ব্যাংক হিসাব একটি ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত ব্যাংকগ্রাহকের নামে একটি আর্থিক হিসাব, যেটি ব্যবহার করে গ্রাহক টাকা জমা ও উত্তোলনসহ অন্যান্য ব্যাংকিং পরিষেবা নিতে পারে। ব্যাংক হিসাব বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। বহুল ব্যবহৃত ব্যাংক হিসেবের মধ্যে রয়েছে আমানত হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব এবং ক্রেডিট কার্ড হিসাব ইত্যাদি। ব্যাংক হিসেবে গ্রাহকের যাবতীয় লেনদেন লিপিবদ্ধ থাকে যা প্রতিবেদন আকারে গ্রাহককে প্রদান করা হয়।
ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দেয়ার পদ্ধতি
হিসাবে টাকা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত রশিদ সংগ্রহ করতে হয়। আমানতকারী সংগৃহীত রসিদের মাধ্যমে সে নগদ টাকা, চেক, বিনিময় বিল, পে-অর্ডার, প্রতিজ্ঞাপত্র ইত্যাদি জমা দিয়ে থাকে। সাধারণত জমা রসিদের পাতা দুই ভাগে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি অংশে একই বিষয় ও তথ্যাদি লিখা থাকে। নির্ধারিত স্থানসমূহে জমাকারীকে লিখতে হয়; জমাকারীর নাম, হিসাব নাম্বার, তারিখ, টাকার পরিমাণ (অংকে ও কথায়) ইত্যাদি। নগদ টাকা জমার ক্ষেত্রে জমাকৃত টাকার নোটের মূল্যমান অনুযায়ী সংখ্যা উল্লেখ করতে হয়।
ব্যাংক হতে টাকা উত্তোলন পদ্ধতি
বিভিন্ন হিসাবের টাকা উত্তোলনের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। আসুন সেগুলো জেনে নিই-
ক) চলতি হিসাবঃ এ হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে কার্য দিবসে যতোবার খুশি টাকা উত্তোলন করা যায়। এজন্য ১০, ২৫, ৫০ বা ১০০ পাতার চেকবহি সরবরাহ করা হয়।
খ) সঞ্চয়ী হিসাব: চেকসমেত সঞ্চয়ী হিসাব থেকে চেকের মাধ্যমে এবং চেকবিহীন সঞ্চয়ী হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলনের নির্ধারিত রসিদের মাধ্যমে সপ্তাহে মাত্র দুই বার টাকা উত্তোলন করা যায়।
গ) স্থায়ী হিসাব: স্থায়ী হিসাবে সাধারণত নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ না হলে তা থেকে অর্থ উত্তোলন করা যায় না। তবে জরুরী প্রয়োজনে মেয়াদ শেষের পূর্বেও বিশেষ ব্যবস্থায় এ হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়। এ ক্ষেত্রে সুদ বা মুনাফা পাওয়া যায় না বা কম হারে পাওয়া যায়।
হিসাব বন্ধ করার পদ্ধতি
কোন গ্রাহক তার ব্যাংক হিসাব (চলতি বা স্থায়ী) বন্ধ করতে আগ্রহী হলে ব্যাংকের ম্যানেজার বরাবর সাদা কাগজে আবেদন করতে হয় এবং সাথে পাস বুক ও অব্যবহৃত চেকবইটি ফেরৎ দিতে হয়। একই সাথে আমানতকারীর হিসাবও খতিয়ান পৃষ্ঠায় ‘হিসাব বন্ধ’ কথাটি লিখে রাখা হয়। বিভিন্ন কারণে এমনিতেই হিসাব বন্ধ হয়ে যায়: যেমন, মক্কেলের মৃত্যু হলে, সে পাগল বা দেউলিয়া হলে, হিসাব বন্ধ করার নোটিশ দিলে, ৩য় ব্যক্তির নিকট হিসাবের অর্থ হস্তান্তর করলে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ইত্যাদি। পুলিশ আদালতের নির্দেশে সাময়িকভাবে হিসাবের লেনদেন বন্ধ করতে পারে।