পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি ক্রয়ের সময় বন্টননামা বা বাটোয়ার দলিল দেখে ক্রয় করুন-টাকা দিয়ে ঝামেলা বা মামলা ক্রয় করা থেকে বিরত থাকুন –জমি ক্রয় করার নিয়ম

মাঠ পর্চা দেখার দরকার আছে কি? – জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড অর্থাত্‍ খতিয়ান ও নকশা যাচাই করে নিতে হবে। জমির তফসিল অর্থাত্‍ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ও উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ যাচাই করে নিতে হবে। জমি ক্রয় করার পূর্বে উক্ত জমির সি.এস রেকর্ড, এস.এ রেকর্ড; আর.এস রেকর্ড এবং মাঠ পর্চাগুলি ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। বিক্রেতা যদি জমিটির মালিক ক্রয় সূত্রে হয়ে থাকেন তাহলে তার ক্রয়ের দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।

ক্রয়সূত্রে না পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত জমি ক্রয় করা ভাল? জমির বিক্রেতা উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়ে থাকলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ানে তার নাম আছে কিনা তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সর্বশেষ খতিয়ানে বিক্রেতার নাম না থাকে তাহলে তিনি যার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়েছেন তা মূল মালিকের সংঙ্গে বিক্রেতার নামের যোগসূত্র কিংবা রক্তের সম্পর্ক আছে কিনা বিষয়টি ভালোভাবে দেখতে হবে। জরিপ চলমান এলাকায় বিক্রেতার নিকট রক্ষিত মাঠ পর্চা সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে।

উল্লেখ্য যে, যদি মাঠ পর্চার মন্তব্য কলামে কিছু লিখা থাকে যেমনঃ তাহলে বুঝতে হবে উক্ত খতিয়ানের বিরুদ্ধে তসদিক বা সত্যায়ন বা শুদ্ধতা বা Attestation পর্যায়ে আপত্তি রয়েছে, সেক্ষেত্রে জমি ক্রয়ের আগে জরিপ অফিসে/ক্যাম্পে গিয়ে জমিটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে। তবে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রেতার শরিকদের সঙ্গে জমি বিক্রেতার সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টন নামা বা ফারায়েজ দেখে নিতে হবে।

জমি কেনার আগে কি কি দেখতে হয় / জমি ক্রয়ের পূর্বে ও পরে করণীয় কি জেনে নিন

জমি বিক্রেতার নিকট থেকে সংগৃহীত দলিল, বায়না দলিল, খতিয়ান, মাঠ পর্চা ইত্যাদি কাগজ পত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারী বা স্বত্বলিপি রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।

জমি ক্রয় করার নিয়ম । নিরাপদে জমি কেনার উপায় কি?

আপনার কষ্টে অর্জিত টাকার নিরাপদ বিনিয়োগ নিশ্চিত করুন।

জমি অনলাইন হওয়া এখন কতটা গুরুত্বপূর্ণ? । বর্তমানে ক্রয়তব্য জমিটির তথ্য অনলাইনে যাচাই করা যায় কিনা চেক করে দেখুন 

  1. সর্বশেষ নামজারী মাঠ পর্চা, ডিসিআর, খাজনার দাখিলা বা রশিদ যাচাই করে দেখতে হবে। জমির খাজনা বকেয়া থাকলে এবং বকেয়া খাজনা সহ জমি ক্রয় করলে বকেয়া খাজনা পরিশোধের দায়-দায়িত্ব ক্রেতাকেই নিতে হবে।
  2. ক্রেতা যে জমিটি ক্রয় করতে যাচ্ছে সেই জমিটি সার্টিফিকেট মকদ্দমা ভুক্ত কিনা, কিংবা জমিটি নিলাম হয়েছে কিনা তা তহসীল অফিস/উপজেলা ভূমি অফিস হতে জেনে নিতে হবে।
  3. তবে অবশ্যই ক্রেতাকে মনে রাখতে হবে যে, ১৯১৩ সালের সরকারী পাওনা/দাবী আদায় আইনের ৭ ধারায় বলা আছে সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয় যোগ্য নয়।
  4. বিবেচ্য জমিটি খাস, পরিত্যক্ত/অর্পিত, অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশকৃত কিনা তা তহসিল অফিস বা উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসক (ডি.সি অফিস) এর কার্যালয়ের L.A (এল.এ) শাখা থেকে জেনে নিতে হবে।
  5. ক্রেতা যে জমিটি কিনতে যাচ্ছে সেই জমিটি নিয়ে কোনো আদালতে মামলা রুজু আছে কিনা তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। তবে মামলাভুক্ত কোনো জমি ক্রয় করা উচিত নয়।

বিজ্ঞাপন দেখে জমা ক্রয় করা কতটা যৌক্তিক?

বিক্রেতা তার জমির নকশা দেখিয়ে ক্রেতার নিকট জমি বিক্রয় করতে চাইতে পারে (যেমনঃ বিভিন্ন প্রকল্পের জমি নকশা/ছবির বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হয়) সেক্ষেত্রে ক্রেতাকে উক্ত নকশার সাথে সঠিকভাবে মিল আছে কিনা বিক্রেতার দখল ও মালিকানা আছে কিনা তা সরেজমিনে গিয়ে দতন্ত করে আসতে হবে। যে জমিটি বিক্রি হতে যাচ্ছে সেই জমিটি ঋণের দায়ে ব্যাংকে দায়বদ্ধ কিনা সেই বিষয়টি খোঁজ নিতে হবে। প্রস্তাবিত জমিতে যাতায়াতের রাস্তা আছে কিনা সেই বিষয়টিও সরেজমিনে তদন্ত করে জেনে নিয়ে জমি ক্রয় করতে হবে। ফেসবুক বা ফেস্টুন বিজ্ঞাপন দেখে দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন না, আপনি যা জানেন সেভাবেই ভাল করে জেনে নিন, প্রয়োজনে দক্ষ ব্যক্তিক সহায়তা নিয়ে কাগজপত্র যাচাই পূর্বক প্রতারকের হাত থেকে বাঁচুন।

নামজারি করার নিয়ম ২০২৩ । নামজারি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ৪৩ টি জিজ্ঞাসা ও উত্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *