আজকের খবর ২০২৫

এনবিআর-এর গুরুত্বপূর্ণ আদেশ ২০২৫ । যৌথ মালিকানার সম্পত্তি বন্টনে উৎসে আয়কর থেকে অব্যাহতি?

যৌথ মালিকানায় ক্রয় করা জমি বা অবকাঠামো শুধুমাত্র মালিকদের মধ্যে দলিল অনুযায়ী বন্টনকালে যদি কোনো মূলধনী লাভ (Capital Gain) অর্জিত না হয়, তবে সেই দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে কোনো উৎসে আয়কর (Withholding Tax) দিতে হবে না। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি বিশেষ আদেশ জারি করে এই বিষয়ে চূড়ান্ত স্পষ্টীকরণ দিয়েছে, যা দেশের যৌথ সম্পত্তি মালিকদের জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর।

এই আদেশের ফলে, দীর্ঘদিন ধরে যৌথ মালিকানার সম্পত্তি বন্টন নিয়ে বিদ্যমান আইনি জটিলতা ও করের বোঝা অনেকটা দূর হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ মহল।

আদেশের মূল কথা

এনবিআর-এর এই আদেশে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা এক বা একাধিক দলিলের মাধ্যমে যৌথ মালিকানায় কোনো জমি বা অবকাঠামো ক্রয় করার পর, যদি তারা নিজেদের মধ্যে সেই সম্পত্তি ক্রয়মূল্য বা প্রকৃত মূল্যের ভিত্তিতে ভাগ করে নিতে চান—এবং এই বন্টন প্রক্রিয়ায় কোনো অতিরিক্ত মুনাফা বা মূলধনী লাভ না ঘটে—তবে উক্ত বন্টননামা দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময় প্রচলিত উৎসে আয়কর আদায় করা যাবে না।

  • স্বস্তির কারণ: এতদিন অনেক ক্ষেত্রে এই ধরনের বন্টন দলিলকেও সাধারণ হস্তান্তর দলিল (Transfer Deed) হিসেবে গণ্য করে রেজিস্ট্রেশন পর্যায়ে একটি নির্দিষ্ট হারে উৎসে আয়কর আদায় করা হতো।
  • আইনের ভিত্তি: এই আদেশটি মূলত আয়কর আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য জারি করা হয়েছে, যেখানে মূলধনী লাভ না হলে কর আরোপের সুযোগ নেই।

বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া

দেশের রিয়েল এস্টেট এবং কর বিশেষজ্ঞরা এনবিআর-এর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের মতে, এটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ, যা সম্পত্তির মালিকদের আইনি অধিকার নিশ্চিত করবে এবং দ্বৈত করের চাপ থেকে রক্ষা করবে।

[কোনো বিশেষজ্ঞ/অর্থনীতিবিদের বক্তব্য যোগ করা যেতে পারে]: “যৌথ সম্পত্তি বন্টনের ক্ষেত্রে যদি মূলধনী লাভ না হয়, তবে কর আরোপ করা ছিল নীতিগতভাবে অযৌক্তিক। এনবিআর-এর এই স্পষ্টীকরণ প্রমাণ করে যে বোর্ড সাধারণ করদাতাদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করছে। এতে করে সম্পত্তির সুষ্ঠু বন্টন প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে।”

কাদের জন্য প্রযোজ্য?

এই আদেশ মূলত সেই সকল ব্যক্তি সত্তার জন্য প্রযোজ্য যারা:

  1. এক বা একাধিক দলিলের মাধ্যমে কোনো সম্পত্তি যৌথভাবে ক্রয় করেছেন।
  2. এখন শুধু নিজেদের মধ্যে মালিকানা স্বত্ব ও অংশ দলিল অনুযায়ী বন্টন করতে চাইছেন।
  3. বন্টনের সময় সম্পত্তির মূল মূল্যের ওপর কোনো ধরনের মুনাফা বা মূলধনী লাভ করছেন না।

ভবিষ্যৎ প্রভাব

এই আদেশের ফলে সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন অফিসগুলোতে বন্টন সংক্রান্ত দলিল সম্পাদনের প্রক্রিয়া আরও সরল হবে এবং অপ্রয়োজনীয় উৎসে কর পরিশোধের ঝামেলা কমবে। তবে, সম্পত্তি বন্টনকালে মূলধনী লাভ অর্জিত হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। কর ফাঁকি রোধে এনবিআর-এর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রতি সঠিক যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এই আদেশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন যৌথ সম্পত্তি মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতা কমাতে এবং দেশের রাজস্ব সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে সহায়ক হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *