ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে আমরা অনেকেই বাড়ি নির্মাণ করে থাকি। ঋণ গ্রহন করার পূর্বে আমাদের অনেক জিজ্ঞাসা থাকে। চলুন ব্যাংক থেকে বাড়ি নির্মাণ ঋণ গ্রহণ করার পূর্বে সাধারণ প্রশ্ন ও তার উত্তর গুলো জেনে নিই। এ সাইটটি ভিজিট করতে থাকুন ব্যাংক ঋণ সম্পর্কে বিস্তারিত পোস্ট করা হবে।
প্রশ্ন ১: আমার একখন্ড জমি আছে। আমি কি ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা পেতে পারি।
উত্তর: বেশিরভাগ ব্যাংক একক ব্যক্তির নামে বাড়ী এবং গ্রুপ ভিত্তিক বাড়ী নির্মাণের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে।
প্রশ্ন ২: একক বা গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ বিষয়টা কি?
উত্তর: আপনার একক নামে জমি আছে। আপনি সেই জমির উপর বাড়ী বানাতে চাইলে একক ব্যক্তির নামে ঋণ হবে। আবার আপনারা কয় ভাই/বোন/ আত্নীয়/ কলিগ বা কয়েক বন্ধু মিলে এক খন্ড জমি ক্রয় করেছেন বা বাবার সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে যে কয়জন ভাইবোন পেয়েছেন সেক্ষেত্রে গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ হবে।
প্রশ্ন ৩: দেশের যে কোন এলাকার (শহর/ গ্রাম) এর জন্য কি ঋণ দেয়া হয়?
উত্তর: হ্যাঁ দেয়া হয়।
প্রশ্ন ৪: ঋণ আবেদনকারীর যোগ্যতা কি?
উত্তর: ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়স্ক, সুস্থ ও চুক্তি করার যোগ্যতা সম্পন্ন এবং ঋণ পরিশোধে সক্ষম বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক বাড়ী নির্মাণ ঋনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সহজ ভাবে বলতে গেলে কিস্তির ২ গুন মাসিক আয় থাকতে হবে। নির্মিতব্য বাড়ি থেকে আয়ও বিবেচনায় নেয়া যাবে।
প্রশ্ন ৫: Online – এ কি ঋণের আবেদন করা যায়?
উত্তর: কিছু ব্যাংকে ঋণের সাময়িক আবেদন Online এর মাধ্যমে করা যাবে।
প্রশ্ন ৬: বাড়ী নির্মাণ ঋনের সুদের হার কত?
উত্তর: ৭.৫০% থেকে ৯.০০% পর্যন্ত।
প্রশ্ন ৭: বাড়ী নির্মাণের ক্ষেত্রে নিজস্ব কোন বিনিয়োগ লাগবে কি-না?
উত্তর: জ্বি, আপনার ৩০% বিনিয়োগ লাগবে।
প্রশ্ন ৮: সে ক্ষেত্রে ঋণের পরিমান কিভাবে নির্ধারিত হবে?
উত্তর: ঋণের কিস্তি পরিশোধের সক্ষমতা অনুযায়ী ৭০% বা সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন।
প্রশ্ন ৯: ইউনিয়ন পরিষদে (উপ-শহর, পৌরসভার বাহিরে গ্রোথ সেন্টার) ঋণ নিতে আগ্রহী হলে বাড়ীর নকশা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক অনুমোদিত হলে ঋণ নেয়া যাবে কি-না?
উত্তর:উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান/ইউএনও অথবা উপজেলা প্রকৌশলী এবং উপজেলা চেয়ারম্যান/ইউএনও কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে।
প্রশ্ন ১০: ঋণ আবেদন প্রসেস করতে কোন ফি দিতে হয় কি-না?
উত্তর: হ্যাঁ, বর্তমানে প্রসেসিং ফি ০.৫০% বা সর্বোচ্চ ১৫,০০০ টাকা (৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ হলে), ০.৩০% বা সর্বোচ্চ ২০,০০০ টাকা ( ৫০ লক্ষ টাকার উপর হতে ২ কোটি টাকা ঋণ পর্যন্ত)। এই টাকা ঋণ অনুমোদনের পর আপনাকে দিতে হবে।
প্রশ্ন ১১: এছাড়া আর কোন চার্জ/ হিডেন চার্জ আছে কি-না?
উত্তর: কিছু ব্যাংকে রয়েছে, বেশিরভাগ ব্যাংকে নেই। একটু খোঁজখবর নিলেই জানতে পারবেন।
প্রশ্ন ১২: প্রস্তাবিত জমি/ প্লটের মালিকানার ধরনে কোন সীমাবদ্ধতা আছে কি-না?
উত্তর: লীজ প্রাপ্ত সরকারী প্লট, ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ঋণ প্রদান করা হয়।
প্রশ্ন ১৩: বাড়ী নির্মাণ ঋণের মঞ্জুরীকৃত টাকা এককালীন প্রদান করা হবে?
উত্তর: কাজের ধরণ অনুসারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মঞ্জুরীকৃত টাকা একাধিক কিস্তিতে প্রদান করা হবে। কোন কোন ব্যাংক ৩/৪ কিস্তিতে প্রদান করে।
প্রশ্ন ১৪: মঞ্জুরীকৃত টাকা কখন দেওয়া হবে?
উত্তর:ঋণ গ্রহীতার নিজস্ব বিনিয়োগ সম্পন্ন হলে নির্মাণ কাজের অগ্রগতির উপর ভিত্তি করে মঞ্জুরীকৃত টাকা প্রদান করা হবে।
প্রশ্ন ১৫: মাসিক কিস্তি কখন হতে শুরু হবে?
উত্তর:মঞ্জুরীকৃত সমুদয় টাকা গ্রহণ করা হলে শেষ কিস্তি (Disbursement) গ্রহণের পরবর্তী মাসের ১ তারিখ হতে মাসিক কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে।
প্রশ্ন ১৬: জমির মালিক একাধিক হলে কি ঋণ দেয়া হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, এক্ষেত্রে যৌথভাবে বাড়ী নির্মাণের জন্য গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ দেয়া হয়।
প্রশ্ন ১৭: স্বামী-স্ত্রী যৌথ আবেদনকারীর ক্ষেত্রে স্বামীর বয়স ৬৫ এর উর্দ্ধে এবং স্ত্রীর বয়স ৬৫ এর কম হলে ঋণ প্রদান করা যাবে কি?
উত্তর: হ্যাঁ। তবে স্ত্রীর নিজস্ব আয় না থাকলে উপার্জনক্ষম ছেলে/মেয়েকে জামিনদার নিযুক্ত করতে হবে। দুজন কে একত্রে একটি ঋণ দেওয়া হবে।
প্রশ্ন ১৮ঃ কোন জামানত দিতে হবে কিনা?
উত্তরঃ উক্ত সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট বন্ধক থাকবে।
প্রশ্ন ১৯ঃ কত বছর মেয়াদি ঋণ দেয়া হয়?
উত্তরঃ ২০ থেকে ২৫ বছর মেয়াদি ঋণ দেয়া হয়। তবে ঋণের মেয়াদান্তে আবেদনকারীর বয়স ৭০ বছরের বেশি হওয়া যাবেনা।
প্রশ্ন ২০ঃ ঋণ গ্রহণের পর অগ্রিম সমন্বয় কারা যায় কিনা?
উত্তরঃ সমন্বয় করা যায়। তবে বাকি স্থিতির উপর নির্দিষ্ট হারে Early Settlement Fee প্রদান করতে হয়।
আরও দেখুন: ব্যাংক কর্মকর্তাদের গৃহ নির্মাণ ঋণ সিলিং ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকায় উন্নীত ২০২২