সরকারি অফিসের বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে ভ্যাট ও ট্যাক্স কর্তন করে পার্টিদের বিল পরিশোধ করতে হয় – ভ্যাট ট্যাক্স তালিকা ২০২৩-২০২৪

মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট কি?–মূল্য সংযোজন কর সংক্ষেপে মূসক, বিংশ শতাব্দীতে উদ্ভাবিত একটি আধুনিক কর যা যেকোনো ব্যবসায়ের মাধ্যমে সৃষ্ট মূল্য সংযোজনের ওপর আরোপ করা হয়ে থাকে। দেশীয় পণ্য উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয়, বিদেশী পণ্য আমদানী ও রপ্তানী, দেশাভ্যন্তরে সেবা বা পরিষেবার উৎপাদন, বিপণন ও বিক্রয় ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে মূল্য রপ্তানী কর আরোপযোগ্য। এই কর উৎপাদন থেকে খুচরা বিক্রয় পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে আরোপ ও আদায় করা হলেও এর দায়ভার চূড়ান্তভাবে কেবল পণ্য বা সেবার ভোক্তাকে বহন করতে হয়। মূসক আরোপের মাধ্যমে আবগারী শুল্ক, বিক্রয় কর ইত্যাদির প্রয়োজনীয়তা দূর হয়েছে।

করযোগ্য পণ্য সরবরাহ ও সেবা প্রদানের প্রত্যেক পর্যায়ে অর্জিত মূল্য সংযোজনের (Added Value) উপর কর আরোপ ও আদায় করা হয় বিধায় মূসক একটি হিসাব ভিওিক এবং করের পৌনঃপুনিকতা মুক্ত ব্যবস্হা। এ কর ব্যবস্থা প্রধানত এক হার বিশিষ্ট (single rated)। করযোগ্য পণ্য বা সেবা সরবরাহের প্রতিটি স্তরে প্রকৃত মূল্য সংযোজনের উপর কর আদায় নিশ্চিতকল্পে এ কর ব্যবস্হায় ভিওিমূল্য হিসবে ইনভয়েস ভিওিক বিনিময় মূল্য Transaction price তথা বাজারমূল্যকে ব্যবহার করা হয়। এতে ট্যারিফ মূল্য বা সংকুচিত ভিত্তিমূল্যের কোন স্বীকৃতি নেই। এ করের ভার বা বোঝা চূড়ান্তভাবে চূড়ান্ত ভোক্তা বহন করে বিধায় একে ভোক্তাকর ব্যবস্থা বলা হয়। এ কর ব্যবস্থায় ছোট ব্যবসায়ীদের করের আওতামুক্ত রাখা হয় অথবা টার্নওভার কর নামে অতি সামান্য কর হারের অধীন করা হয়।

উৎসে কর কি? জনগণের কাছ থেকে সারা বছর ধরে কর নিয়ে দেশের প্রয়োজনে ব্যয় করে থাকে। আমরা সাধারনত বছর শেষে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আয় হিসেব করে সরকারকে আয়কর দিয়ে থাকি। কিন্তু সরকারকে সারা বছর ধরে বিভিন্ন খরচ করতে হয়। যেমন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, ঋণের কিস্তি এবং সুদসহ বিভিন্ন খরচ। এখন সরকার যদি বছর কখন শেষ হবে এবং তারপর জনগণের কাছ থেকে আয়কর বাবদ টাকা পাবে সেই আশাতে বসে থাকে তাহলে সরকারের সকল কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই সরকার যাতে সারা বছর ধরে দেশ পরিচালনা করতে পারে সে জন্য বিভিন্ন উপায়ে জনগণের কাছ থেকে কর নিয়ে থাকে। যখন কোন আয় হবে যেখানে হবে সেখানেই টাকা পরিশোধের সময় নির্দিষ্ট হারে কর কেটে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। যেহেতু আয়ের উৎস যেখানে এবং আয় পরিশোধের সময় এই কর কেটে রাখা হয় তাই এই কর উৎসে কর হিসেবে পরিচিত।

ভ্যাট কর্তনের হার ২০২৩-২০২৪ pdf । আয়কর ও ভ্যাট কর্তনের তালিকা ২০২২-২০২৩ ।  আয়কর ও ভ্যাট কর্তনের তালিকা ২০২১-২০২২ । উৎসে আয়কর কর্তনের হার ২০২২-২০২৩

উৎসে কর্তন করিবার পর সরকারি কোষাগারে যথাসময়ে জমা প্রদান করা না হইলে আইনের ধারা ৮৫ এর উপ-ধারা (১ক) মোতাবেক উৎসে কর্তনকারী ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনার ২৫,০০০(পচিঁশ) হাজার টাকা মাত্র) ব্যক্তিগত জরিমানা আরোপ করিতে পারিবেন। উৎসে মূসক কর্তন ও জমাদানে ব্যর্থতার জন্য পন্য বা সেবা সরবরাহকারী এবং গ্রহণকারী উভয়ে সমানভাবে দায়ী হইবেন। নিচের ভ্যাট ও কর  তালিকা ২০২৩-২৪ পিডিএফ ডাউনলোড

ভ্যাট ও ট্যাক্স কর্তনের হার ২০২৩-২০২৪

ভ্যাট কর্তন হার ২০২৩-২৪ । কোন খাতে কত ভ্যাট কর্তন করবেন দেখে নিন

কোন খাতে কত ভ্যাট ২০২৩-২০২৪ । ৩২৫৮ সিরিজের কোডটিতে অবশ্যই ১০% ভ্যাট কর্তন করতে হবে

  1. ৩২১১১০২- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ৭.৫%
  2. ৩২১১১০৪ আনুষঙ্গিক কর্মচারী/প্রতিষ্ঠান ১৫%
  3. ৩২১১১০৬ আপ্যায়ন ব্যায় ১৫%
  4. ৩২১১১০৯ সাকুল্য বেতন (সরকারী কর্মচারী ব্যতীত) 00%
  5. ৩২১১১১১ প্রশিক্ষণ/সেমিনার/কনফারেন্স ব্যয় ১৫%
  6. ৩২১১১১৩ বিদ্যুৎ 00%
  7. ৩২১১১১৭  ইন্টারনেট/ফ্যাক্স/টেলেক্স 0৫ %
  8. ৩২১১১২৫ প্রচার ও বিজ্ঞাপন ১৫ %
  9. ৩২১১১২৭ বইপত্র সাময়িকী ৭.৫%
  10. ৩২১১১২৮ প্রকাশনা ১০ %
  11. ৩২১১১২৯ অফিস ভবন ভাড়া ১৫%
  12. ৩২৩১৩০১ প্রশিক্ষণ ব্যয় ১৫%
  13. ৩২৪৩১০১ পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট ৭.৫%
  14. ৩২৫২১০৪ পথ্য সামগ্রী ৭.৫%
  15. ৩২৫২১০৮ স্বাস্থ্যবিধান সামগ্রী ৭.৫%
  16. ৩২৫৩১০৩ নিরাপত্তা সেবা (ভাড়ার ভিত্তিতে) ১৫%
  17. ৩২৫৫১০১ কম্পিউটার সামগ্রী ৭.৫%
  18. ৩২৫৫১০২ মুদ্রণ ও বাধাই ১০ %
  19. ৩২৫৫১০৪ স্ট্যাম্প ও সিল ৯.০ %
  20. ৩২৫৫১০৫ অন্যান্য মনিহারী ৭.৫%
  21. ৩২৫৬১০৩ ব্যবহার্য সামগ্রী ৭.৫%
  22. ৩২৫৭২০৬ সম্মানী 00%
  23. ৩২৫৭৩০১ অনুষ্ঠান/উৎসবাদি ১৫%
  24. ৩২৫৮১০১ মোটরযান মেরামত ১০ %
  25. ৩২৫৮১০২ আসবাবপত্র মেরামত ১০ %
  26. ৩২৫৮১০৩  কম্পিউটার মেরামত ১০%
  27. ৩২৫৮১০৪ অফিস সরঞ্জামাদি মেরামত ১০%
  28. ৩২৫৮১০৫ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি মেরামত ১০ %
  29. ৩২৫৮১০৬ আবাসিক ভবন 9.8 %
  30. ৩২৫৮১০৭ অনাবাসিক ভবন ৭.৫%
  31. ৩২৫৮১০৮ অন্যান্য ভবন ও স্থাপনা 9.8 %
  32. ৪১১২২০১ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সরঞ্জামাদি ১৫%
  33. ৪১১২২০২ কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক ক্রয় 9.0 %
  34. ৪১১২২০৪ টেলিযোগাযোগ সামগ্রী ১০%
  35. ৪১১২৩০৩ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ৭.৫%
  36. ৪১১২৩০৬ গবেষণাগার সরঞ্জামাদি 9.8 %
  37. ৪১১২৩১০ অফিস সরঞ্জামাদি ৭.৫%
  38. ৪১১২৩১৪ আসবাবপত্র ক্রয় ১৫%
  39. ৪১১২৩১৬ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ১০%
  40. ৪১১৩৩০১ কম্পিউটার সফটওয়্যার 0৫%

কোন কোন খাতে কর কর্তন করতে হয়?

কোন কোন খাতে উৎসে কর কর্তন করতে হবে তা আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-তে বিশদভাবে বলা হয়েছে। কোন খাতে কতো টাকার উপর কি হারে কর কর্তন করতে হবে তা ধারাসহ উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি যদি ঐ খাত থেকে টাকা উপার্জন করে থাকেন তাহলে উৎসে নির্দিষ্ট হারে কর কর্তন করে বাকিটা আপনার ব্যাংক হিসেবে পাটিয়ে দিবে। অথবা অ্যাকাউন্ট পেয়ি চেক এর মাধ্যমে পরিশোধ করবেন। আপনার আয় থেকে ঠিক হারে কর কেটেছে কি না? বেশি কেটেছে কিনা? এই ধরনের প্রশ্ন প্রায়ই শুনে থাকি। এ ক্ষেত্রে আপনি যে খাতে আয় করেছেন সেই খাতে উৎসে করের হার কতো তা জেনে নিতে পারেন। তাহলে এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন না। প্রতি বছর কোন খাতে উৎসে কর কতো তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রকাশ করে থাকে। এটা বিশাল একটি তালিকা। সবচেয়ে ভালো হয় সেই তালিকাটি প্রিন্ট করে রেখে দিলে। যখনই দরকার পড়বে তখনই দেখে নিতে পারবেন। উৎসে কর্তনকৃত কর কিভাবে পরিশোধ করবেন? কর্তনকৃত কর আপনি বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোন শাখায় জমা দিতে পারবেন। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা থাকবে না সেখানে সোনালি ব্যাংক লিমিটেড এর যেকোন শাখায় জমা দিতে পারবেন। পে-অর্ডার করে চালানের মাধ্যমে আপনার কর্তনকৃত কর জমা দিতে হবে। প্রতিটি চালান তিন কপি করে করতে হবে। কত টাকা জমা দিচ্ছেন এবং প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা এবং বিবরণসহ চালানে উল্লেখ করতে হবে। চালান জমা দেওয়ার পর ব্যাংকের কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে সিল দিয়ে আপনাকে ফেরত দিবে। চালানে অবশ্যই কোড নামউৎসে কর্তনকৃত কর জমা দেওয়ার সময়সীমা কর্তনকৃত কর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। তা না হলে মাশুল গুনতে হয়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কর্তনকৃত কর জমা দেয়া উত্তম।

ভ্যাট কর্তন হার ২০২৩-২৪ । কোন খাতে কত ভ্যাট কর্তন করবেন দেখে নিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *