সূচীপত্র
হ্যাঁ, সাধারণত বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল ছাড়া নামজারি করা যায় না। বিশেষ করে যদি মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশদের নামে পৃথক খতিয়ান তৈরি করতে হয়, তাহলে বণ্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল প্রয়োজন হয়– তবে বর্তমানে খারিজ বা মিউটেশন করতে বন্টননামা দলিল লাগে না- বাটোয়ারা দলিল বা বন্টন দলিলের প্রয়োজনীয় ২০২৫
বাটোয়ারা বা বন্টন দলিল কেন জরুরি? বাটোয়ারা দলিল বা বন্টন দলিল এর অভাবে জমি সংক্রান্ত সিংহ ভাগ ঝামেলার তৈরি হয়। আমাদের দেশে ভাই-ভাই অথবা ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধের অন্যতম কারন বাটোয়ারা দলিল ছাড়া সম্পত্তি বন্টন বা ভাগ করা।অতীতে লিখিত দলিলের ব্যবহার কম ছিল। মানুষ মুখে মুখে জমি-জমা বা সম্পত্তি বন্টন করে নিত। তখনকার দিনে দলিলের রেজিস্ট্রীও ইচ্ছামত ছিল কারন সে আমলে মানুষের জবানের মূল্যয়ন ছিল। মানুষের মুখের কথাই দলিলের মত ছিল। বর্তমানে, মানুষের জবান এবং বিশ্বাস দুটোই গায়েব হয়ে গেছে। সকালে এক কথা বললে বিকালেই অস্বীকার করে বসে। কাজেই, লিখিত দলিল ছাড়া কেই কারো উপর তেমন ভরসা করে না।
এটি ছাড়া নামজারি করা যায় না? না। আরেক ভাবে বলতে গেলে বর্তমানে বন্টননামা বা বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রী করে নিতে হয় তাছাড়া সুনির্দিষ্ট ভাবে নামজারী বা নিজের হিস্যার বেচা-কেনা করতে বিভিন্ন ঝামেলার স্বীকার হতে হয়। বাটোয়ারা দলিল ওয়ারিশান সম্পত্তি বন্টনের মৌলিক প্রমান। এতে করে ভবিষ্যতে জমির দখল এবংমালকানার বিষয়ে কোন সমস্যা তৈরি হয় না। এমন কি ওয়ারিশদের সম্পত্তি বন্টনে যদি মুসলিম ফারায়েজ নিয়ম মানা না হয় তবুও বন্টন দলিল সম্পাদন করলে দলিলের বর্ণনাই সর্ব অবস্থায় গ্রহণযোগ্য কারন পক্ষগণ পারপ্সরিক সমঝোতার মাধ্যমে সম্পত্তি বন্টন করে থাকে।
সব পক্ষকে হাজির হতে হয়? হ্যাঁ। বাটোয়ারা দলিল হিস্যা বন্টনের অন্যতম প্রমান এবং বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রী করতে সব মালিকদের সাব-রেজিস্ট্রার এর সামনে হাজির হতে হয় কাজেই কোন অংশিদারকে ঠকানো সুযোগ থাকেনা। যে কোন অংশিদার ভবিষ্যতে পুণরায় জমিতে তাহার মালিকানা দাবী করতে পারেনা। ওয়ারিশান সম্পত্তির নামজারি করতে হলে এসি ল্যান্ড অফিসে বাটোয়ারা দলিল দাখিল করা লাগে। ওয়ারিশান জমি বিক্রি করতে গেলেও বন্টন দলিল প্রদর্শন করা প্রয়োজন। ভূমি জরিপকালীন হালনাগাদ মালিকানা লিপিবদ্ধ করতে এবং খতিয়ান নিজ নামে পেতে বাটোয়ারা দলিল উপস্থাপন করা লাগে।
বন্টনা বা বাটোয়ারা দলিল করতে সব পক্ষকে হাজির হতে হয় সর্বসম্মতিক্রমে /যদি পক্ষ সমূহ হাজির না হয় তবে যে কোন পক্ষ পাওনা বুঝে নিতে মামলা দায়ের করতে হয়।
কেউ যদি আসতে না চায়? তবে মামলা করতে হবে। তবে আমরা জানি আদালতে তো টাকা যার রায় তার। নামজারী মূলে ক্রয়ের পর দাতার ওয়ারীশ গণের বিক্রিত মালিকগন আমার বায়া আমার নামে মিচ মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলা নামজারী খাতিয়ান খারিজ করে মূল খতিয়ান ফেরত প্রদান করেন। ৪টি খতিয়ানে ৪ টি দাতা নামজারী করায় আমার ক্রয় সম্পূর্ণ সমাপ্তি পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় খাতিয়ানের অন্য দাগ থেকে সমাপ্তি পাওয়া যাবে কিনা। এখন আমার উপায় কি? পাওয়া যাবে। আদালত প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ আদায়ে ব্যবস্থা নিবে তবে এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতারণা মামলা দায়ের করতে হবে।
Caption: batoyara Mamla process
বাংলাদেশে যতো জমিজমা নিয়ে মামলা হয় এর অনেকাংশ মামলা হয়ে থাকে শুধুমাত্র এই বাটোয়ারা জনিত কারনে তাই প্রত্যকেরি করনীয় ওয়ারিশি সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারার সময় একটি বাটোয়ারা দলিল করে নেওয়া চলুন প্রথমেই দেখি বাটোয়ারা দলিল কি কি কাজে লাগে
- যে ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করা হবে উক্ত ব্যক্তির মৃত্যু সনদ লাগবে
- মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণের প্রমান হিসাবে ওয়ারিশ সনদ লাগবে
- মৃত ব্যক্তির যে সম্পত্তি বন্টন হবে উক্ত সম্পত্তির দলিল লাগবে
- মৃত ব্যক্তির যে সকল ওয়ারিশ সম্পত্তির মালিক হবে স সকল ওয়ারিশের সম্মতি থাকতে হবে।
বন্টননামা দলিল ছাড়া নামজারি করা যাবে না কিন্তু সব ওয়ারিশকে একত্রিত করে বন্টনামা করাও প্রায় অসম্ভব, এখন উপায় কি?
বন্টন নামা করতে সব ওয়ারিশ একসাথে কেন করতে হবে। গ্রহণ যোগ্য দুই একজন বসে বন্টন নামা করা যায়। তারপর সবার কাছে কপি পৌছে দিলে হবে। অংশীদারগণের মধ্যে ওয়ারিশি সম্পত্তি বন্টনের একটি লিখিত প্রমান হিসাবে বাটোয়ারা দলিল কাজে লাগে। বাটোয়ারা দলিল বন্টনের একটি লিখিত প্রমান হিসাবে থাকে এতে ভবিষ্যতে যে কোন অংশিদার পুর্বের বন্টন মানতে বাধ্য থাকে। ওয়ারিশি সম্পত্তির নামজারি করতে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়। ওয়ারিশি জমি বিক্রি করতে গেলে বন্টন দলিলের প্রয়োজন হয়। ভূমি জরিপকালীন সময়ে ওয়ারিশি সম্পত্তিতে রেকর্ড করাতে, ওয়ারিশি জমির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লোন করাতে গেলে বন্টন নামা দলিল লাগে। অংশীদারগণের মধ্যে ভবিষ্যতে মামলা মকদ্দমা হওয়া থেকে বাচা যায় এছাড়া আরো নানা কারনে আপনাদের বন্টন বা বাটোয়ারা দলিলের প্রয়োজন হতে পারে ।
বর্তমানে বন্টন দলিল ছাড়া কি নিজ অংশ নামজারি করা যায়?
ওয়ারিশসূত্রে অর্জিত জমির মালিকদের নামজারি দুইভাবে হতে পারে। কোন মৃত ব্যক্তির সকল ওয়ারিশের নাম একটি খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ওয়ারিশগণ যৌথভাবে নামজারির আবেদন করতে পারেন। যৌথভাবে নামজারি (জমাভাগ ব্যতীত) করার ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র বা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারদের নিকট হতে ওয়ারিশ সনদ সংগ্রহ করে আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে। এ ধরণের আবেদন প্রাপ্তির পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নামজারি মামলা দায়ের করে খতিয়ানে মৃত ব্যক্তির মোট জমির মধ্যে প্রত্যেক ওয়ারিশের প্রাপ্য হিস্যা উল্লেখপূর্বক নামজারি খতিয়ান সৃজন করে দিবেন। এক্ষেত্রে বন্টননামা দলিলের প্রয়োজন হবে না।
বাটোয়ারা দলিল করার প্রক্রিয়াগুলো কি? একটি বন্টন দলিল করার সকল প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো থাকলে প্রথমে আপনারা একজন দক্ষ দলিল লিখক বা একজন দক্ষ আইনজীবীর কাছে যাবেন। সেখানে গিয়ে মৃত ব্যক্তির পূর্বের দলিলগুলো তাকে প্রদান করবেন এবং একটি বন্টন দলিল লিখার জন্য বলবেন। দলিল লিখক/আইনজীবী প্রথমে মৃত ব্যক্তির পূর্বের দলিলগুলো দেখে এবং সমন্বয় করে একটি নতুন বন্টন দলিল লিখবেন। এবার উক্ত দলিলটি নিয়ে ওয়ারিশগণ সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্ট্রি অফিসে যাবেন সেখানে গিয়ে বাটোয়ারা দলিলের জন্য নির্ধারিত ফি জমা দিতে হবে। এবার দলিলের সকল অংশীদারগণ সাবরেজিস্ট্রারের সম্মুখে রজিস্ট্রি বলিউমে স্বাক্ষর করবেন। এর পরে সাবরেজিস্ট্রার উক্ত দলিলটি রেজিস্ট্রি করে নিবেন। আপনারা চাইলে উক্ত বাটোয়ারা দলিলের একটি অবিকল নকল দলিল তখন নিয়ে নিতে পারেন। তো এইভাবেই খুব সহজেই সম্পাদিত হবে একটি আপোষমূলে বাটোয়ারা দলিল। বন্টননামা (Partition) বা বাটোয়ারা দলিলের রেজিস্ট্রি খরচসহ অন্যান্য তথ্য। তবে কোন পক্ষ না যেতে চাইলে বাটোয়ারা মামলার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
উত্তরাধিকার জমি নামজারি নির্দেশনা ২০২৫ । ওয়ারিশ সম্পত্তি খারিজে বন্টননামা দলিল লাগবে না?
বন্টননামা দলিলের নমুনা ফরম | ওয়ার্ড ফাইল | পিডিএফ ফাইল |