আজকের খবর ২০২৫

৯ম পে স্কেল ও ৫০% মহার্ঘ ভাতা দাবী ২০২৫ । ১৫% প্রনোদনায় কর্মচারীরা কি প্রতারণার শিকার?

সূচীপত্র

সরকারি কর্মচারীগণ ১৫% প্রহশনের প্রনোদনা বিশেষ সুবিধা ও সরকারি কর্মচারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিল চায়-বিশেষ সুবিধার পরিবর্তে ৫০% মহার্ঘ ভাতা চায় এবং নতুন পে স্কেল চায়– ৯ম পে স্কেল ও ৫০% মহার্ঘ ভাতা দাবী ২০২৫

অধ্যাদেশ বাতিলের ঘোষণা চায়? হ্যাঁ।–“সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” বাতিলের দাবি আন্দোলনের মূল ভিত্তি। এই অধ্যাদেশটি “কালো আইন” হিসেবে আখ্যায়িত, কর্মচারীদের চাকরি নিরাপত্তা রোধ ও ক্ষমতার অপব্যবহার ঘটাবে বলে মনে করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শানো নোটিশেই বরখাস্তের সুযোগ থাকবে — অ্যানুলো না হলে কঠোর কর্মসূচি আয়োজনের হুমকি দেয়া হয়েছে।

আল্টিমেটাম ও কঠোর কর্মসূচি আসবে? হ্যাঁ।  আন্দোলনকারীরা সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অধ্যাদেশ বাতিল না করলে রোববার থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় ব্লকেড–এর ঘোষণা দেন।  তারা রবিবার থেকে সচিবালয় ছাড়াও বিভিন্ন দপ্তরে কঠোর কর্মসূচি চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন ও ৭ দফা থেকে আরও পদোন্নতি, গ্রেড উন্নয়ন, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি দাবি তুলে ধরা হয়েছে।  ৫০% Dearness Allowance (DA) দাবি ওঠেছে, কারণ ভর্তুকিতে বেড়েছে জীবনযাত্রার ব্যয়।

আজকের আলোচনায় কি উঠে এসে?  কর্মচারী নীতি-নির্ধারকদের সক্ষমতা নিয়ে তাদের অসন্তোষ, বিশেষ করে যারা অধ্যাদেশ পর্যালোচনার দায়িত্বে— দাবি রয়েছে সরাসরি আলোচনা ও স্বচ্ছতায়।  ভূমি সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও আইন উপদেষ্টাকে আলোচনায় টানা হয়েছে; এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত বা ফলাফল নেই।  বিক্ষোভ, মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি, স্মারকলিপি, এবং এক ঘণ্টার কর্মবিরতির মতো একাধিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্দোলন চালানো হচ্ছে।  বিশুদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণভাবে চলতে হবে—সেবা ব্যাহত না করে কর্মবিরতি থাকবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে ।

সরকারি কর্মচারীরা ৫০% মহার্ঘ ভাতা (DA) চাইছেন মূলত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি মোকাবিলা করতে। সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানি, চিকিৎসা, যাতায়াত ইত্যাদি খাতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে।  বর্তমান বেতনে সংসার চালানো অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বেতন কাঠামো পুরনো হয়ে গিয়েছে? হ্যাঁ।  সর্বশেষ পে-স্কেল ঘোষিত হয়েছিল ২০১৫ সালে। এর মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ও ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে, কিন্তু নতুন পে-স্কেল আসেনি। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ৫০% মহার্ঘ ভাতার দাবি উঠেছে। অনেক সরকারি কর্মচারী মনে করছেন, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বিচার বিভাগ, সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য বিশেষ শ্রেণি বিভিন্ন ধরনের সুবিধা বেশি পাচ্ছেন। সবার সঙ্গে সমতা রাখতে ও বেতন-ভাতা যেন বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ থাকে, সে জন্য তারা মহার্ঘ ভাতা চাইছেন। মূল্যবৃদ্ধি জনিত কারণে সঞ্চয়ের ক্ষমতা কমেছে, অনেকের ঋণ বেড়েছে, বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনমানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

Caption: Protest Movement

প্রতিবাদ কর্মসূচীর সারসংক্ষেপ ২০২৫ । উপস্থিতি কম হওয়ায় সাধারণ সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দু:খ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন

  1. “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” বাতিল
  2. ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম অনুসারে কঠোর কর্মসূচি ও আগামী কর্মসূচির ঘোষণা।
  3. নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন, ৫০% DA, ৭ দফা সহ কর্মভাতা ও পদোন্নতির দাবি।
  4. সরকার ও উপদেশক পর্যায়ের সঙ্গে সরাসরি আলাপ-আলোচনা ও স্বচ্ছতা।
  5. শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি, যেখানে জরুরি সেবা অব্যাহত থাকবে।
  6. আন্দোলন এখন পর্যন্ত চলছে, বিপুল জনসমর্থন ও চাপ তৈরির মাধ্যমে তাদের দাবি বাস্তবায়ন করতে চাওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় অংশে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে, সেটা সামনে আসছে।

কেন সরকারি কর্মচারিগণ সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিল চায়?

সরকারি কর্মচারিগণ “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫” বাতিল চায় মূলত এটি তাদের চাকরির নিরাপত্তা, মর্যাদা এবং ন্যায়বিচারের অধিকারকে প্রতিবন্ধকতার মুখে ফেলবে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। চাকরিচ্যুতির ঝুঁকি বেড়ে যাবে- এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী, “কারণ দর্শানো নোটিশ” ছাড়াই একজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা যাবে, বিশেষ করে চার ধরনের অভিযোগে—যেমন:

  • অসদাচরণ
  • দায়িত্বে অবহেলা
  • দুর্নীতি
  • সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা

➡️ এর ফলে, ‍যথাযথ তদন্ত ছাড়াই চাকরিচ্যুতি সম্ভব, যা প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতা বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। পূর্বে একজন কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়ার আগে একটি শুনানি, তদন্ত ও আপিলের সুযোগ ছিল। নতুন অধ্যাদেশে সেই সুযোগ খর্ব হয়ে যাচ্ছে, ফলে কর্মকর্তারা বিচার পাওয়ার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। বহু বছর চাকরির পর হঠাৎ চাকরিচ্যুতির আতঙ্ক প্রশাসনিক পরিবেশকে ভীতিকর ও চাপযুক্ত করে তুলবে। এতে প্রশাসনে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিরপেক্ষতা ও দক্ষতা কমে যেতে পারে। অধ্যাদেশটি ব্যবহৃত হতে পারে “ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ” হিসেবে—কর্মচারীদের মুখ বন্ধ রাখতে বা দমন করতে। অনেক কর্মচারীর মতে, এটি গণতান্ত্রিক ও নৈতিক শাসন ব্যবস্থার পরিপন্থী। কর্মচারীদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এই অধ্যাদেশ পাশ করা হয়েছে, যা নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণের অধিকারকে অস্বীকার করে। তারা বলছেন, এটি “জনপ্রশাসন ব্যবস্থাকে আমলাতান্ত্রিক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে”।

সারসংক্ষেপ:
সরকারি কর্মচারীরা মনে করেন, “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫”—চাকরিজীবীদের অধিকার খর্ব করেভয়ভীতির সংস্কৃতি তৈরি করে
বিচারপ্রক্রিয়াকে দুর্বল করেপ্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি হ্রাস করেএবং আইনের অপব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে
এ কারণেই তারা এই অধ্যাদেশ সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন, এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করছেন।প্রয়োজনে আমি অধ্যাদেশটির মূল ধারাগুলোর বিশ্লেষণও দিতে পারি। চাইলে জানাবেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *