খতিয়ান ও অনলাইন ই পর্চা

জমি মিউটেশন ২০২৪ । ভূমি ই নামজারি না মঞ্জুর হলে করণীয় কি?

বাংলাদেশে মিউটেশন এখন অনলাইনে করতে হয়-খারিজ বা ই নামজারি করার নিয়ম – জমি মিউটেশন ২০২৪

নামজারি কি? – ১৯৫০ সনের জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত্ব আইন এর ১৪৩ ধারা অনুযায়ী কালেক্টর (যিনি ডিসি হিসেবে অধিক পরিচিত) তার প্রতিনিধি এসি (ল্যান্ড) এবং তহসিলদারদের মাধ্যমে রেকর্ডে নতুন ভূমিমালিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে রেকর্ড আপডেট বা হালনাগাদ করে থাকেন। নতুন মালিকদের ভূমির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যাদি অন্তর্ভুক্ত করে রেকর্ড হালনাগাদ করার এই প্রক্রিয়াকে মিউটেশন বলে।

নামজারি কেন করাবেন? নামজারি করাটা খুবই জরুরি। নামজারি না করলে রেকর্ডে নতুন মালিকের নাম অন্তর্ভূক্ত হবে না। আপনি নিজ নামে খাজনাও দিতে পারবেন না। অর্থাৎ ভূমি অফিস বা তহসিল অফিসের রেজিস্টারে আপনারনামই উঠবে না। রেকর্ডই মালিকানার প্রকৃত দলিল। ধরুন আপনি রেকর্ডিয় মালিক জনাব আনোয়ার হোসেনের নিকট হতে জমি কিনেছেন। এরপর আপনি যতক্ষণ না আপনার নামে নামজারি করাচ্ছেনততক্ষণ পর্যন্ত সরকারি রেকর্ডে আপনার নামই উঠবে না। আপনার কেনা জমি সরকারি খাতাপত্রে পূর্ববর্তী মালিক আনোয়ার হোসেনের নামেই রয়ে যাবে। আপনি জমি কিনলেও অথচ মালিক হিসেবে গণ্যহবেন না। কাজেই নামজারি করাটা খুবই জরুরি।

নামজারি কোথায় করাবেন? নামজারি হয় এসি (ল্যান্ড) অফিসে। জমির মালিকানার প্রমাণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট দলিলাদি ও কাগজপত্রের ফটোকপিসহ এসি (ল্যান্ড) বরাবর আবেদন করতে হয়। এজন্য একটি নির্ধারিত ফর্ম রয়েছে। ফর্মটি এসি(ল্যান্ড) অফিসে পাওয়া যায়। ফর্মটি ভালভাবে পড়ে নিন। কোন শব্দ বা টার্ম না বুঝলে এই ওয়েবসাইটের সাহায্য নিন বা এসি (ল্যান্ড) অফিসের কোন কর্মকর্তার সাহায্য নিন। এখন অবশ্যই অনলাইনে ই নামজারি আবেদন করা যায় কিন্তু জটিলতা থাকলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে না মঞ্জুর করে থাকে।

মিউটেশন বা খারিজ বা ই নামজারি করে নিন / নামজারির ধাপসমূহ দেখুন

মনে রাখবেন, নামজারি পড়চা, ডিসিআর এবং খাজনার রশিদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মালিকানার ডকুমেন্ট। এগুলো সাবধানে একটি ফাইলে সংরক্ষণ করুন। সম্ভব হলে পুরো সেটটি ফটোকপি করে পৃথক কোনস্থানে নিরাপদে রাখুন। নামজারির পুরো প্রক্রিয়াটির জন্য সরকার নির্ধারিত সময় ২৮ দিন। এসময়ের মধ্যেই আপনার কেসটি নিষ্পত্তি হবে। এর জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ১১৭০/- টাকা। এর অতিরিক্ত কোন অর্থকাউকে প্রদান করবেন না। কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা অতিরিক্ত কোন অর্থ দাবী করলে তাৎক্ষণিকভাবে এসি (ল্যান্ড)কে অবহিত করুন। প্রয়োজনে লিখিতভাবে অভিযোগ করুন।

Caption: Click For e muation bd

মিউটেশনে প্রয়োজনী ডকুমেন্ট । নামজারিতে কী কী প্রয়োজন হয়?

  • নির্ধারিত ফর্মে আবেদন। এখন অনলাইনে ই নামজারির আবেদন করতে হয়।
  • কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি।
  • মালিকানার প্রমাণস্বরূপ দলিলাদি ও অন্যান্য কাগজপত্র (দলিলের ফটোকপি, সিএস/এসএ/আরএস/মহানগর পড়চা ইত্যাদি)
  • ওয়ারিশ হিসেবে নামজারির ক্ষেত্রে কোর্টের সাকসেশন সার্টিফিকেট বা নির্ধারিত জনপ্রতিনিধি (ইউপি চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড কমিশনার, পৌরসভার চেয়ারম্যান ইত্যাদি) কর্তৃক প্রদত্ত ওয়ারিশ সনদ।

মিউটেশন বা নামজারির আবেদন না মঞ্জুর?

এসি (ল্যান্ড) এর নিকট কোন বিষয়ের প্রতিকার না পেলে বিষয়টি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) (এডিসি রেভিন্যু) বা জেলা প্রশাসক (ডিসি) এর নিকট আপনার আবেদন/অভিযোগজানান। কোন কারণে আপনার নামজারির আবেদন মঞ্জুর না হলে কেন তা না-মঞ্জুর হলো তা জেনে নিবেন।যদি এমন কোন কাগজপত্রের ঘাটতির জন্য না-মঞ্জুর হয়ে থাকে যেটা আসলে আপনার কাছেরয়েছে বা সংগ্রহ করে দিতে পারবেন সেক্ষেত্রে ওগুলোসহ পুনরায় বিবেচনার জন্য এসি (ল্যান্ড) বরাবর আবেদন করতে পারেন। অন্যথা নাজিরের নিকট হতে না মঞ্জুর আদেশের নকল সংগ্রহ করবেন। এজন্য একটি নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। আদেশের নকলসহ এডিসি (রেভিন্যু) এর নিকট এসি (ল্যান্ড) এর আদেশের বিরুদ্ধেআপীল করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আইনজীবির সহায়তা গ্রহণ করা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *