সূচীপত্র
কোটা ব্যবস্থা পিছিয়ে পড়ার জন্য নয় বরং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সৃষ্টি হয়- এটি যুগের পর যুগে ব্যবহারে মেধাবীরা বঞ্চিত হয়–বিশ্বে কোটা ব্যবস্থা ২০২৪
বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থা কেন? – শিক্ষা ও সরকারি চাকরিতে মেধা ও যোগ্যতার পাশাপাশি জাতিগত পরিচয়, ধর্ম, লিঙ্গ, ভৌগোলিক অবস্থান ইত্যাদির ভিত্তিতে নির্দিষ্ট শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে। তবে এখানে শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধা দিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০% রাখা হয়েছে এবং স্বাধীনতার যুদ্ধের পুরস্কার হিসেবে ভাতা ও কোটা ব্যবস্থা একই সাথে চালু রাখা হয়েছে। একটি কোটা সুবিধা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অন্য দেশগুলোতে কি জন্য কোটা? ভারতের সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদের অধীনে, পিছিয়ে পড়া শ্রেণী, তফসিলী জাতি ও তফসিলী উপজাতিদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। মালয়েশিয়াতে জাতিগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য মালয়, চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কাতে জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে কি কোটা আছে? যুক্তরাষ্ট্র ঐতিহাসিকভাবে বৈষম্যের শিকার হওয়া মানুষের জন্য কোটা রয়েছে সীমিত হারে। আফ্রিকান আমেরিকান, স্থানীয় আমেরিকান ও হিস্পানিকদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে Affirmative Action নীতির মাধ্যমে সুযোগ বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়। এছড়াও ব্রাজিল কৃষ্ণাঙ্গ ও মিশ্র জাতির জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা বর্ণবাদী শাসনব্যবস্থার ঐতিহ্য থেকে মুক্তি পেতে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও, আরও অনেক দেশে বিভিন্ন রকমের কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে।
কোটা সুবিধার নামে যদি মেধাবীরা বঞ্চিত হয় তবে সে ব্যবস্থার সংস্কার হওয়া খুবই জরুরি / রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য মেধাবী সন্তানদের অবশ্যই খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে
কোটা ব্যবস্থার পক্ষে ও বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি রয়েছে। সমর্থকরা মনে করেন যে এটি সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশগুলিকে এগিয়ে নিয়ে আসতে সাহায্য করে এবং বৈষম্য দূর করতে ভূমিকা রাখে। বিরোধীরা মনে করেন যে এটি মেধার ভিত্তিতে সুযোগ প্রদানের নীতির পরিপন্থী এবং অকার্যকর।
Caption: quota in world
বিশ্বে কোটা ব্যবস্থা ২০২৪ । কোটা ব্যবস্থার বিষয়ে প্রতিটি দেশের নিজস্ব নীতি রয়েছে।
বাংলাদেশ: সরকারি চাকরি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য 30%, জাতীয় সংখ্যালঘুদের জন্য 10%, নারীদের জন্য 30% এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য 10% কোটা প্রযোজ্য। শিক্ষা: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে জাতীয় সংখ্যালঘুদের জন্য 20% এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য 2% কোটা প্রযোজ্য।
ভারত: সরকারি চাকরি তফসিলী জাতি (SC) এবং তফসিলী উপজাতি (ST) এর জন্য 15% করে, অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর (OBC) জন্য 27% কোটা প্রযোজ্য। শিক্ষা: কেন্দ্রীয় সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে SC, ST এবং OBC এর জন্য 15%, 7.5% এবং 27% কোটা প্রযোজ্য।
মালয়েশিয়া: সরকারি চাকরি: মালয়দের জন্য 60%, চীনাদের জন্য 30% এবং ভারতীয়দের জন্য 10% কোটা প্রযোজ্য। শিক্ষা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে মালয়দের জন্য 60%, চীনাদের জন্য 30% এবং ভারতীয়দের জন্য 10% কোটা প্রযোজ্য। এই তালিকা সম্পূর্ণ নয়। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরণের কোটা ব্যবস্থা বিদ্যমান।
মুক্তিযোদ্ধা কোটা কি শুধু বাংলাদেশেই?
হ্যাঁ। মুক্তিযোদ্ধা কোটা শুধুমাত্র বাংলাদেশেই প্রযোজ্য। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের জন্য সরকারি চাকরিতে নির্দিষ্ট শতাংশ আসন সংরক্ষণের নীতি হলো মুক্তিযোদ্ধা কোটা। এই কোটা ব্যবস্থা অন্য কোন দেশে নেই। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষা ও মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার এই কোটা ব্যবস্থা চালু করেছে।