংশীজনদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে সর্বদলীয় শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ নাগরিকদের নেতৃত্বে একটি ছায়া সরকার গঠিত হবে। তারা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, যেন দেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হয় এবং এই গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত দাবি ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার পথে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের ছায়া সরকার নির্বাচিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়ও অব্যাহত থাকতে পারে।  
  3. অন্তর্বতীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর যে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বগুলো পালন করবে সেগুলো হলো: ক. জুলাই হত্যাকাণ্ড এবং জনগণের ওপর নৃশংস জোরজুলুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য জাতিসংঘের সহযোগিতায় তদন্ত কমিটি এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করবে। খ. সাম্প্রতিক সময়ে করা মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রানিমূলক মামলা বাতিল করবে এবং এসব মামলায় আটক সবাইকে মুক্তি দিবে।
  4. সরকার গঠনের ৬ মাসের মধ্যে একটি সংবিধান সভা (কনস্টিটিউশনাল এসেম্বলি) গঠনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। নির্বাচিত সংবিধান সভা এমন এক গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রস্তাব করবে যে সংবিধানে স্বৈরতান্ত্রিক, সাম্প্রদায়িক, জনবিদ্বেষী, বৈষম্যমূলক কোনো ধারা থাকবে না। সেই সংবিধানের ভিত্তিতে সরকার অবিলম্বে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে।  
  5. শিক্ষার্থী-নাগরিকদের অভ্যুত্থানের মূল শক্তিগুলোর মধ্যে সংলাপের ভিত্তিতে একটি ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে হবে যেখানে বৈচিত্র্য ও ভিন্নতার মেলবন্ধনে জনগণের বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার পথ নির্দেশ করা হবে।  
  6. প্রস্তাবিত অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন, মূল অংশীজনের তালিকা প্রণয়ন এবং শিক্ষার্থী জনতার ছায়া সরকার গঠনের প্রয়োজনে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক যেকোনো দায়িত্ব পালন করতে প্রস্তুত।

শেখ হাসিনার বিকল্প কি আছে?

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আওয়ামীলীগ মনে করে শেখ হাসিনা ছাড়া সরকার হওয়ার যোগ্য কেউ দেশে নেই। তবে শিক্ষক সমাজ ও সাধারণ জনগন মনে করেন বংশানুক্রম নেতৃত্ব ছাড়াও দেশে নেতার কোন ঘাটতি নেই। দেশে প্রতিভাবান নেতার কোন কমতি নেই। দেশের হাল ধরার জন্য বুদ্ধিজীবী ও যোগ্য অনেক লোক রয়েছে। তাছাড়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হয়ে যোগ্য ব্যক্তিকেই সরকার প্রধান করা যাবে। তবে পদত্যাগ বা সরকার পতনের পর ছায়া সরকার বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিভাবে গঠন করা হবে শিক্ষক নেটওয়ার্ক সেটি ইতিমধ্যেই জারি করেছে। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে।

কোটা আন্দোলন আপডেট ২০২৪ । সরকার চাপে পড়ে ৫টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন জানুন

কোটা আন্দোলন আপডেট ২০২৪ । সরকার চাপে পড়ে ৫টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন জানুন

অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচি ২০২৪ । পাল্টা কর্মসূচিতে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীও

     
     

সূত্র: শিক্ষক নেটওয়াক

প্রত্যয় সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল ২০২৪ । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাকি সব স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের জন্যও প্রযোজ্য?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *