দলিল রেজিষ্ট্রি করা হয় “রেজিষ্ট্রেশন আইন” “ষ্ট্যাম্প আইন” “আয়কর আইন” “অর্থ আইন” এবং রাজস্ব সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধি ও পরিপত্রের আলােকে। এ সকল আইনের বিধান। মতে দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য স্ট্যাম্প শুল্ক, রেজিষ্ট্রি ফিস, অতিরিক্ত কর, উৎস কর, জেলা/পৌরকর ইত্যাদি ফিস দিতে হয়। সকল দলিলের ফিসের হার সমান নয়, দলিলের প্রকৃতি অনুসারে তার ফিসের হার নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাই একটি দলিল রেজিষ্ট্রির ফিসের নির্দিষ্ট অংক বের করা কঠিন। তবুও সাধারণ ধারণা লাভের জন্য দলিল রেজিষ্ট্রি ফিসের একটি।
মােটামুটি চিত্র নিম্নে দেয়া হল
(ক) কবলা দলিল রেজিষ্ট্রির জন্য ষ্ট্যাম্প শুল্ক মােট ক্রয় মূল্যের ৫%
(খ) রেজিষ্ট্রি ফিস ১-২৫০০/- টাকা পর্যন্ত বিক্রয় মূল্যের জন্য ৫০/- টাকা।
(গ) রেজিষ্ট্রি ফিস ২৫০১-৪০০০/- টাকা পর্যন্ত বিক্রয় মূল্যের জন্য ২%
(ঘ) রেজিষ্ট্রি ফিস ৪০০১/- হতে তদুর্ধ বিক্রয় মূল্যের জন্য ২.২/১%
(ঙ) হলফনামা ফিস ৫০/- টাকা
(চ) পৌর কর- সিটি কর্পো/ পৌর/ টাউন/ ক্যান্ট বাের্ড এলাকার জন্য ১%
(ছ) উৎস কর- সিটি কর্পো/ পৌর/ টাউন/ ক্যান্ট বাের্ড এলাকার জন্য ৫%
(জ) সিটি কর্পো/ পৌর/ টাউন/ ক্যান্ট : বাের্ড এলাকা বহির্ভূত জমি বিক্রির ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ কর (১% + ১%) = ২% (ঝ) সিটি কর্পো/ পৌর/ টাউন/ ক্যান্ট বাের্ড এলাকার বাইরের ১ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের “অকৃষি জমি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিক্রেতাকে মােট বিক্রয় মূল্যের ৫% উৎস করে দিতে হবে।
(চ) মওকুফ : সিটি কর্পোরেশন, পৌর এলাকা, টাউন কমিটি বা ক্যান্টনমেন্ট বাের্ড এলাকার বাইরের ১ লক্ষ টাকার নীচের অকৃষি জমি ও অন্যান্য (কৃষি/ ভিটি/ নামা ইত্যাদি) জমি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে “পৌরকর” ও “উৎস কর দিতে হয় না।
(ছ) কোন্ কর কে দিবে : ভ্যাট ও উৎস কর সর্বদাই জমি বিক্রেতার দেয়। আয়কর আইনের বিধান মতে এ দুই ধরনের কর হচ্ছে বিক্রেতার আয়ের উপর ধার্য কর। এ কর বিক্রেতার নামেই সরকারী কোষাগারে জমা দিতে হয়; তাই ভ্যাট ও উৎস কর বিক্রেতাকেই পরিশােধ করতে হবে। জমি বিক্রির সময় যদি এ দুই প্রকার কর নিয়ে কোন আলােচনা না হয়ে থাকে তবে তা অবশ্যই বিক্রেতা কর্তৃক পরিশােধ করতে হবে। উৎস কর ব্যতীত অন্যান্য কর জমি ক্রেতাকে পরিশােধ করতে হবে।
কমিশনের মাধ্যমে দলিল রেজিষ্ট্রি : দলিল দাতাগণের মধ্যে কেহ রেজিষ্ট্র অফিসে যেতে অক্ষম অপারগ হলে তিনি রেজিষ্ট্রেশন আইনের ৩৮ ধারা মতে “দলিল সম্পাদন স্বীকারােক্তি” গ্রহণের জন্য কমিশনের প্রার্থনা করে “সাব-রেজিষ্ট্রার” এর নিকট আবেদন করতে পারবেন। এরূপ আবেদনের ভিত্তিতে সাব-রেজিষ্ট্রার বা তার প্রতিনিধি দলিল দাতার বাসস্থানে গিয়ে সম্পাদন স্বীকারােক্তি গ্রহণের মাধ্যমে দলিল রেজিষ্ট্রি করাকে বলে কমিশনের রেজিষ্ট্রি” এ জন্য আলাদা কমিশন ফিস দিতে হয়।
ভিজিটে দলিল রেজিষ্ট্রির পদ্ধতি : দলিল দাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের কেহই যদি রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিল দাখিল করতে না পারেন সে ক্ষেত্রে এ আইনের ৩১ ধারা মতে দলিল দাতার বাড়িতে গিয়ে দলিল রেজিষ্ট্রি করে দেওয়ার জন্য রেজিষ্ট্রি অফিসে আবেদন করা যাবে। কমিশন বা ভিজিটের জন্য আবেদন করা হলে “রেজিষ্ট্রারিং অফিসার” আবেদনকারীকে উক্তরূপ রেজিষ্ট্রির তারিখ ও সময় নির্ধারিত করে জানিয়ে দেবেন এবং নির্ধারিত তারিখে দাতার সম্পাদন স্বীকারােক্তি” দলিলে লিখে নিবেন এবং দলিলটি রেজিষ্ট্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। রেজিষ্ট্রারিং অফিসার নিজে যেতে না পারলে তার অফিসের যে কোন অফিসার/বেতনভােগী কর্মচারীকে দিয়ে তার কমিশন জারী করতে পারেন। কমিশন বা ভিজিট এর জন্য আবেদন করলে কমিশন ফিস বা ভিজিট ফিস ও সঙ্গে জমা দিতে হয়। রেজিষ্ট্রেশন আইন ১৯০৮ এর ৭৯ ধারার বিধান বলে সরকার সময়ে সময়ে রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত ফিসের হার পরিবর্তন/সংশােধন/বৃদ্ধি করতে পারেন। এরূপ করা হলে তা জনসাধারণের অবগতির জন্য সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন। তাছাড়া পরিবর্তিত ফিসের তালিকা উক্ত ধারার বিধান বলে প্রত্যেক “সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস” ও “জেলা রেজিষ্ট্রি অফিস” এর প্রকাশ্য কোন স্থানে লটকিয়ে রাখা হয়।
অনেক ভালো তথ্য জানতে পারলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ, tnx a looot bro