জমির উন্নয়ন, পুকুর ভরাট কিংবা অন্যান্য নির্মাণ কাজে মাটির সঠিক পরিমাণ নির্ণয় করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সাধারণত ঠিকাদার ও ভূমি ব্যবসায়ীরা এই পরিমাণ নির্ধারণের জন্য একটি সরলীকৃত পদ্ধতি ব্যবহার করেন, যা ‘হাজার পদ্ধতি’ নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে মাটির হিসাব সহজেই টাকায় রূপান্তর করা যায়।
সূচীপত্র
১০০০ ঘনফুট = ১ হাজার মাটি
‘হাজার পদ্ধতি’র মূল ভিত্তি হলো— ১০০০ (এক হাজার) ঘনফুট মাটিকে ১ (এক) হাজার মাটি হিসেবে গণ্য করা হয়। এই পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বৃহৎ অঙ্কের মাটির পরিমাণকে ছোট ও সহজে ব্যবহারযোগ্য সংখ্যায় আনা যায়।
হাজার পদ্ধতিতে মাটির হিসাব যেভাবে করবেন
মাটির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য প্রধানত দুটি ধাপ অনুসরণ করা হয়:
ধাপ ১: মাটির মোট ঘনত্বের (Volume) হিসাব
প্রথমে যে স্থানটিতে মাটি ভরাট করা হবে তার মোট ঘনত্ব বা আয়তন নির্ণয় করতে হবে। এর জন্য গণিতের সরল সূত্রটি ব্যবহার করা হয়:
উদাহরণ হিসেবে, প্রথম সমস্যার বিশ্লেষণ:
একটি পুকুর ভরাট করার জন্য পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে, যার দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট, প্রস্থ ৭০ ফুট এবং গভীরতা ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি।
১. গভীরতা পরিবর্তন: ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি = ৬.৫ ফুট।
২. ঘনত্ব নির্ণয়: ১০০ *৬.৫ = ৪৫,৫০০ ঘনফুট
অর্থাৎ, জায়গাটি ভরাট করতে মোট ৪৫,৫০০ ঘনফুট মাটির প্রয়োজন।
ধাপ ২: হাজারে রূপান্তর
মোট ঘনত্বের হিসাব বের হওয়ার পর সেই সংখ্যাটিকে ১০০০ দিয়ে ভাগ করে ‘হাজার’ ইউনিটে মাটির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।
উক্ত উদাহরণের ফলাফল:
মাটির পরিমাণ = ৪৫,৫০০ ঘনফুট ১০০০ = ৪৫ হাজার ৫ শত মাটি।
যে কারণে এই পদ্ধতি এত গুরুত্বপূর্ণ
এই ‘হাজার পদ্ধতি’ ব্যবহারের প্রধান কারণ হলো খরচ নির্ধারণের সরলতা। সাধারণত ঠিকাদারি কাজে মাটির দাম প্রতি ১০০০ ঘনফুট (অর্থাৎ প্রতি হাজারে) হিসেবে নির্ধারিত হয়। ফলে, মোট কত হাজার মাটি প্রয়োজন, তা বের করতে পারলেই মুহূর্তের মধ্যে মাটির মোট মূল্য অনুমান করা সম্ভব হয়।
ভূমির আয়তন পরিমাপ এবং নির্মাণ কাজের বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে এই সাধারণ সূত্রটি প্রকৌশলী থেকে শুরু করে সাধারণ ঠিকাদার— সকলের জন্যই এক অপরিহার্য হাতিয়ার।

মাটির পরিমাপের প্রক্রিয়া কি?

একক রূপান্তর: পরিমাপের সময় সব একককে (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, গভীরতা) অবশ্যই একই এককে (যেমন: ফুট) রাখতে হবে। খরচ নির্ধারণ: মাটির পরিমাপের এই প্রক্রিয়াটি ঠিকাদারি কাজের বাজেট ও বিল তৈরি করার জন্য অপরিহার্য।
