সূচীপত্র
গত ১৩-০৪-২০২৫ তারিখ ভূমি সংস্কার বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত ‘ভূমি উন্নয়ন করের লক্ষ্যমাত্রা ও অর্জন’ বিষয়ক সভায় মাননীয় উপদেষ্টা, ভূমি মন্ত্রণালয় রাজস্ব আদায় কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে আদায়ের হার কাঙ্খিত পর্যায়ে উন্নীতকরণের নিমিত্ত সদয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। চলমান অর্থবছরের অবশিষ্ট সময়ে ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ আদায়ের লক্ষ্যে উক্ত সভার নির্দেশনা মোতাবেক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়– ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) ২০২৫
খাজনা আদায়ে নোটিশ দিবে সরকার? হ্যাঁ। আদায় কার্যক্রম জোরদারকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজন মাফিক আদায় ক্যাম্প স্থাপন করা হবে। ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। মৌজা ভিত্তিক সঠিক ও নির্ভুলভাবে খতিয়ান এবং হোল্ডিং এন্ট্রি কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। যে সকল ব্যক্তি ও সংস্থা/প্রতিষ্ঠান এখনো ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেনি তাদের নোটিশ প্রদান, মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং প্রয়োজনে রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা রুজু করা; (v) উপজেলা এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শনের সময় ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তাগিদ প্রদান করা; (vi) হাট-বাজার বা জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলোতে মাইকের মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রচার-প্রচারণা চালানো। এমতাবস্থায়, তার অধিক্ষেত্রভুক্ত উপজেলা ভূমি অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসসমূহে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জনের নিমিত্ত উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
ভূমি কর না দিলে সরকারি খতিয়ানে জমি চলে যাবে? হ্যাঁ। এই মামলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেন্ট সার্টিফিকেট অফিসার হিসেবে কাজ করেন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) পাওনা আদায়ের যোগ্য ও যথাযথ কিনা তা পরীক্ষা করে স্বাক্ষর করেন, যা সার্টিফিকেট মোকদ্দমা শুরু হওয়ার প্রমাণ হিসেবে গণ্য হয়। কোনো দেনাদার যদি রেন্ট সার্টিফিকেট কার্যকর করতে বাধা দেয় বা প্রতারণামূলকভাবে সম্পত্তি হস্তান্তর করে, তবে দন্ডবিধি আইনের ২০৬ ধারায় শাস্তি পেতে পারে। সার্টিফিকেট মামলা মূলত দুই প্রকারের, একটি হলো রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা, যা শুধু ভূমি উন্নয়ন করের জন্য, আর অন্যটি হলো অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায়ের জন্য। ভূমি উন্নয়ন কর অনাদায়ী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা করা হয়।
ভূমি উন্নয়ন কর কি? ভূমি উন্নয়ন কর (Land Development Tax) হলো একটি সরকারি কর, যা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জমির উন্নয়ন বা ব্যবহার অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। এটি মূলত জমি ব্যবহারের ধরন, আয়তন, অবস্থান ও শ্রেণিভেদ অনুযায়ী সরকারকে প্রদান করতে হয়। কৃষি, আবাসিক, বাণিজ্যিক বা শিল্প এলাকায় যারা জমি ব্যবহার করেন। অনলাইনে — বর্তমানে land.gov.bd ও সংশ্লিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনেও ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করা যায়।
অধিক্ষেত্রভুক্ত উপজেলা ভূমি অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসসমূহে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জনের নিমিত্ত উপরোক্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সরকার
কত বছর খাজনা না দিলে জমি খাস হয়? নতুন ভূমি আইন অনুযায়ী, টানা তিন বছর খাজনা না দিলে জমি খাস হয়ে যাবে। এর অর্থ হলো, জমি সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
Caption: Land Tax Bangladesh
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন উদ্যোগ ২০২৫ । কর না দিলে রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা রুজু হবে?
- আদায় কার্যক্রম জোরদারকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজন মাফিক আদায় ক্যাম্প স্থাপন;
- ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে বিজ্ঞাপন প্রচার করা;
- মৌজা ভিত্তিক সঠিক ও নির্ভুলভাবে খতিয়ান এবং হোল্ডিং এন্ট্রি কার্যক্রম নিশ্চিত করা;
- যে সকল ব্যক্তি ও সংস্থা/প্রতিষ্ঠান এখনো ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেনি তাদের নোটিশ প্রদান, মতবিনিময় সভার আয়োজন এবং প্রয়োজনে রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা রুজু করা;
- উপজেলা এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিদর্শনের সময় ভূমি উন্নয়ন কর আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং তাগিদ প্রদান করা;
- হাট-বাজার বা জনসমাগম হয় এমন স্থানগুলোতে মাইকের মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব উল্লেখ করে প্রচার-প্রচারণা চালানো।
রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা কি?
রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা হলো ভূমি উন্নয়ন কর বা ট্যাক্স আদায়ের জন্য সরকারী পাওনা আদায় আইন-১৯১৩ এর অধীনে দায়ের করা একটি বিশেষ প্রকারের মামলা। এই মামলা মূলত সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পাওনা আদায়ের জন্য চালু করা হয়, যেখানে ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা হলো ভূমি উন্নয়ন কর বা ট্যাক্স আদায়ের জন্য সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পাওনা আদায়ের জন্য চালু করা এক প্রকার মামলা। এই মামলার মূল উদ্দেশ্য হলো ভূমি উন্নয়ন কর বা ট্যাক্স আদায় করা। এটি সরকারি পাওনা আদায় আইন-১৯১৩ এর অধীনে পরিচালিত হয়।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: | রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা সহজীকরণের জন্য বিভিন্ন পরিপত্র এবং প্রসেসম্যাপ প্রকাশিত হয়েছে, যা সিলেট বিভাগ website এ পাওয়া যায়। | রেন্ট সার্টিফিকেট মামলা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ভূমি সংস্কার বোর্ড website এ পাওয়া যায়। |
শতাংশ প্রতি ভূমি উন্নয়ন কর কত?
শতাংশ প্রতি ভূমি উন্নয়ন করের হার বিভিন্ন ধরনের জমির জন্য ভিন্ন হয়ে থাকে। সাধারণত, কৃষি জমির জন্য ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ করা হয়। এর বেশি জমির ক্ষেত্রে, প্রতি শতাংশের জন্য সাধারণত ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হয়। অকৃষি জমির ক্ষেত্রে, এর হার আরও বেশি হতে পারে, যা আবার জমির ব্যবহার এবং এলাকার উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকার জন্য সাধারণত প্রতি শতাংশে ২৫ থেকে ৩০ টাকা বা তার বেশি ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হতে পারে। ৮.২৫ একর বা ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফ। ২৫ বিঘা থেকে ১০ একর পর্যন্ত প্রতি শতাংশের জন্য সাধারণত ৫০ পয়সা হারে ভূমি উন্নয়ন কর। ১০ একরের বেশি জমির ক্ষেত্রে, প্রতি শতাংশের জন্য সাধারণত ১ টাকা হারে ভূমি উন্নয়ন কর। শহর ও বাণিজ্যিক এলাকার জন্য প্রতি শতাংশে সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ টাকা বা তার বেশি ভূমি উন্নয়ন কর। অন্যান্য এলাকার জন্য প্রতি শতাংশে সাধারণত ৭ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর। আপনার জমির সঠিক ভূমি উন্নয়ন করের হার জানতে, আপনার এলাকার ভূমি অফিসের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।