কোভিড-১৯ কিংবা করোনা পরবর্তী সময়ে আবার ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত প্রক্রিয়াটা স্বাভাবিক হয়েছে। চালু হয়ে গেছে স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া। এবং ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় কিছু নতুন নিয়ম জারি করা হয়েছে আবার কিছু পুরনো নিয়ম বহাল রয়েছে। আজকে আমরা জেনে নিবো সেই নতুন নিয়ম গুলো কি?

বর্তমান সময়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নতুন নতুন নিয়ম কানুন যুক্ত করা হয়েছে, সেই নিয়ম কানুন গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট এর নূন্যতম ১৫০ ডলার এনডোর্স করতে হবে এবং এনডোর্সমেন্ট সমপরিমাণ ডলার আপনার সঙ্গে রাখতে হবে

ডলার এনডোর্স প্রক্রিয়া ২০২৩

বর্তমানে প্রক্রিয়া একজন বাংলাদেশী নাগরিকের পাসপোর্টে ডলার এনডোর্সমেন্ট আছে কিনা এটা কিন্তু খুব ভালোভাবে যাচাই করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশন পার হবার জন্য যে ডলার এনডোর্সমেন্ট এটা কিন্তু কোন ব্যাংক থেকে করা বাধ্যতামূলক না আপনি চাইলে যেকোন মানি এক্সচেঞ্জ অফিস থেকেও করাতে পারবেন। আপনি যদি সড়কপথে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স জমা দিতে হবে। এই ট্রাভেল ট্যাক্স আপনি চাইলে বন্দর ছাড়াও ঢাকা শহর বা বাংলাদেশের যে কোন শহর থেকে ব্যাংকের চালানের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি স্থলবন্দর হিসাবে বেনাপোল বা ভুড়িমারি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন তাহলে অতিরিক্ত আরো ৪৭ টাকা ৫০ পয়সার একটি পোর্ট ফি আপনাকে পরিশোধ করতে হবে। এটা ব্যাংকে পরিশোধ করা যায় না শুধুমাত্র পোর্ট থেকেই পরিশোধ করা যায়।

এখন কোভিড-১৯ সংক্রান্তঃ কিছু নিয়ম কারণ আপনাকে অবশ্যই ফলো করতে হবে

ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় আপনি যখন ভারতে প্রবেশ করবেন তখন আপনার সাথে অবশ্যই কভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিয়েছেন সে ভ্যাকসিনের আইডি কার্ড বা সার্টিফিকেট অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে ন্যূনতম ৪ কপি।

তার মধ্যে বাংলাদেশের কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনে ১ কপি এবং ভারতের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনে ১ কপি। আবাে একইভাবে আপনি ভারত থেকে যখন বাংলাদেশে আসছেন কিন্তু এই চারটি স্থানে আপনাকে চারটা সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। মনে রাখবেন আপনি কোন দেশের ভ্যাকসিন দিয়েছেন কোন কোম্পানির ভ্যাকসিন দিয়েছেন সেটা মুখ্য বিষয় নয়। আপনার ন্যূনতম ২ ডোজ টিকা নিয়ে থাকতে হবে, তিনটি ভ্যাকসিন দেয়া থাকলেও ভাল।

যদি এমন হয় আপনি এখনো পর্যন্ত কোন টিকা গ্রহণ না করে থাকেন তাহলে আপনার ভ্রমণের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই করোনা টেস্ট করে নেগেটিভ সার্টিফিকেট সাবমিট করতে হবে এবং RT PCR Test হতে হবে।

এই মুহূর্তে যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাবেন তাদের অবশ্যই পেশার সংক্রান্ত প্রুফ বা কাগজপত্র জমা করতে হবে। আপনি যদি কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকেন তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানে থেকে NOC নিতে হবে যা অবশ্যয় প্রতিষ্ঠানের প্যাডে হতে হবে। যদি আপনি সরকারি চাকরিতে কর্মরত থাকেন তাহলে আপনার মন্ত্রণালয়/ অধিদপ্তর থেকে নেওয়া NOC অথবা গভারমেন্ট অর্ডার (GO) নিতে হবে। যদি আপনি অন্য পেশায় থাকেন তাহলে যেমন কৃষক হলে আপনার জমির খতিয়ান এর কপি, ব্যবসায়ী হলে ট্রেড লাইসেন্স এর কপি সাবমিট করতে হবে।আর স্টুডেন্ট হলে আইডি কার্ডের ফটোকপি।

গমনের সময়ে পদক্ষেপসমূহ

আপনি যখন বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন তখন যদি আপনার দশ আঙ্গুলের চাপ নিয়ে থাকে তাহলে আর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া দশ আঙুলের ছাপ দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। কিন্তু যাদের ভিসা নেবার সময় বা আবেদনপত্র জমা দেয়ার সময় দশ আঙুলের ছাপ নেয়া হয়নি তাদের কিন্তু ভারত সীমান্তে ভারতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সময় বাধ্যতামূলকভাবে দশ আঙুলের বায়োমেট্রিক ছাপ দেওয়া লাগছে।

যখন আপনি বাংলাদেশের সীমান্ত পার হবেন তখন বাংলাদেশে একটি ডিপারচার ফ্রম আছে এই ফরমটি ফিলাপ করে জমা দিতে হবে। আর আপনি যখন ভারত সীমান্ত অতিক্রম করবেন তখন ভারতে প্রবেশের জন্য ভারতে অন অ্যারাইভাল’ ও ফরম ফিলাপ করে জমা দিতে হবে ভারতীয় ইমিগ্রেশনে। এই ফরম ফিলাপ করার সময় অনেকের কাছে কলম থাকে না বরং এ নিয়ে জটিলতায় পড়ে কিংবা দীর্ঘ লাইন এর পিছনে অনেক সময় পড়তে হয়। আর তাই আপনি সাথে করে অবশ্যই একটি কলম রাখবেন এবং যদি ফর্ম ফিলাপ করে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে আরো ভাল।

বর্তমানে বাস সার্ভিস চালু নেই

এই মুহূর্তে যারা বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করছেন তাদের দ্রুত সরাসরি বাস সার্ভিস চালু নেই ফলে ভারত সীমান্ত পার হবার পরে আপনাকে ট্যাক্সি নিতে হবে/ বাসে যেতে হবে অথবা ট্রেনে। আমরা যারা ট্রেনে ভ্রমণ করতাম তাদের জন্য সুবিধা ছিল পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে একটি করে বাসে চড়ে আমরা যেতাম বনগাঁ রেল স্টেশন পর্যন্ত। রেল স্টেশন পর্যন্ত বাবার পরিমাণ ছিল মাত্র ৩০ রুপি বর্তমানে কিন্তু এই ভাড়া ২০ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫০ রুপি। ফলে আপনাকে ৫০ রুপি ভাড়া দিয়ে তারপরে আপনার পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে পৌঁছাতে হবে বনগাঁ রেল স্টেশন পর্যন্ত।

ফলে এই সমস্ত নিয়ম কানুন আপনাকে ভারত বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনে পরিপালন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *