সূচীপত্র
অন্যের জমি দখল করে প্রচার করলে তা আদালতে প্রমানিত হলে ৭ বছরের জেল হবে – নতুন ভূমি আইনের ৪ ধারায় মামলা ২০২৪
আরজি লেখার নিয়ম কি? আরজি বলতে বুঝায় মামলার বাদী কতৃক দাখিলকৃত একটি ডকুমেন্ট যা আদালতে দাখিলের মাধ্যমে মামলা দায়ের করা হয়। দেওয়ানী কার্যবিধি, ১৯০৮ এর আদেশ ৬ আরজি সম্পর্কে আলোচনা করেছে। উক্ত আদেশ অনুসারে আরজিতে যে সব বিষয় উল্লেখ করতে হবে তা হল-
- আদালতের নাম
- বাদীর ঠিকানা ও পরিচয়
- বিবাদীর পরিচয় ও ঠিকানা
- বাদী বা বিবাদী নাবালক, প্রতিবন্ধী হলে সে সম্পর্কে বিবৃতি
- আদালতের এখতিয়ার ও বাদীর প্রতিকার
- দাবীর যে অংশ গ্রহণ বা প্রত্যাহার করা হয়েছে
- মামলা দায়েরের কারণসমূহ
- মামলার বিষয়বস্তুর মূল্যমান
এছাড়া আরও অন্যান্য বিষয় যেমন দাবীকৃত অর্থের পরিমাণ, স্থাবর সম্পত্তির বিবরণ, প্রতিনিধিত্ব এর মামলার ক্ষেত্রে বাদীর স্বার্থ, মামলায় বিবাদীর স্বার্থ, তামাদি আইন হতে অব্যাহতির কারণ, দাবীকৃত প্রতিকার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
জমি নিয়ে ভূমি অফিসে কি মামলা করা যায়? হ্যাঁ। মিছ কেইস, বিবিধ মামলা দায়ের করা যায়। একটি সাদা কাগজে আপনার জমির এলাকার নিকটস্থ সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর কি ধরণের প্রতিকার পেতে আগ্রহী তা বিস্তারিতভাবে লিখতে হবে। এছাড়া বিবাদীর নাম, বিবাদীর নামে কোন খতিয়ান সৃজিত হয়ে থাকলে তার বিবরণ এবং নিজের স্বত্ব কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার বিবরণ থাকতে হবে। নামজারি আবেদনের মতো ২০/- (বিশ) টাকা কোর্ট ফি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। আবেদনে উল্লিখিত যুক্তির স্বপক্ষে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
নতুন আইনে জমি সংক্রান্ত মামলা কি থানায় করা যাবে? / হ্যাঁ। নিকটস্থ থানায় ফৌজদারী বিধি মোতাবেক মামলা করা যাবে।
নতু আইনে ভূমি মামলা কোথায় করতে হবে? নতুন ভূমি আইনে প্রতিটি অপরাধ ‘আমলযোগ্য’ (cognizable) করা হয়েছে (ধারা-১৯)। ফলে বিচারপ্রার্থীরা এখন থেকে এসব মামলা থানাতেই দায়ের করতে পারবেন। ভূমিসংক্রান্ত এসব অপরাধের দায়ে আসামিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারবে পুলিশ।
- নতুন ভূমি আইন ধারা ১৯। (১) এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ, আমলযোগ্য (cognizable), ধারা ৪ ও ৫ এ বর্ণিত অপরাধ অ-জামিনযোগ্য (non-bailable), অন্যান্য ধারায় বর্ণিত অপরাধ জামিনযোগ্য এবং আপোষযোগ্য (compoundable) হইবে।
- (২) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক বিচার্য হইবে।
- (৩) এই আইনের অধীন অপরাধের বিচার মামলা প্রাপ্তির তারিখ হইতে ১৮০ (একশত আশি) দিনের মধ্যে সমাপ্ত করিতে হইবে।
- (৪) এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, এই আইনের অধীন অপরাধের বিচার ও আপিলের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩
ভূমি প্রতারণা সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড ২০২৪ । ভূমি আইনের চার ধারায় কি আছে?
