বিদ্যুতের দাম পুন: নির্ধারণের ক্ষেত্রে কমিশন প্রস্তাব প্রেরণ করিতে গণশুনানির মাধ্যমে দাম পুন:নির্ধারিত হত – এ গেজেট কার্যকরের ফলে এনার্জি ট্যারিফ নির্ধারণ ক্ষমতা সরকারের হাতে গেল  –বিদ্যুৎ ট্যারিফ নির্ধারণ ক্ষমতা পরিবর্তন ২০২২

নতুন গেজেট কবে থেকে কার্যকর? এই অধ্যাদেশ বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২ নামে অভিহিত হইবে। (২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

২০০৩ সনের ১৩ নং আইনের ধারা ৩৪ এর সংশোধন।—বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ১৩ নং আইন), অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, এর ধারা ৩৪ এর (ক) উপ-ধারা (৩) এর প্রান্তস্থিত “।” চিহ্নের পরিবর্তে “:” চিহ্ন প্রতিস্থাপিত হইবে এবং অতঃপর নিম্নরূপ শর্তাংশ সংযোজিত হইবে, যথা: — “তবে শর্ত থাকে যে, কমিশন কর্তৃক প্রবিধান প্রণয়ন না করা পর্যন্ত, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে।”; (খ) উপ-ধারা (৬) এ উল্লিখিত “৯০ (নব্বই) দিনের” সংখ্যা, শব্দগুলি ও বন্ধনীর পরিবর্তে “৬০ (ষাট) দিনের” সংখ্যা, শব্দগুলি ও বন্ধনী প্রতিস্থাপিত হইবে।

২০০৩ সনের ১৩ নং আইনে নূতন ধারা ৩৪ক এর সন্নিবেশ। উক্ত আইনের ধারা ৩৪ এর পর নিম্নরূপ নূতন ধারা ৩৪ক সন্নিবেশিত হইবে, যথা: “৩৪ক। ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয়ে সরকারের ক্ষমতা।— এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালী কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে উহাদের উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুদকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে।”।

বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করিবে সরকার / কমিশন নয়, এনার্জি রেট সরকার পুন:নির্ধারন বা নির্ধারণের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে

বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ভর্তুকি সমন্বয়ের লক্ষ্যে, জনস্বার্থে, কৃষি, শিল্প, সার, ব্যবসা-বাণিজ্য ও গৃহস্থালী কাজের চাহিদা অনুযায়ী এনার্জির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে উহাদের উৎপাদন বৃদ্ধি, সঞ্চালন, পরিবহন ও বিপণনের নিমিত্ত দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ উৎপাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুদকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনঃনির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন আইন, ২০০৩ ( ২০০৩ সনের ১৩ নং আইন )

২০০৩ সনের ১৩ নং আইনের ধারা ৩৪ এর সংশোধন ২০২২ । পূর্বে অধ্যায়-৭ ট্যারিফ নির্ধারণ আইনে কি ছিল?

  • ৩৪৷ (১) আপাততঃ বলবত্ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকারের সহিত আলোচনাক্রমে কমিশন কর্তৃক প্রণীত নীতিমালা ও পদ্ধতি (methodology) অনুসরণে পাইকারী বাল্ক ও খুচরাভাবে বিদ্যুত্ উত্পাদন, এনার্জি সঞ্চালন, মজুতকরণ, বিপণন, সরবরাহ, বিতরণ এবং ভোক্তা (end-user) পর্যায়ে ট্যারিফ নির্ধারিত হইবে:
  • তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন কার্যকর হইবার পূর্বে সরকার বা উহার এজেন্সি এবং বেসরকারী কোম্পানীর মধ্যকার এনার্জি সংক্রান্ত সম্পাদিত চুক্তিতে নির্ধারিত ট্যারিফ হার এর ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না৷
  • (২) নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে নিম্্নবর্ণিত 1[বিষয়গুলি] কমিশন বিবেচনা করিবে, যথা:-
  • (ক) বিদ্যুত্ আইন, রাষ্ট্রপতির আদেশ, পল্লী বিদ্যুতায়ন আইন এবং ডেসা আইন;
  • (খ) বিদ্যুত্ উত্পাদন এবং এনার্জি সঞ্চালন, বিপণন, বিতরণ, সরবরাহ ও মজুতকরণের ব্যয়ের সহিত ট্যারিফ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা;
  • (গ) দক্ষতা, ন্যুনতম ব্যয়, উত্তম সেবা প্রদান, উত্তম বিনিয়োগ;
  • (ঘ) ভোক্তার স্বার্থ;
  • (ঙ) বিদ্যুত্ উত্পাদন এবং এনার্জি সঞ্চালন, বিতরণ ও সরবরাহ বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পরিচালনা;
  • (চ) জাতীয় 2[এনার্জি] পাওয়ার সিস্টেম উন্নয়ন পরিকল্পনা; এবং
  • (ছ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে কমিশন কর্তৃক বিবেচিত অন্যান্য বিষয়৷
  • (৩) কমিশন ট্যারিফ নির্ধারণের লক্ষ্যে প্রবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে পদ্ধতি (methodology) নির্ধারণ করিবে৷
  • (৪) কমিশন লাইসেন্সী এবং অন্যান্য স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে শুনানী দেওয়ার পর ট্যারিফ নির্ধারণ করিবে৷
  • 3[(৫) কমিশন, একক বা পৃথক পৃথক আদেশ দ্বারা, তৎকর্তৃক নির্ধারিত ট্যারিফ কোনো অর্থ বৎসরে প্রয়োজনে এক বা একাধিকবার পরিবর্তন করিতে পারিবে।]
  • (৬) লাইসেন্সী ট্যারিফ পরিবর্তনের প্রস্তাব বিস্তারিত বিবরণসহ, কমিশনের নিকট উপস্থাপন করিতে পারিবে এবং কমিশন, আগ্রহী পক্ষগণকে শুনানী দেওয়ার পর, ট্যারিফ পরিবর্তনের প্রস্তাবসহ সকল তথ্যাদি প্রাপ্তির ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উহার সিদ্ধান্ত সম্বলিত বিজ্ঞপ্তি জারী করিবে 4[উহার প্রয়োজনীয় প্রচারের জন্য লাইসেন্সীকে নির্দেশ প্রদান করিবে]৷
  • (৭) [বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরী কমিশন (সংশোধন) আইন, ২০০৫ (২০০৫ সনের ৩ নং আইন) এর ৮ ধারাবলে বিলুপ্ত৷]

পূর্বে কিভাবে দাম নির্ধারণ হত?

বিদ্যুতের একক ক্রেতা হিসেবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) দাম বৃদ্ধির এ প্রস্তাব কমিশনে জমা দেয়। গণশুনানিতে বিদ্যুতের কোনো বিতরণ কোম্পানি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়নি। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। গ্যাসের বর্তমান মূল্য ধরে পিডিবি তার প্রস্তাবে প্রতি ইউনিটের দাম ৬৯ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫৮ টাকা করার প্রস্তাব করে। এভাবে প্রস্তাবের পর সেটি বিবেচনায় নিয়ে সরকার বিদ্যুতের দাম নির্ধারণে সম্মতি বা কাটছাট করত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *