সূচীপত্র
সরকারি চাকরিতে একজন স্থায়ী কর্মচারীর প্রতি ১১ দিন কর্মকালীন সময়ের জন্য ১ দিন করে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি অর্জিত হবে এবং সর্বোচ্চ ৪ মাস পর্যন্ত এ ছুটি জমা হবে – সরকারি চাকরিতে ছুটি জমার বিধান
অর্জিত ছুটি নাকি দুই রকমের হয়? হ্যাঁ। অর্জিত ছুটি দুই রকমের হয়। একটি পূর্ণ গড় বেতনে যেখানে ছুটিতে থাকলে সম্পূর্ণ মূল বেতন ও মোট বেতন পাওয়া যায় (শুধুমাত্র টিফিন ও যাতায়াত ভাতা পাওয়া যায় না)। অন্যদিকে অর্ধ গড় বেতনে ছুটির ক্ষেত্রে ছুটি নিলে মূল বেতন অর্ধেক পাবেন, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও শিক্ষা ভাতা পূর্ণ হারে পাবেন (এছাড়া টিফিন ও যাতায়াত ভাতা পাওয়া যায় না। দুই ধরনের ছুটিই প্রতি বছর কর্মকালের জন্য জমা হয়ে থাকে। পিআরএল এ যাওয়ার সময় অবশ্যই ৩০ মাসের ছুটি জমা থাকা আবশ্যক। কারণ অবসর উত্তর ছুটি ১২ মাস এবং ছুটি বিক্রি করা যায় ১৮ মাস।
কোন বিধান বলে ছুটি জমা হয়? কর্মকালীন সময়ে যে ছুটি অর্জিত হয় তাই অর্জিত ছুটি। অর্জিত ছুটি দুই প্রকার; যেমন- গড় বেতনে অর্জিত ছুটি এবং অর্ধ গড় বেতনে অর্জিত ছুটি। নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা-১৯৫৯ অনুযায়ী স্থায়ী সরকারি কর্মচারীদের জন্য অর্জিত ছুটি জমা হয়।
ছুটিকালীন বেতন বলতে কি বুঝায়? যে মাসে ছুটি গ্রহণ করা হয়েছে তা পূর্ববর্তী পূর্ণ ১২ মাসের গড় বেতনের ভিত্তিতে গড় বেতনে ছুটিকালীন সময়ের ছুটির বেতন গণনা করা হবে অথবা ছুটিতে যাওয়ার পূর্ববর্তী মাসে সরকারি কর্মচারী যে বেতন উত্তোলন করেছেন তার ভিত্তিতে ছুটির বেতন গণনা করা হবে। দুটি পদ্ধতির মধ্যে যা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মচারীর জন্য অধিকতর অনুকূল হবে তার ভিত্তিতে ছুটিকালীন বেতন গণনা করা যেতে পারে। অর্ধগড় বেতনে ছুটিকালীন সময়ের ছুটির বেতন উপ-বিধি (১)-এর আওতায় গণানাকৃত অর্ধগড় বেতনের সমান হবে। একজন সরকারি কর্মচারী যে দেশেই ছুটি কাটান না কেন, তিনি তার ছুটিকালীন সময়ের বেতন বাংলাদেশি মুদ্রায় বাংলাদেশেই উত্তোলন করবেন।
নৈমিত্তিক ও অর্জিত ছুটি ছাড়া কি আর কোন ছুটি নাই? / সরকারি কর্মচারীগণ ১৮ রকমের ছুটি ভোগ করে থাকে
এক সাথে প্রদানযোগ্যে সবোর্চ্চ ছুটি কত দিন? এক সাথে সর্বোচ্চ এক বৎসর পর্যন্ত ছুটি নেওয়া যাবে, তবে মেডিকেল প্রত্যয়নপত্র সাপেক্ষে এ ছুটির পরিমাণ দু’বৎসর পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে।
ছুটির নিয়ম । বিভিন্ন প্রকারের ছুটির মেয়াদ, কত দিন নেয়া যায়?
অর্জিত ছুটির প্রকারবেধ । অর্ধগড় বেতনে ছুটি কি পূর্ন গড় বেতনে ছুটিতে রূপান্তর করে কাটানো যায়?
- গড় বেতনে ও অর্ধ বেতনে ছুটি: (১) গড় বেতনে ছুটি; ক. একজন স্থায়ী কর্মচারীর প্রতি ১১ দিন কর্মকালীন সময়ের জন্য ১ দিন করে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি অর্জিত হবে এবং সর্বোচ্চ ৪ মাস পর্যন্ত এ ছুটি জমা হবে। এ চার মাসের অতিরিক্ত সময়ের অর্জিত ছুটি তার হিসাবে আলাদাভাবে জমা হবে।
- খ. একজন স্থায়ী কর্মচারীকে এক সাথে সর্বোচ্চ চার মাসের বেশি পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাবে না। তবে মেডিকেল প্রত্যায়নপত্র সাপেক্ষে বা ধর্মীয় পুণ্যস্থানসমূহ দর্শনের উদ্দেশ্যে শিক্ষা বা চিত্তবিনোদনের নিমিত্তে ভারত, বার্মা ও শ্রীলঙ্কার বাইরে চার মাসের অতিরিক্ত হিসেবে এ ছুটির সীমা ছয় মাস পর্যন্ত গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যেতে পারে।
- (২) অর্ধ গড় বেতনে ছুটি: ক. একজন স্থায়ী কর্মকর্তার কর্মকালীন সময়ের প্রতি ১২ দিনের জন্য ১ দিন করে অর্ধগড় বেতনে ছুটি অর্জিত হবে এবং এ ছুটি সীমাহীনভাবে জমা হতে থাকবে।
- খ. সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত অর্ধ গড় বেতনের ছুটিতে রূপান্তরিত করা যাবে। তবে মেডিকেল প্রত্যয়নপত্র ছাড়া অর্ধ গড় বেতনের ছুটিতে পূর্ণগড় বেতনের ছুটিতে রূপান্তরিত করা যাবে না। এ রূপান্তরের হার হবে প্রতি দুদিনের অর্ধগড় বেতনের ছুটির জন্য একদিনের পূর্ণগড় বেতনের ছুটি।
ছুটি জমা না থাকলে কি ছুটি নেয়া যায়?
হ্যাঁ। প্রাপ্যতা বিহীন ছুটি নেয়া যায়। এক্ষেত্রে ছুটি জমা না থাকলেও ছুটি নেয়া যায়। ছুটি জমা হলে তখন কর্তন করা হয়। তাই কর্তৃপক্ষকে সন্তুষ্ট রেখে আপনি যে কোন প্রকারের ছুটি ভোগ করতে পারেন। যদিও কর্তৃপক্ষ বলে কিছু ছুটি অধিকার নয়। তবে জমাকৃত অর্জিত ছুটির আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ বাধা দেয় না। অন্য দিকে আপনি অসুস্থ্য হলে বা পরিবার অসুস্থ্য হলে এখানে ছুটি না দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি কর্তৃপক্ষ তবুও ছুটি না দেয়া সেটি কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা এবং অনুপযোগী সিদ্ধান্ত। আইন সব সময় সুবিধার জন্যই সৃষ্টি হয় তাই যারা আইনকে অমানবিক কাজে ব্যবহার করে তাদেরকে কোন ভাবেই মানবিক মানুষ বলা যায় না।
https://reportbd.net/%e0%a7%a8%e0%a7%a6%e0%a7%a8%e0%a7%a9-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%b2%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%be-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b7/