তিন বছর একাধারে খাজনা না দিলে ভূমি খাস হয়ে যাইবে-এই আইনটি কি নতুন করা হয়েছে? না এটি ১৯৫০ সালে প্রণয়ন করা হয়েছে সেটিই কার্যকর করা হচ্ছে –জমি খাস আইন ১৯৫০

অনলাইনে ভূমি কর পরিশোধ করতে হবে? – হ্যাঁ। এখন আর ম্যানুয়ালী ভূমি কর নেওয়া হবে না। ভূমি কর পরিশোধে সুবিধা এবং উৎসাহিত করতে সরকার গত ১ লা বৈশাখ ১৪৩০ হতে অনলাইনে ভূমি কর বা খাজনা পরিশোধ বাধ্যতামূলক করেছে। তাই কর পরিশোধ না করলে পূর্বের আইনটি সরকারি মনে করিয়ে দিচ্ছে।

যাদের ভূমি উন্নয়ন কর বা জমির খাজনা বকেয়া রয়েছে তাদেরকে হালসন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। যে সকল ভূমি মালিকগণ ও (তিন) বছর বা তার অধিককাল যাবত ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করেননি তাদেরকে অতিসত্ত্বর অনলাইনে হালসন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করার কথা বলা হলো (কোন কারণে অনলাইনে খাজনা পরিশোধ পদ্ধতি বোধগম্য না হলে স্ব স্ব ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে পরামর্শ গ্রহণ করা যাবে)।

অন্যথায়, সরকারী দাবি আদায়ের স্বার্থে ০১-০৩ বছরের অনাদায়ী বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের জন্য সরকারি দাবি আদায় আইন, ১৯১৩ এর বিধান মোতাবেক ভূমির মালিকদের বিরুদ্ধে রেন্ট সার্টেফিকেট মামলা দায়ের করা হবে এবং যে সকল ভূমি মালিকের ০৩ (তিন) বছরের উর্দ্ধে ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া রয়েছে তাদের সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর ৯২ ধারা মোতাবেক ভূমি খাসকরণসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৯২ ধারা মোতাবেক ভূমি খাস করা যায় কি? ধারা – ৯২ (কতিপয় ক্ষেত্রে রায়তের স্বার্থের বিলোপ)- এর (গ) অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, যেক্ষেত্রে বকেয়া খাজনা পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা না রাখিয়া স্বেচ্ছায় বাসস্থান ত্যাগ করেন ও নিজে বা তাহার পরিবারের সদস্যগণ দ্বারা বা কর্মচারী অথবা শ্রমিক দ্বারা বা অংশীদার অথবা বর্গাদারের সাহায্যে এক নাগাড়ে তিন বৎসরকাল পর্যন্ত তাহার জোত চাষাবাদ করা হইতে বিরত থাকেন। এক্ষেত্রে মূলত স্বার্থ বা স্বত্ব বাতিল হইয়া যাইবে। রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ দেখুন

সরকারি দাবি আদায় আইন, ১৯১৩ অনুসারে সরকার কর আদায়ে মামলা দায়ের করতে পারবে / অনাদায়ে ভূমির মালিকদের বিরুদ্ধে রেন্ট সার্টেফিকেট মামলা দায়ের করা হবে

অনলাইনে ভূমি কর পরিশোধ করুন এবং ভূমি নিজের দখলে রাখুন

Caption: Source of information

ভূমি সরকারি হওয়ার কারণ । ঠিক কি কি কারণে জমি খাস বা সরকারি স্বত্বে চলে যায়?

  • উপধারা-(১) জোতে কোন রায়তের স্বত্বের পরিসমাপ্তি ঘটিবে-  (ক) যেক্ষেত্রে তিনি যে আইনের অধীনে হউক সেই আইনের বিধান অনুযায়ী সম্পত্তি পাইবার জন্য উত্তরাধিকারী না রাখিয়া বা সম্পত্তির জন্য কোনো প্রকার উইল সম্পাদন না করিয়া মারা যান ।

     

  • (খ) যেক্ষেত্রে তিনি কোনো কৃষি বৎসরের শেষে নির্ধারিত ফরমে, নির্ধারিত নিয়মে, নির্দিষ্ট সময় মধ্যে নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে রাজস্ব অফিসারের কাছে তাহার জোত সমৰ্পণ করিয়া ইস্তফা দেন;

     

  • (গ) যেক্ষেত্রে বকেয়া খাজনা পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা না রাখিয়া স্বেচ্ছায় বাসস্থান ত্যাগ করেন ও নিজে বা তাহার পরিবারের সদস্যগণ দ্বারা বা কর্মচারী অথবা শ্রমিক দ্বারা বা অংশীদার অথবা বর্গাদারের সাহায্যে এক নাগাড়ে তিন বৎসরকাল পর্যন্ত তাহার জোত চাষাবাদ করা হইতে বিরত থাকেন;

     

  • (ঘ) যেক্ষেত্রে যে আইনের অধীন আইন অনুযায়ী কোনো রায়তের উপর কোনো ভূমির স্বত্ব উত্তরাধিকার সূত্রে ন্যস্ত হয়, যিনি নিজে প্রকৃত চাষী নহেন ও যিনি নিজে অথবা তাহার পরিবারের লোকজন, কর্মচারী বা বর্গাদারগণের সহায়তায় একনাগাড়ে পাঁচ বৎসর কাল যাবত্ চাষাবাদ করিতে ব্যর্থ হন বা ঐরূপ চাষাবাদ না করার কোনো সন্তোষজনক কারণ নাই;

     

  • উপধারা-(২) যেক্ষেত্রে (১) নং উপধারায় কোনো জোত কোনো রায়তের স্বার্থের পরিসমাপ্তি ঘটে সেক্ষেত্রে রাজস্ব অফিসার উক্ত জোতে প্রবেশ করিতে পারিবেন এবং যে তারিখে রাজস্ব অফিসার উক্ত জোতে প্রবেশ করেন সেই তারিখ হইতে জোতটি উক্ত উপধারার ক অনুচ্ছেদের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ দায়মুক্ত অবস্থায় সরকারের উপর ন্যস্ত হইবে । কিন্তু জোতসমূহে যে সমস্ত ব্যক্তিগণের স্বার্থ উক্ত (খ), (গ) ও (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিলুপ্ত হয় তাহারা উক্ত জোতসমূহের উপর সৃষ্ট দায়সমূহের টাকার জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকিবন ।

     

  • উপধারা-(৩) (২) উপধারা অনুযায়ী কোনো জোতে প্রবেশের পূর্বে রাজস্ব অফিসার উক্ত জোতে প্রবেশ করার তাহার ইচ্ছা ও ইহার কারণ জোতে স্বার্থ আছে এমন সকল ব্যক্তির নিকট নোটিশে নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে আপত্তি আহবান করিয়া নির্দিষ্ট নিয়মে নোটিশে প্রদান করিবেন এবং সিদ্ধান্ত রেকর্ড করিবেন ।

     

  • উপধারা-(৪) (১) উপধারার ঘ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জোতে স্বার্থ বিলুপ্তির কোনো রায়তের আপত্তির পর (৩) উপধারায় রাজস্ব অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশে ক্ষুব্ধ কোনো ব্যক্তি ১৪৭ ধারায় আপিল না করিয়া ঐরূপ আদেশের বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবে ।

সরকারি রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা কি ?

সরকারী ও বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের দাবি আদায়ের জন্য সরকারী পাওনা আদায় আইন-১৯১৩ এর বিধান মোতাবেক যে মামলা চালু করা হয় তাকে সার্টিফিকেট মামলা বলা হয়। শুধুমাত্র ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের জন্য যে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করা হয় তাকে রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা বলা হয়। মূলত ভূমি কর পরিশোধন না করা হলে সরকারি বাদী রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা করা হয়। সরকারি পাওনা আদায় আইন,১৯১৩

One thought on “জমি খাস আইন ১৯৫০ । ৯২ ধারা মোতাবেক ভূমি খাস করা যায় কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *