যদি কোন শ্রমিকের চাকুরী ছাটাই, ডিসচার্জ, অপসারণ, বরখাসত্দ, অবসর, পদত্যাগ বা অন্য কোন কারণে অবসান হয় এবং যদি তাহার কোন বাৎসরিক ছুটি পাওনা থাকে, তাহা হইলে মালিক ঐ পাওনা ছুটির পরিবর্তে এই আইনের বিধান অনুযায়ী ছুটিকালীন সময়ে উক্ত শ্রমিকের যে মজুরী প্রাপ্য হইত তাহা প্রদান করিবেন।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে জানা যায়, আইনে শ্রমিকদের জন্যেও বলা রয়েছে অনেক কিছু। ছাঁটাই হলে শ্রমিককে এক মাস আগে জানাতে হবে। ঐ প্রতিষ্ঠানে প্রতি এক বছর চাকুরীর জন্য এক মাসের বেসিক বেতন পাবেন শ্রমিক। যেমন দশ বছর চাকুরী করলে সে দশ মাসের বেসিক বেতন পাবে। ক্ষেত্র বিশেষে ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক ক্ষতিপূরণও পেতে পারেন।
তবে বরখাস্ত হওয়া শ্রমিক কোন ধরনের বেতন ভাতা ছাড়াই চাকুরী হারাবেন। কিন্তু তাকে বরখাস্তের আগে কারণ দর্শানোরও নোটিস করতে হবে, অন্যায়ের অভিযোগ তদন্ত করতে হবে, তদন্তে শুধু মালিকের পছন্দের ব্যক্তি নয় শ্রমিক পক্ষের ব্যক্তিও থাকতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক খাতের কর্মীদের নিয়োগ চুক্তির উপর নির্ভর করে তিনি কি সুবিধা পাবেন। সেই সাথে শ্রমিককে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। এরপর যদি সে দোষী সাব্যস্ত হয় তবেই তাকে বরখাস্ত করা যাবে। চাকুরীর অবসান বা টার্মিনেশান হলে শ্রমিককে অন্তত চার মাস আগে জানাতে হবে। অথবা মালিক কোন নোটিশ ছাড়াই যদি তাকে চলে যেতে বলেন তাহলে তাকে চারমাসের বেতন দিতে হবে।
বাস্তবতা কেমন?
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজের পরামর্শক আবু ইউসুফ মোল্লা বলছেন, “যেমন পোশাক খাতে বরখাস্ত না করে ছাঁটাই করা হয় বেশি। টার্মিনেশান ক্লজটাও তারা ব্যবহার করেন। তবে ছাঁটাই করার প্রবণতাই বেশি। এতে কম বেনিফিট দিতে হয়। আবার শ্রমিক এটিকে আইনত কোন চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। আর এসব তারা আইনজীবীদের পরামর্শেই করে থাকেন।”
তিনি বলছেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপত্রের বালাই নেই সেখানে মৌখিক কথাতেই চাকুরিচ্যুতি হয়। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে সকল প্রতিষ্ঠানই আইনি বিষয়ে পরামর্শক নিয়োগ করে থাকে।
মি. মোল্লা বলছেন, “পোশাক খাতে আজকাল তারা বরখাস্ত করার দরকার পরলে তদন্ত করে। আগের মতো এক পাক্ষিক তদন্তও হয়না। কমপ্লায়ান্সের কারণে তাদের এটা করতে হয়।”
অন্যায় হলে কোথায় যাবেন?
- বাংলাদেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে সাতটি শ্রম আদালত রয়েছে।
- আপনি যদি মনে করেন আপনার সাথে অন্যায় হয়েছে তাহলে সেখানে আপনি মামলা করতে পারেন।
- তবে বাংলাদেশে এই আদালতগুলোতে অভিযোগ মীমাংসা হতে এতটাই সময় লাগে এবং যে পরিমাণে অর্থ ব্যয় করতে হয় তাতে শ্রমিক পর্যায়ের একজন ব্যক্তি সেখানে যাননা।
- অথবা তারা এমন আদালত বিষয়ে কিছু জানেনই না। তবে শ্রমিকদের আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য সরকারি একটি সেল রয়েছে।
- কিন্তু তার কার্যক্রম বাস্তবে খুবই সীমিত।
- আর প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মী পর্যায়ে যারা আছেন তাদের জন্য বিচার পাওয়ার সুযোগ বাংলাদেশে সীমিত।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ : ডাউনলোড