- (১) ভূমি হস্তান্তর, জরিপ, রেকর্ড হালনাগাদকরণ বা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নিম্নবর্ণিত কোনো কার্য ভূমি প্রতারণা সংক্রান্ত অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে, যথা:-
- (ক) অন্যের মালিকানাধীন ভূমি স্বীয় মালিকানাধীন ভূমি হিসাবে প্রচার করা;
- (খ) তথ্য গোপন করিয়া কোনো ভূমি, সম্পূর্ণ বা উহার অংশবিশেষ, কোনো ব্যক্তি বরাবর হস্তান্তর বা সমর্পণ করা:
- (গ) স্বীয় মালিকানাধীন ভূমির অতিরিক্ত ভূমি বা অন্যের মালিকানাধীন ভূমি, তদ্কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হইয়া, কোনো ব্যক্তি বরাবর হস্তান্তর বা সমর্পণ করা;
- (ঘ) কোনো ব্যক্তি অপর কোনো ব্যক্তি বলিয়া মিথ্যা পরিচয় প্রদান করিয়া বা জ্ঞাতসারে এক ব্যক্তিকে অপর ব্যক্তিরূপে প্রতিস্থাপিত করিয়া কোনো ভূমি সম্পূর্ণ বা উহার অংশবিশেষ হস্তান্তর বা সমর্পণ করা;
- (ঙ) মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনো দলিল স্বাক্ষর বা সম্পাদন করা;
- (চ) কর্তৃপক্ষের নিকট মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করা; এবং
- (ছ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোনো কার্য সম্পাদন।
- (২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কোনো অপরাধ সংঘটন করিলে তজ্জন্য তিনি অনধিক ৭(সাত) বৎসর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।
অন্যের জমি দখলের শাস্তি কি জানেন?
অন্যের জমি নিজের দখলে রাখা, ভুয়া বা মিথ্যা দলিল তৈরি এবং নিজ মালিকানার বাইরে অন্য কোনো জমির অংশবিশেষ উল্লেখ করে দলিল হস্তান্তরে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন জারি করা হয়েছে। ভূমি প্রতারণা সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ড ২০২৩ অনুসারে বিচার কার্য পরিচালনা হয়ে বিবাধী কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।
মিস কেইস কখন করতে হয়?
মিছ্ (বিবিধ) মামলা সম্পর্কে জানুনরাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ এর ১৫০ ধারার ক্ষমতাবলে রাজস্ব অফিসার অর্থাৎ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ধারা-১১৬, ১১৭ ও ১৪৩ এর দ্বারা নামজারি/জমাখারিজ/জমাএকত্রিকরণ-এর যে আদেশ দিয়ে থাকেন তা উপযুক্ত প্রমাণাদির সাপেক্ষে রিভিউ বা পুনর্বিবেচনারও অধিকার রাখেন। উক্ত ১৫০ ধারার আওতায় যে সব কারণে বিবিধ মামলা দায়ের করা হয় সেগুলি হল – নামজারি মামলা দায়েরের ফলে জমির মালিকের নামে সৃষ্ট খতিয়ানে কোন প্রকার ভুল হয়ে থাকলে এবং উক্ত ভুল সংশোধনের ক্ষেত্রে অন্য কোন নামজারি মামলার সম্পৃক্ততা থাকলে এক্ষেত্রে মিছ্ বা বিবিধ মামলা দায়েরের আবেদন করতে হয়। উদাহরণসরূপ- কোন নামজারি খতিয়ানে দখল অনুযায়ী খতিয়ান না হয়ে থাকলে, জমির পরিমাণ কম-বেশি হলে ইত্যাদি; বিএস খতিয়ানে কোনরূপ করণিক ভুল থাকলে বিবিধ মামলা দায়েরের মাধ্যমে করণিক ভুল সংশোধন করা যায়; কোন ব্যক্তি কোন জমির মালিকানা লাভ করলে প্রার্থিত জমিতে পূর্বে অপর কোন ব্যক্তি নামজারি করিয়ে থাকলে এবং এই কারণে জমির স্বল্পতা পরিলক্ষিত হলে প্রথমে উক্ত নামজারি খতিয়ান বাতিল বা সংশোধন এবং তারপর নিজ নামে নামজারিকরণের উদ্দেশ্যে প্রথমে বিবিধ মামলা দায়ের করতে হয়।
https://reportbd.net/%e0%a6%ad%e0%a7%82%e0%a6%ae%e0%a6%bf-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%86%e0%a6%87%e0%a6%a8-%e0%a7%a8%e0%a7%a6%e0%a7%a8%e0%a7%a9-%e0%a5%a4-%e0%a6%9c%e0%a6%ae/
ভূমি প্রতিরোধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ৪ ও ৫ ধারায় বর্তমানে মামলা দায়ের করা যাবে কি?
মামলা কোথায় করতে হবে?
নিকটস্থ থানায় মামলা করতে পারবেন।