ভূমি আইন ২০২৪

সাফ কবলা দলিল বাতিল করার উপায় ২০২৪ । আধুনিক পদ্ধতিতে দলিল লেখার নিয়ম কি?

বাংলাদেশের ভূমি আইন মোতাবেক কিছু নির্দিষ্ট কারণে দলিল বাতিল করা যায়-এক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতে মামলা করতে হবে- ভূমি অফিসে গেলেই সাব-রেজিস্টার দলিল বাতিল করতে পারে না – সাফ কবলা দলিল বাতিল ২০২৪

ভূমি মামলা করা ছাড়া কি রেজিস্ট্রি দলিল বাতিল করা যায় না? না। সম্পত্তি হস্তান্তরের বিভিন্ন দলিল যেমন, সাফ কবলা, দানপত্র, হেবার ঘোষণাপত্র, হেবাবিল এওয়াজ ইত্যাদি দলিল কোন যুক্তিসঙ্গত কারণে বাতিলের প্রয়োজন হলে তা রেজিস্ট্রি অফিস কর্তৃক বা অন্যকোনভাবে বাতিল করার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করে বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। অন্যদিকে কিছু দলিল রয়েছে যেগুলো সম্পত্তি হস্তান্তর সংক্রান্ত নয় সেগুলো সংশ্লিষ্ট দলিলের পক্ষগণ সকলের সম্মতিতে রেজিস্ট্রি অফিসে “বাতিলকরণ দলিল” রেজিস্ট্রির মাধ্যমে বাতিল করতে পারেন।

কোন কোন দলিল বাতিল করা যায়? সাফ কবলা দলিল, বায়নাপত্র দলিল, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি (আমমোক্তারনামা) দলিল, উইল দলিল, অছিয়ত দলিল, চুক্তিপত্র দলিল। দলিল বাতিলের মামলার পর যদি রায় প্রাপ্ত হন তবে রায়ের কপি সংশ্লিষ্ট সাব- রেজিস্ট্রারের বরাবর পাঠাতে হবে।আদালতের আদেশ প্রাপ্তির পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, দলিলটি রেজিস্টার বইয়ের যে পৃষ্টায় নকল হয়েছে সেখানে বিলুপ্তির বিষয়ে টীকা লিপিবদ্ধ করবেন।

দান দলিল বাতিল করার নিয়ম কি? বর্তমানে দানপত্র দলিল ফরমেটে প্রণীত হওয়ায় দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রির সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দখল হস্তান্তরিত হয় বিধায় দাতা দানপত্র দলিল বাতিল বা রদ করতে পারেন না এবং এরূপ বাতিল বা রদকরণ দলিল রেজিস্ট্রি করা আইনসম্মত নয়। তবে, উপযুক্ত আইনসঙ্গত কারণ থাকলে আদালতের আশ্রয় নেয়া যেতে পারে।

সম্পত্তি বা জমি সাফ কবলা দলিলের নমুনা । সাফ কবলা দলিল আঞ্চলিক বা গ্রাম ভাষায় সাফ কওলা দলিল নামেও পরিচিত

সাফ কবলা দলিল বিক্রিত জমি ২৬(ছাব্বিশ) শতাংশ বিক্রিত জমির মূল্য ১৫০.০০০/= (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা। পক্ষ পরিচয়। ১ম পক্ষ : জনাব মানিক মিয়া পিতা : মৃত ছানােয়ার সাকিন : নন্দিগ্রাম, উপজেলা : বেলকুচি, জেলা- সিরাজগঞ্জ, জাতীয়তা : বাংলাদেশী, ধর্ম : ইসলাম, পেশা- ব্যবসা- দলিল গ্রহীতা।

যে কোন দলিলের নমুনা দেখুন । Dolil Form 2023 । দলিল লেখার নমুনা

রেজিস্ট্রি দলিল বাতিল করার নিয়ম ২০২৪ । দলিল বাতিল করার ক্ষেত্রে যা মাথায় রাখতে হবে

  1. জাল দলিল রেজিষ্ট্রেশন হয়ে থাকলে তা বাতিলের মামলা করা যাবে দেওয়ানি আদালতে।
  2. দেওয়ানি আদালতে মামলা করার বিধান সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৩৯ ধারায় বর্ণিত রয়েছে।
  3. জাল দলিল বাতিলের জন্য ফৌজদারি মামলাও করা যায়। জালকারীর শাস্তি নিশ্চিত করতে থানায় কিংবা ম্যাজিস্টেট কোর্টে দন্ড বিধির ৪০৬/৪২০/৪৬৩-৮৭৩ ধারায় মামলা করা যায়।
  4. দেওয়ানি আদালতে দলিল বাতিলের স্বপক্ষে রায় প্রাপ্ত হলে তার একটি নকল সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রি অফিসে প্রেরণ করতে হবে। উক্ত নকলের কপি পেয়ে সাব রেজিস্ট্রার সংশ্লিষ্ট বালাম বহিতে দলিল বাতিলের বিষয়টি লিটিবদ্ধ করে রাখবেন।
  5. সম্পত্তিতে যার স্বার্থ আছে তিনিই দলিল বাতিলের মামলা করতে পারবেন।
  6. একাধিক ব্যক্তি পক্ষ হলে তাদের সবাই বা যে কোন জন মামলা করতে পারবেন।
  7. জাল দলিল সম্পর্কে জানার ৩ বছরের মধ্যে ঐ দলিল বাতিলের মামলা করতে হবে।
  8. দলিল আংশিক বাতিলের মামলা করা যায়।
  9. যিনি কোন দলিলকে জাল বা জোর পূর্বক সম্পাদিত বলে দবি করবেন তাকে তার দাবির সত্যতা প্রমাণ করতে হবে।
  10. নাবলকের সম্পত্তি জাল দলিলের মাধ্যমে হাতিয়ে নিলে ঐ নাবালকের অভিবাবক বা ঐ নাবালক সাবালকত্ব অর্জনের পর সে নিজে মামলা করতে পারবেন।
  11. দলিল রদ বা বাতিলের জন্য ‘এডভোলেরম কোর্ট ফি’ প্রদান করে মামলা দায়ের করতে হবে।
  12. দলিল বাতিলের মামলার সাথে অন্য প্রতিকার যেমন-দখল পাবার প্রার্থনাও কারা যাবে তবে এর জন্য অতিরিক্ত কোর্ট ফি দিতে হবে।

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী দলিল বাতিলের কারন কি কি?

কোন লিখিত দলিল বাতিল বা বাতিলযোগ্য হলে তা বাতিল করা যাবে। যদি বাদীর যুক্তিসংগত আশঙ্কা থাকে যে, এরুপ দলিল যদি অনিস্পন্ন থেকে যায় তাহলে বাদীর অপুরনীয় ক্ষতির কারন সৃষ্টি হইতে পারে। উক্ত ক্ষতির কারণ গুরুত্বর হবে। আদালত তাহার ইচ্ছাধীন বা বিবেচনামুলক ক্ষমতা বলে রায় প্রদান করিতে পারে এবং চুক্তি বিলুপ্তি হিসেবে দলিল ত্যাগের আদেশ প্রদান করিতে পারে। দলিলটি জাল বা প্রতারণামুলকভাবে সৃষ্টি হতে হইবে। আংশিক দলিল বাতিলের বেলায় বাতিলকৃত অংশ অনান্য অংশ হতে সম্পুর্ণ আলাদা হতে হবে। উক্ত বিষয় অবগত হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করিতে হইবে। দলিল বাতিলের মামলায় বাদীকে পরিস্কার হাতে আসতে হবে।

একটি আধুনিক দলিলের নমুনা ২০২৩ । দলিলে যে বিষয়গুলো উল্লেখ থাকতে হবেদলিল লেখক লাইসেন্স ২০২৩ । দলিল লেখকগনের পারিশ্রমিকের হার বা তালিকা দেখুনদলিল রেজিষ্ট্রি ফিস সম্পর্কে কিছু ২০২২

ক্রেডিট: তারিক উল্লাহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *