খতিয়ান ও অনলাইন ই পর্চা

জমির পর্চা ডাউনলোড প্রক্রিয়া ২০২৫ । কিভাবে অনলাইন থেকে এস এ পর্চা বা খতিয়ার বের করবেন?

সূচীপত্র

২০২৫ সালে জমির SA পর্চা বা খতিয়ান অনলাইনে ডাউনলোড করতে DLRMS ওয়েবসাইট (dlrms.land.gov.bd) অথবা ই-পর্চা ওয়েবসাইট (e-porcha.com) ভিজিট করুন। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে “ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ” বা “সার্ভে খতিয়ান” অপশন নির্বাচন করুন, তারপর বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও মৌজা নির্বাচন করুন। এরপর খতিয়ানের ধরন (যেমন: SA/RS/BS) ও খতিয়ান/দাগ নম্বর দিয়ে অনুসন্ধান করে পর্চাটি ডাউনলোড করতে পারবেন। – জমির পর্চা ডাউনলোড প্রক্রিয়া ২০২৫

জমির পর্চা কী? জমির পর্চা হলো জমির মালিকানা এবং অন্যান্য তথ্য সম্বলিত একটি সরকারি দলিল। এটি সাধারণত জরিপ (Survey) বা রেকর্ড (Record) চলাকালীন সময়ে প্রস্তুত করা হয়। একে খতিয়ান বা রেকর্ড অব রাইটস (Record of Rights) ও বলা হয়। পর্চায় মূলত একটি নির্দিষ্ট দাগ (Plot) বা প্লটের মালিকের নাম, ঠিকানা, জমির পরিমাণ, জমির শ্রেণি (যেমন: কৃষি, ভিটা, বাণিজ্যিক), এবং মৌজা (Jurisdictional Area) সম্পর্কিত তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে।

পর্চা কেন প্রয়োজন? জমির পর্চা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগে। নিচে কিছু প্রধান কারণ উল্লেখ করা হলো: মালিকানা যাচাই: জমি কেনার আগে বিক্রেতা প্রকৃত মালিক কিনা, তা যাচাই করার জন্য পর্চা অত্যন্ত জরুরি। নামজারি (Mutation) ও জমি হস্তান্তর: জমি কেনাবেচা বা হস্তান্তরের সময় পর্চা প্রয়োজন হয়। ব্যাংক ঋণ: কৃষি বা অন্য কোনো প্রয়োজনে জমির বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য পর্চা বা খতিয়ান অপরিহার্য। মামলা-মোকদ্দমা: জমির মালিকানা সংক্রান্ত কোনো বিরোধ বা মামলায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। জমি পরিমাপ: জমির সঠিক পরিমাপ ও সীমানা নির্ধারণের জন্য পর্চার তথ্যের প্রয়োজন হয়।

জমির পর্চা পাওয়ার উপায় কি? জমির পর্চা সাধারণত দুইভাবে পাওয়া যায়: ১. অনলাইন পদ্ধতি: বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে পর্চার আবেদন করা যায়। এর জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন: ওয়েবসাইট: ভূমি মন্ত্রণালয়ের ই-পর্চা ওয়েবসাইটে (eporcha.gov.bd) প্রবেশ করুন। আবেদন: সাইটে প্রবেশ করে প্রথমে আপনার প্রয়োজনীয় জেলা, উপজেলা এবং মৌজা নির্বাচন করুন। তথ্য পূরণ: এরপর খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর অথবা মালিকের নাম ব্যবহার করে পর্চা অনুসন্ধান করুন। ফি প্রদান: পর্চার জন্য নির্ধারিত ফি অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং (যেমন: বিকাশ, নগদ) বা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করুন। প্রিন্ট: ফি প্রদানের পর আপনি আপনার পর্চার ডিজিটাল কপি ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন।

ই পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান । কিভাবে আপনি পর্চা পাবেন এবং কোন ওয়েবসাইট হতে পর্চা বের করতে পারবেন?

সরাসরি আবেদন? হ্যাঁ। ভূমি অফিস আপনার জমি যে মৌজার অন্তর্গত, সেই মৌজার সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে (উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়) যোগাযোগ করুন। আবেদন ফরম: সেখান থেকে একটি পর্চার আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন। পূরণ ও জমা: আবেদন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমন: জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি) সহ জমা দিন। ফি প্রদান: নির্দিষ্ট কাউন্টারে পর্চার ফি জমা দিন। পর্চা সংগ্রহ: আবেদনের কয়েক দিনের মধ্যে নির্ধারিত তারিখে আপনি সরাসরি অফিস থেকে পর্চার কপি সংগ্রহ করতে পারবেন।

https://dlrms.land.gov.bd

অনলাইনে SA পর্চা বা খতিয়ান বের করার ধাপসমূহ 2025 । আপনি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্চার অনলাইন বা তাৎক্ষণিক কপি পেতে পারেন। সার্টিফাইড বা সত্যায়িত কপি নিতে হলে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হতে পারে।

  1. সঠিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন: ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ সেবার জন্য DLRMS ওয়েবসাইট অথবা e-Porcha ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
  2. সঠিক অপশনটি নির্বাচন করুন: ওয়েবসাইটে থাকা “ভূমি রেকর্ড ও ম্যাপ” অথবা “খতিয়ান অনুসন্ধান” অপশনটিতে ক্লিক করুন।
  3. প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনুসন্ধান করুন: আপনার বিভাগ, জেলা, এবং উপজেলা নির্বাচন করুন। এরপর মৌজা বা জেএল (JL) নম্বর নির্বাচন করুন। আপনি SA খতিয়ান দেখতে চাইলে খতিয়ানের ধরন থেকে SA অপশনটি সিলেক্ট করুন। আপনার খতিয়ানের নম্বর অথবা নির্দিষ্ট দাগ নম্বরটি দিয়ে অনুসন্ধান করুন।
  4. পর্চা দেখুন ও ডাউনলোড করুন: অনুসন্ধান করার পর, আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত SA খতিয়ান বা পর্চাটি দেখতে পাবেন। আপনি এই অনলাইন কপিটি ডাউনলোড করতে পারবেন।

জমির পর্চা ই কি সব?

না, শুধু জমির পর্চা থাকাই সব নয়। জমির মালিকানার জন্য পর্চা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হলেও, এটি এককভাবে চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। জমির পরিপূর্ণ মালিকানা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং ধাপ অনুসরণ করা জরুরি। একটি জমির ক্ষেত্রে সাধারণত তিনটি প্রধান দলিল থাকে, যা একে অপরের পরিপূরক। দলিল (Deed): এটি সবচেয়ে মৌলিক এবং প্রধান দলিল। দলিলের মাধ্যমেই এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে জমির মালিকানা আইনগতভাবে হস্তান্তর হয়। এতে বিক্রেতা এবং ক্রেতার বিস্তারিত পরিচয়, জমির সঠিক পরিমাণ, চতুর্সীমা, এবং লেনদেনের শর্তাবলী উল্লেখ থাকে। সাধারণত রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এই দলিলটি সম্পন্ন ও নিবন্ধিত হয়। পর্চা (Khatian): এটি হলো সরকারি রেকর্ড বা খতিয়ান, যা কোনো নির্দিষ্ট মৌজার জমির মালিক, দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, এবং অন্যান্য তথ্য নিয়ে প্রস্তুত করা হয়। এটি জমির মালিকানার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ, কিন্তু এর আইনগত ভিত্তি নির্ভর করে দলিলের উপর। নতুন জমি কেনার পর নামজারি (Mutation) সম্পন্ন হলে একটি নতুন পর্চা তৈরি হয়, যেখানে নতুন মালিকের নাম লিপিবদ্ধ থাকে। নামজারি (Mutation): এটি জমির মালিকানা পরিবর্তনের একটি সরকারি প্রক্রিয়া। যখন কোনো ব্যক্তি জমি কেনেন বা উত্তরাধিকারসূত্রে পান, তখন তার নামে জমির রেকর্ড হালনাগাদ করার জন্য নামজারির আবেদন করতে হয়। এর মাধ্যমে আগের মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম সরকারি খাতায় অন্তর্ভুক্ত হয়। নামজারি সম্পন্ন না হলে শুধু দলিল বা পর্চা দিয়ে জমির মালিকানা পুরোপুরি নিশ্চিত হয় না। কারণ, সরকারি রেকর্ডে আগের মালিকের নামই থেকে যায়।

না, শুধু জমির পর্চা থাকাই সব নয়। জমির মালিকানার জন্য পর্চা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল হলেও, এটি এককভাবে চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয় না। জমির পরিপূর্ণ মালিকানা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দলিল এবং ধাপ অনুসরণ করা জরুরি। কেন শুধু পর্চা যথেষ্ট নয়?
মালিকানার মূল উৎস: জমির মালিকানার মূল ভিত্তি হলো রেজিস্ট্রিকৃত দলিল, যা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে আইনগত বৈধতা দেয়।রেকর্ড হালনাগাদ: শুধু পুরোনো পর্চা থাকলেই হবে না, সর্বশেষ জরিপের পর্চা এবং নামজারির মাধ্যমে হালনাগাদ করা পর্চা থাকা জরুরি।আইনি জটিলতা: যদি আপনি কোনো জমি কেনেন কিন্তু নামজারি না করান, তাহলে সরকারি রেকর্ডে এখনও পুরোনো মালিকের নামই থেকে যাবে। এর ফলে পুরোনো মালিক সেই জমি আবার বিক্রি করার চেষ্টা করলে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।
   
   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *