কাজী অফিসে যেভাবে বিয়ে করবেন – প্রথমেই আপনাকে দেখতে হবে আপনার কিংবা যাকে বিয়ে করবেন অর্থাৎ বর/কনে দুই জনের বয়স কি বিয়ের জন্য আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোটা পার হয়েছে। বাংলাদেশের আইনে ছেলে মেয়ে উভয়ের বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট বয়স নির্ধারিত আছে। বিয়ের বয়স অবশ্যই মেয়ের বেলায় আঠারো ও ছেলের ক্ষেত্রে একুশ বৎসর হতে হবে। মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন ফি সংশোধন ২০২৩ । বিয়ে ও ডিভোর্স খরচ বেড়ে গেল

বিয়ে করতে যা লাগবে – আপনার বয়স যে আইনে নির্ধারিত বয়সের বেশি বা সমান হয়েছে তার প্রমাণ কি? হ্যাঁ প্রমাণ হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র যদি থাকে তা কাজীর কাছে নিয়ে যেতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র যদি না থাকে তবে এসএসসি পাশের সনদ কিংবা জন্মনিবন্ধন পত্র সাথে নিয়ে গেলেই হবে। আর ছেলে/মেয়ে দুইজনের দুই কপি করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে। বিয়ে তো করবেন! সাক্ষী ছাড়া কি বিয়ে হবে? নাহ সাক্ষী লাগবে অবশ্যই। বিয়ের জন্য প্রাপ্ত বয়স্ক ২ জন পুরুষ অথবা ১ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা সাক্ষী থাকতে হবে। কাবিন নামা উত্তোলন ফি ২০২৩ । কাবিননামা হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে কি করবেন?

কোথায় বিয়ে করবেন – যেকোনো কাজী অফিসে আপনি বিয়ে করতে পারেন। সাধারণত যেকোনো ওয়ার্ড, পৌরসভায় কাজী অফিস থাকেই। আপনি এসব কাজী অফিসে আপনার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং সাক্ষী নিয়ে গেলেই কাজী আপনার বিয়ে পড়াবে। আর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এক্ষেত্রে নিজ নিজ ধর্ম মতে বিয়ে করতে পারবেন এবং নোটারী পাবলিকের (সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছে গিয়ে সার্টিফিকেট নিয়ে বিয়ের নিবন্ধন করতে পারবেন। এছাড়া যারা ভিন্ন ধর্মে বিয়ে করতে চান তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ আইন। এক্ষেত্রে এক পক্ষ হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধর্মের হলেও, ধর্ম পরিবর্তন না করেই বিয়ে করা সম্ভব ৷

বিবাহ রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে / মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রীকরণ) আইন, ১ঌ৭৪ । বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি সংশোধন

বিবাহ রেজিষ্ট্রীকরণ- অন্য যে কোন আইন, প্রথা বা রীতিতে যে কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও মুসলিম আইন অনুযায়ী অনুষ্ঠিত প্রত্যেক বিবাহ এই আইনের বিধানাবলী অনুযায়ী রেজিষ্ট্রী করতে হবে।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯ PDF Download

নিকাহ নিবন্ধক – এই আইনের অধীন বিবাহসমূহ রেজিষ্ট্রীকরণের উদ্দেশ্যে সরকার যেরূপ বিধিনির্দিষ্ট করিতে পারেন সেরূপ এলাকার জন্য যেরূপ প্রয়োজনীয় গণ্য করিতে পারে সেরূপ সংখ্যক নিকাহ নিবন্ধক বলিয়া অভিহিত ব্যক্তিকে অনুজ্ঞাপত্র মঞ্জুর করিবেন। তবে শর্ত থাকে যে অনধিক একজন নিকাহ নিবন্ধক যে কোন একটি এলাকার জন্য অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত হইবে। আইনটি ডাউনলোড করুন

বিবাহ রেজিস্ট্রি খরচ কত? বিয়ে করতে কত টাকা লাগে?

  1. কাবিন নামার খরচ যেকোনো বিয়ের ক্ষেত্রে একই।
  2. মুসলিম বিয়ের ক্ষেত্রে একজন বিয়ে রেজিস্ট্রার দেনমোহরের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে একটি বিয়ের রেজিস্ট্রেশনের ফি নির্ধারণ করে থাকেন।
  3. ধার্যকৃত দেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১৪ টাকা রেজিস্ট্রেশন ফি যা ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রযোজ্য।
  4. তবে রেজিস্ট্রেশন ফি এর পরিমাণ ২০০ টাকার কম হবে না ৫ লক্ষ টাকার পরবর্তী প্রতি লাখের ক্ষেত্রে।
  5. যেমন : কারো বিয়ের দেনমোহর ১০,০০,০০০ টাকা হলে ফি হবে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ১৪ টাকা হাজার হিসাবে ৭০০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি লাগের জন্য ২০০ টাকা হারে ১০০০ টাকা তাহলে মোট কাজী ফি ৮০০০ টাকা এবং রেজিস্ট্রি ফি ১০০০ টাকা সহ ৯০০০ টাকা ব্যয় করতে হবে।
  6. উল্লেখ্য রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের। সরকার সময়ে সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই ফি পরিবর্তন ও ধার্য করে থাকে।

কোর্ট ম্যারেজ বলতে কি বুঝায়?

কোর্ট ম্যারেজ –দুই জনের সম্পর্কের মাঝে যখন অনিশ্চয়তা আসে তখন অনেকেই মনে করেন কোর্ট ম্যারেজ করবেন, চলে যান কোর্টে! আসলে কোর্টে কোর্ট ম্যারেজ হয়না। কোর্টে আপনি যাবেন ঠিক তবে কেবল আপনার কাজীর কাছে করা বিয়ের আইনি নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে। এক্ষেত্রে আগেই আপনাকে কাজীর কাছে রেজিস্ট্রি কাবিনমুলে বিয়ে করে, কোন নোটারী পাবলিকের (সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছে গিয়ে আপনারা প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন এই মর্মে ১০০ বা ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই করে রাখতে হবে। এই হলফ নামাই বিয়ের পর নানান সমস্যার ক্ষেত্রে আপনাদের রক্ষা কবজ হবে।

সূত্র: ডাউনলোড

মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন ফি সংশোধন ২০২৩ । বিয়ে ও ডিভোর্স খরচ কি বেড়ে গেল?