২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিন্যাস নিয়ে একটি বিস্তারিত সংবাদ নিচে তৈরি করা হলো- ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার নতুন নম্বর বিন্যাস: সৃজনশীল ও বহুনির্বাচনি প্রশ্নের কাঠামোতে বড় পরিবর্তন-এসএসসি নম্বর বিভাজন
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য একটি নতুন নম্বর বিভাজন কার্যকর হতে যাচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। এই নতুন কাঠামোতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং অন্যান্য প্রধান বিষয়গুলোর নম্বর বিন্যাস ও প্রশ্নের ধরনে পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বাংলা ১ম পত্র ও ২য় পত্র (১০০ নম্বর): বাংলা ১ম পত্রে সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য ৫০, বর্ণনামূলক প্রশ্নের জন্য ২০ এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্নের জন্য ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। সৃজনশীল অংশে গদ্য ও কবিতা থেকে মোট ৮টি প্রশ্ন থাকবে, যার মধ্যে ৫টির উত্তর দিতে হবে। সহপাঠ (উপন্যাস) অংশ থেকে ৪টি বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকবে, যার মধ্যে ২টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বাংলা ২য় পত্রে রচনামূলক অংশের জন্য ৭০ নম্বর এবং বহুনির্বাচনি অংশের জন্য ৩০ নম্বর থাকবে। রচনামূলক অংশে অনুচ্ছেদ রচনা, চিঠিপত্র/সংবাদ প্রতিবেদন, সারাংশ/সারমর্ম, ভাবসম্প্রসারণ, অনুবাদ এবং প্রবন্ধ রচনার জন্য আলাদা নম্বর বরাদ্দ রয়েছে।
গণিত (১০০ নম্বর): গণিত পরীক্ষায় সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য ৫০, সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্নের জন্য ২০ এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্নের জন্য ৩০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। সৃজনশীল প্রশ্নগুলো বীজগণিত, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি, পরিমিতি এবং পরিসংখ্যান—এই চারটি বিভাগ থেকে থাকবে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেক বিভাগ থেকে কমপক্ষে একটি করে মোট ৫টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ১৫টি সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্ন থেকে ১০টির উত্তর দিতে হবে।
এসএসসি নম্বর বিভাজন । ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার নম্বর বিন্যাস কেমন হবে? তা জেনে রাখা জরুরি
ইংরেজি ১ম পত্র ও ২য় পত্র (১০০ নম্বর): ইংরেজি ১ম পত্রে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭০ নম্বর থাকবে ‘রিডিং’ অংশে এবং ৩০ নম্বর থাকবে ‘রাইটিং’ অংশে। ‘রিডিং’ অংশে MCQ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, গ্যাপ ফিলিং, ইনফরমেশন ট্রান্সফার, সামারি রাইটিং এবং রি-অ্যারেঞ্জিং-এর মতো বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন থাকবে। ‘রাইটিং’ অংশে কমপ্লিটিং স্টোরি এবং ডায়ালগ রাইটিংয়ের মতো বিষয় থাকবে। ইংরেজি ২য় পত্রে ‘গ্রামার’ অংশের জন্য ৬০ এবং ‘রাইটিং’ অংশের জন্য ৪০ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। ‘গ্রামার’ অংশে গ্যাপ ফিলিং, রাইট ফর্ম অফ ভার্বস, চেঞ্জিং সেন্টেন্স, সাফিক্স-প্রিফিক্স, প্রিপজিশন, কানেক্টর এবং পাংচুয়েশন থাকবে। ‘রাইটিং’ অংশে প্যারাগ্রাফ, ই-মেইল/লেটার/অ্যাপ্লিকেশন এবং শর্ট কম্পোজিশন লিখতে হবে।
বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয় (১০০ নম্বর): বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, অর্থনীতি, পৌরনীতি ও নাগরিকতা, ভূগোল ও পরিবেশ, ব্যবসায় উদ্যোগ, ইসলাম শিক্ষা সহ অন্যান্য বিষয়গুলোতে সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য ৫০, সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্নের জন্য ২০ এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্নের জন্য ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকবে। প্রত্যেক বিষয় থেকে ৮টি সৃজনশীল প্রশ্ন থাকবে, যার মধ্যে ৫টির উত্তর দিতে হবে। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, কৃষিশিক্ষা এবং গার্হস্থ্যবিজ্ঞান এর ক্ষেত্রে তত্ত্বীয় অংশে ৭৫ এবং ব্যবহারিক অংশে ২৫ নম্বর থাকবে। তত্ত্বীয় অংশে সৃজনশীল, সংক্ষিপ্ত-উত্তর এবং বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকবে। ব্যবহারিক অংশে পরীক্ষণ, মৌখিক অভীক্ষা এবং ব্যাখ্যাসহ ফলাফল উপস্থাপনের ওপর নম্বর দেওয়া হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (৫০ নম্বর): তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে তত্ত্বীয় অংশের জন্য ২৫ এবং ব্যবহারিক অংশের জন্য ২৫ নম্বর বরাদ্দ করা হয়েছে। তত্ত্বীয় অংশে ১৫টি বহুনির্বাচনি প্রশ্ন এবং ৫টি সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ব্যবহারিক অংশে যন্ত্র/উপকরণ ব্যবহার, প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং মৌখিক অভীক্ষার ওপর নম্বর নির্ধারিত।
এই নতুন নম্বর বিন্যাস শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন হিসেবে কাজ করবে এবং শিক্ষকরাও এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে মূল্যায়নের সুযোগ পাবেন।