সূচীপত্র
বাংলাদেশ সরকার দেশের মানুষকে ১০০% বিদ্যুতায়নের আওতায় আনতে চায়। সেই লক্ষ্যে ঘরে বসে অনলাইনে পল্লী বিদ্যুতের মিটারের আবেদন করার সুযোগ দিয়েছে সরকার।
আপনার বাসা বাড়িতে যদি বিদ্যুৎ না এসে থাকে অথবা অন্য কোন কারনে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন হয় তবে আপনি খুব সহজে ঘরে বসেই অনলাইনে পল্লী বিদ্যুতের নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারেন। সাধারণত আবেদন করার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন সংযোগ প্রদান করা হয়। সুতরাং যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহকারে আবেদন করতে পারলে তৃতীয় কোন পক্ষ ছাড়াই বৈধ ভাবে অতি দ্রুত সংযোগ পাওয়া যায়।
আপনি যদি পল্লী বিদ্যুতের নতুন মিটারের প্রত্যাশী হয়ে থাকেন তবে জেনে নিন অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন করার সহজ নিয়ম।
আজ এক নজরে জানবোঃ
– পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটার আবেদন করার সাধারণ শর্ত
– আবেদন করতে যা যা লাগবে
– পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটার আবেদন করার নিয়ম
প্রথমেই জানি পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটার আবেদন করার সাধারণ শর্ত
– আবেদন করার সময় আবেদনকারীর ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) এবং যে স্থানে আপনি সংযোগ নিতে চাচ্ছেন ঐ স্থানের খারিজ Scan Copy। যেহেতু আপনি অনলাইনে আবেদন করবেন তাই অবশ্যই Scan Copy লাগবে।
– আপনার সংযোগ স্থল হতে Service Drop বা নিকটস্থ বিদ্যতের খুঁটির দুরত্ব সর্বোচ্চ ১৩০ ফুট হওয়া। এই শর্তটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুরত্ব বেশি হলে অথবা ভুল তথ্য প্রদান করলে যথাসময়ে সুযোগ পাবেন না।
– প্রয়োজনীয় লোড হিসাব করা। বাসার মোট লোড ৮০ কিলোওয়াটের বেশি হলে HT সংযোগের জন্য আবেদন করতে হবে এবং তখন HT সংযোগের নিয়মকানুন বা শর্ত প্রযোজ্য হবে।
– আবেদন ফি, মেম্বারশিপ জামানত এবং নিরাপত্তা জামানতের পরিমান সহ অনন্যা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পরবর্তী তে SMS এর মাধ্যমে আপনাকে জানানো হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটার আবেদন করতে কি কি লাগবে?
– আবেদনকারীর নাম ও আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর
-আবেদনকারীর NID বা জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর
– আবেদনকারীর স্থায়ী ঠিকানা
– সংযোগস্থলের ঠিকানা, মালিকানার প্রমান স্বরূপ তথ্য
– সবচেয়ে নিকটস্থ বিদ্যুৎ খুঁটির দুরত্ব
– বিশেষ ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার সনদ
– বাড়ির লোড নির্ণয়। এক্ষেত্রে বাসা বাড়ির রুম সংখ্যা বিবেচনা করে লাইট, ফ্যান, এসি, পানির মটর, ফ্রিজ ইত্যাদির সংখ্যা আগে নির্ণয় করুন এরপর তাদের ওয়াট। নিজে না পারলে প্রয়োজনে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির সাহায্য নিন।
– বাসার হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিতের জন্য গ্রাউন্ড রডের Scan Copy।
এবার আসুন জানি পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন করার নিয়ম।
ইন্টারনেট সংযোগ সম্বলিত স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার থাকলেই এবং উপরোক্ত কাগজপত্র হাতের নাগালে থাকলে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে আবেদন করতে পারবেন। মোবাইল/ কম্পিউটার না থাকলে বা এসবে পারদর্শী না হলে নিকটস্থ কম্পিউটার দোকানির সাহায্য নিয়ে আবেদন করতে পারেন। এ ধাপে যেসকল কাগজপত্রের Scan Copy লাগবে তার Picture Size অনুযায়ী Crop বা কেটে নিন তাহলে আবেদন প্রক্রিয়া সহজতর হবে।
সাইজঃ
– জাতীয় পরিচয়পত্র ৬০০*৪৭৫ পিক্সেল এবং সর্বোচ্চ ৩০০ কিলোবাইট
– ছবি ৩০০* ৩০০ পিক্সেল এবং সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোবাইট
– এবং জমির খারিজ, প্রযোজ্যক্ষেত্রে উত্তরাধিকার সনদের কপির সাইজ ৭০০ কিলোবাইট
এবার আবেদন ফরম আবেদন করার পালা। এজন্য মোবাইল বা কম্পিউটারের যেকোন একটি Browser Open করুন এবং ভিজিট করুন www.rebpbs.com।
আবেদন কালে যে সকল বিষয় লক্ষ্য রাখবেন
১. আবেদন ফরমে লাল রংয়ের (*) চিন্হিত ঘরগুলো আবশ্যিক ভাবে পূরণীয়।
২. আপনার বাসা বাড়ি যদি একক ইউনিট হয় তবে ট্যারিফ হিসেবে এলটি- এ (আবাসিক) সিলেক্ট করুন।
৩. আপনার বাসা বাড়ি/ ফ্ল্যাট যদি বহুতল ভবন হয়ে থাকে তবে এমটি এ (আবাসিক) সিলেক্ট করুন।
৪. যেসকল তথ্য বাংলায় দিতে হবে তা বাংলায় লিখুন, আর যেসকল তথ্য ইংরেজিতে দিতে হবে তা ইংরেজিতে লিখুন।
৫. নম্বর এবং সংখ্যা অবশ্যই ইংরেজিতে লিখুন।
আবেদন পরবর্তী কাজঃ আবেদন সম্পূর্ণ করার সাথে সাথে Tracking Number এবং Pin Number পাবেন যা পরবর্তী ধাপের জন্য সংরক্ষণ করুন। চাইলে মোবাইলে ছবি তুলে রাখতে পারেন, প্রিন্ট করার সুযোগ থাকলে সাথে সাথে তাও করে রাখতে পারেন আর নিজের কম্পিউটার হলে সেভ করে রাখলেও চলবে পরবর্তী তে প্রিন্ট করে নিলেই হবে।
সর্বশেষ ধাপঃ
সর্বশেষ আপনাকে পল্লী বিদ্যুতের নতুন মিটারের জন্য নির্দিষ্ট পরিমান আবেদন ফি জমাদান করতে হবে। উক্ত ফি জমাদানের ২ টি পদ্ধতি রয়েছে। যথাঃ সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে সরকারি নগদ পরিশোধ করা অথবা Dutch Bangla Bank Ltd এর মোবাইল সার্ভিস Rocket এর মাধ্যমে পরিশোধ করা।
উপরোক্ত ধাপ গুলো যথাযথ অনুসরণ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদান করে ফি পরিশোধ করলে পুরো আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এবং দ্রুত নতুন সংযোগ পেয়ে যাবেন।
সূত্র: পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি