সূচীপত্র
রেলওয়ে টিকিট অন্যের এনআইডি দিয়ে কাটলে ভ্রমণ করতে পারবেন না – ভ্রমন কালে ধরা পড়লে অর্থ ফেরত প্রদান করা হবে– জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে টিকেট ইস্যু ২০২৪
বাংলাদেশ রেলওয়ের সম্মানিত যাত্রী সাধারণের সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে “টিকেট যার ভ্রমণ তার” শীর্ষক স্লোগানকে সামনে রেখে ও বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য অনুযায়ী ‘স্মার্ট’ বাংলাদেশ’ গঠনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেটিং ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনয়ন করছে। টিকেট কালোবাজারী প্রতিরোধ, বিনা টিকেটে ভ্রমণকারীদের নিকট হতে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় সহজ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকেটিং ব্যবস্থায় তিনটি সেবা অন্তর্ভুক্ত করতে যাচ্ছে যা ১ মার্চ ২০২৩ তারিখ হতে কার্যকর হবেঃ (১) জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেটিং ব্যবস্থা, (২) টিকেট চেকিং ব্যবস্থায় POS (Point of Sales) মেশিনের প্রবর্তন ও (৩) অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়কৃত টিকেট অনলাইনে রিফান্ড এর ব্যবস্থা করা।
জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে টিকেট ইস্যু করা হবে- “টিকেট যার ভ্রমণ তার” নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট ক্রয়ের পূর্বে প্রত্যেক যাত্রীকে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বা জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাইপূর্বক রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক করেছে। কাউন্টার, অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমে টিকেট ক্রয়কারী যাত্রীগণ অনলাইন অথবা মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে যে কোনো সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমে খুব সহজে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন।
মেসেজ দিয়েও কি টিকিট ক্রয় করা যায়? অফলাইন/এসএমএস-এর মাধ্যমে নিবন্ধন পদ্ধতি জেনে নেয়া যাক। মোবাইল থেকে মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে BR <space> NID নম্বর < space> জন্ম তারিখ (জন্ম তারিখের ফরম্যাট – জন্ম সাল / মাস/দিন) লিখুন এবং এসএমএস পাঠাতে হবে ২৬৯৬৯ নম্বরে। ফিরতি এসএমএস-এর মাধ্যমে নিবন্ধন সফল বা ব্যর্থ হয়েছে কিনা, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
অনলাইনে অথবা মেসেজের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করা যাবে / রিফান্ড বা অর্থ ফেরতও অনলাইনে তথ্য যাচাই করে দেওয়া হবে।
অনলাইনের মাধ্যমে টিকেট রিফান্ড পাবেন যেভাবে দেখে নিন- স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অনুষঙ্গ হিসেবে অনলাইনে ইস্যুকৃত আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট অনলাইনেই রিফান্ড করার প্রক্রিয়া চালু করা হলে বর্তমানে একজন যাত্রীকে স্টেশনে এসে টিকেট রিফান্ড করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না ফলে সাধারণ যাত্রীরা ঘরে বসেই টিকেট রিফান্ড করতে পারবে। এতে জনগণের TCV (Time, Cost, Visit) বহুলাংশে কমানো সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে একজন যাত্রী রেল সেবা অ্যাপ বা রেলওয়ের টিকেটিং ওয়েব পোর্টালে ঢুকে নিজস্ব আইডি’তে টিকেট রিফান্ড অপশনে গিয়ে টিকেট সংক্রান্ত চাহিত তথ্যাদি প্রদান করতে হবে। পরবর্তীতে রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেম হতে তথ্যাদি যাচাই করত সঠিক পাওয়া গেলে যাত্রী কর্তৃক আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট অনলাইনে ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে পেমেন্ট গেইটওয়ে ব্যবহার করা হবে সেই একই পেমেন্ট গেইটওয়ে ব্যবহার করে টাকা রিফান্ড করা হবে।
Caption: How to purchase Railway Ticket by online
Railway e ticketing system 2024 । অনলাইনের মাধ্যমে পুরানো নিবন্ধনকারীর যে পদ্ধতি দেখে নিন ।
- বর্তমান Username এবং Password দিয়ে https://e ticket.railway.gov.bd website trail sheba app এ সাইন ইন (Sign In) করতে হবে।
- NID নম্বর এবং জন্ম তারিখ লিখে verify বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- NID নম্বর এবং জন্ম তারিখ সঠিকভাবে প্রবেশ করালে যদি এনআইডি নম্বরটি পূর্বে ব্যবহার করা না হয়ে থাকে তাহলে রেজিস্টেশন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হবে।
নতুন নিবন্ধনকারীর ক্ষেত্রে কিভাবে টিকিট করতে হবে?
প্রথমত নিবন্ধন করতে হবে। https://eticket.railway.gov.bd ওয়েবসাইট অথবা rail sheba app এ গিয়ে সাইন আপ (Sign Up) বা নিবন্ধন করতে হবে এবং সঠিক NID নম্বর ও জন্ম তারিখ verify পূর্বক অন্যান্য তথ্য প্রদান সাপেক্ষে রেজিস্টেশন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে। রেজিস্ট্রে করে উপরের নিয়ম অনুসারে টিকিট ক্রয় করতে হবে।
টিকিট ক্রয়ের শর্তাবলী কি কি? ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীগণ পিতা বা মাতার নাম ও এনআইডি দ্বারা নিবন্ধনকৃত রেলওয়ে একাউন্ট অথবা জন্মনিবন্ধন নম্বর প্রদান ও জন্মনিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত একাউন্ট দ্বারা পৃথক/এককভাবে টিকেট ক্রয় করতে পারবে। এরূপ ক্ষেত্রে টিকেটের উপরে মুদ্রিত নামের সাথে যাত্রীর সম্পর্ক যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণকালে বাধ্যতামূলকভাবে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে। বিদেশী নাগরিকগণ পাসপোর্ট নম্বর প্রদান ও পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন। সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন যাচাই পূর্বক নিবন্ধন ব্যতীত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট ক্রয় করতে পারবেন না।
ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি অথবা পাসপোর্ট/ছবি সম্বলিত আইডি কার্ড সাথে রাখতে হবে। পরিচয়পত্রের সাথে টিকেটের উপরে মুদ্রিত যাত্রীর তথ্য না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকেট ভ্রমণ-এর দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাত্রীরা ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন/পাসপোর্ট-এর মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ের সিস্টেমে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে। দেশের বিভাগীয় শহরের রেল স্টেশন ও আন্তঃনগর ট্রেনের প্রারম্ভিক স্টেশনসমূহে সর্বসাধারণের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য একটি করে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে।
রেল POS (Point of Sales) মেশিন কিভাবে কাজ করে? বিনা টিকেটে রেলভ্রমণ প্রতিরোধ, রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও চেকিং কালে ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে পেমেন্ট ও রিপোর্ট তৈরিসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে POS মেশিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০০টি POS মেশিনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে। এর মাধ্যমে একজন যাত্রীকে স্থান-কাল ভেদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনলাইন বা অফলাইনে নগদ ক্যাশ প্রদানের মাধ্যমে টিকেট ইস্যু করা সম্ভব হবে। POS মেশিনের মাধ্যমে টিটিই বা ভ্রাম্যমাণ রেল টিকেট পরীক্ষক দ্রুততম সময়ের মাধ্যমে টিকেট হস্তান্তর হয়েছে কিনা অথবা বিনা টিকেটের যাত্রী কিনা তা যাচাইপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। যাত্রী নগদ অর্থ বা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে টিকেটের ভাড়া পরিশোধ করবেন। POS মেশিনে একটি অ্যাপ ইন্সটল করা আছে যা কিনা রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেমের প্রধান ডাটাবেসের সাথে সংযুক্ত থাকবে। ফলে মেশিনটির মাধ্যমে অনলাইন ও কাউন্টার থেকে প্রদানকৃত টিকেট যাচাইকরণ করা যাবে। একইসাথে যেকোনো রুটের টিকেট খুব সহজে প্রদান করা যাবে।
POS মেশিনটি রিয়েল টাইমে টিকেটিং সিস্টেমের সাথে যুক্ত থাকবে বিধায় একটি টিকেট ইস্যু করা হলে, তৎক্ষণাৎ তা সিস্টেমের মূল ডাটাবেসে আপডেট হয়ে যাবে। ফলে রিয়েল টাইমে ট্রেনের টিকেট সংক্রান্ত যে কোনো রিপোর্ট টিটিই বা ভ্রাম্যমাণ টিকেট পরীক্ষকগণ ডাউনলোড করে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
POS মেশিন ব্যবহারের সুবিধা কি? POS মেশিনের মাধ্যমে স্থান-কাল ভেদে খুব সহজে আসল বা জাল টিকেট যাচাই করা যাবে।POS মেশিনের মাধ্যমে বিনা টিকেটের যাত্রীদের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে জরিমানা হিসাব করতঃ টিকেট ইস্যু করা সম্ভব হবে। POS মেশিনের মাধ্যমে টিটিই এবং সংশ্লিষ্টরা অ্যাডমিন প্যানেল থেকে দ্রুত টিকেট বিক্রির বিবরণীসহ হিসাব প্রণয়ন করতে পারবেন। POS মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমে বিনা টিকেটের যাত্রী, জরিমানা ও ভাড়ার হিসাবের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। POS মেশিনে জিপিএস (Global Positioning System) থাকায় টিটিই বা সংশ্লিষ্টদের কর্মদক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনুযায়ী POS মেশিনের মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইন লেনদেনের মাধ্যমে টিকেটের অর্থ প্রদান করা যাবে। বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য “স্মার্ট বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে-কে ডিজিটালাইডজ করার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ POS মেশিন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট মূল্য ২০২৩ । রেলের স্ট্যান্ডিং টিকিটের মূল্য কত টাকা?