আজকের খবর ২০২৫

মাইক্রো ক্রেডিট ব্যাংক ২০২৫ । চাকরি নয় ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু জন্য ঋণ দিবেন এনজিও ব্যাংক?

সূচীপত্র

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মাইক্রো ক্রেডিট কার্যক্রমকে আরও কার্যকর ও টেকসই করতে আলাদা একটি ব্যাংক গঠন এবং এ সংক্রান্ত নতুন আইন প্রণয়ন করা জরুরি মনে করছে– মাইক্রো ক্রেডিট ব্যাংক ২০২৫

এনজিও কি এখন ব্যাংক হবে? হ্যাঁ। ড. ইউনূস বলেন, মাইক্রো ক্রেডিট এখন এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে নতুনভাবে চিন্তা করা জরুরি। এটি এনজিও পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকলে ব্যাংকিং কাঠামোয় পরিণত হতে পারবে না। এজন্য এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ মাইক্রো ক্রেডিট ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সেজন্য একটি আলাদা আইন প্রণয়ন করা দরকার। এই কাজটি মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি করতে পারে বলেও তিনি মত দেন। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠান তাদের সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয় গ্রহণ করতে পারলেও বাইরের কারও কাছ থেকে আমানত নিতে পারে না। এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে হলে তাদের পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।

সামাজিক ব্যবসা কি এখন ব্যাংক হবে? হ্যাঁ। নতুন করে মাইক্রো ক্রেডিট ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার সময় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে যে এটি একটি “সামাজিক ব্যবসা ভিত্তিক ব্যাংক”। আইনে পরিষ্কারভাবে তা সংজ্ঞায়িত থাকতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, মাইক্রো ক্রেডিট ধারণার মূল ভিত্তি হচ্ছে—প্রত্যেক মানুষ একজন উদ্যোক্তা। মানুষ যেন নিজের উদ্যোগে ব্যবসা করতে পারে, তার জন্যই এই সহায়তা। সরকারকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে তরুণ-তরুণীরা বিনিয়োগের সুযোগ পাবে এবং চাকরির পেছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এমআরএর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।

মাইক্রোক্রেডিট বলতে কি বুঝায়? মাইক্রোক্রেডিট বলতে খুব অল্প পরিমাণ ঋণকে বোঝায় যা সাধারণত দরিদ্র বা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দেওয়া হয়। এই ঋণগুলো তাদের ব্যবসা শুরু বা সম্প্রসারণ করতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে, এবং সামগ্রিকভাবে তাদের জীবনযাত্রার উন্নতি করতে সাহায্য করে। মাইক্রোক্রেডিট সাধারণত ছোট আকারের ঋণ, স্বল্প মেয়াদী এবং জামানতবিহীন হয়ে থাকে। এই ঋণগুলো বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, ব্যাংক, এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রদান করা হয়। মাইক্রোক্রেডিটের মূল উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। এই ঋণগুলো তাদের স্বাবলম্বী হতে এবং দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।

তাহলে কি বদলে যাবে এনজিও’র ঋণ দান প্রক্রিয়া? না। ঋণদান প্রক্রিয়া একই হবে শুধু নাম পরিবর্তন ও কার্যপরিধি বাড়বে

সরকারকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে তরুণ-তরুণীরা বিনিয়োগের সুযোগ পাবে এবং চাকরির পেছনে না ঘুরে উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।

Caption: Micro Credit

মাইক্রোক্রেডিটের কাজ হলো দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন করা, যাদের সাধারণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া কঠিন। এটি মূলত ছোট অঙ্কের ঋণ, যা জামানত ছাড়াই দেওয়া হয়, যেন তারা নিজে আয় করতে পারে বা ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে পারে।

  1. ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান: দরিদ্র মানুষদের ব্যবসা বা পেশাগত কাজে ছোট ঋণ দেওয়া (যেমন: দোকান, সেলাই, হাঁস-মুরগির খামার, রিকশা ইত্যাদি)। 
  2. আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি: ঋণ নিয়ে মানুষ নিজেই ব্যবসা শুরু করে, চাকরির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। 
  3. জামানত ছাড়াই ঋণ সুবিধা: গরিব মানুষদের হাতে সাধারণত জামানত থাকে না, তাই তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হয়। 
  4. নারীর ক্ষমতায়ন: মাইক্রোক্রেডিটের একটি বড় লক্ষ্য হলো গ্রামীণ নারী সমাজকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করা। 
  5. দারিদ্র্য বিমোচন: আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পরিবার ও সমাজের দারিদ্র্য দূরীকরণে সহায়তা করা। 
  6. সঞ্চয় ও অর্থ ব্যবস্থাপনার শিক্ষা: অনেক মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠান সঞ্চয়ের সুযোগ দেয় এবং অর্থ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়। 
  7. উদাহরণ: রিনা বেগম একটি গরু কেনার জন্য ১৫,০০০ টাকা ঋণ নেন। গরুর দুধ বিক্রি করে তিনি মাসে ৫,০০০ টাকা আয় করছেন। কিছু টাকা কিস্তি দেন, বাকি সঞ্চয় করেন বা পরিবারের জন্য খরচ করেন। 

মাইক্রোক্রেডিট কি ব্যাংক হতে পারে?

“মাইক্রোক্রেডিট” (Microcredit) নিজে একটি ব্যাংক নয়, তবে এটি একটি আর্থিক সেবা বা ঋণ প্রক্রিয়া যা মূলত দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যারা সাধারণ ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ঋণ নিতে পারে না। তাহলে প্রশ্ন হলো মাইক্রোক্রেডিট কি ব্যাংক হতে পারে? না। তবে সরকার চাইলে পারে। মাইক্রোক্রেডিট নিজে কোনো ব্যাংক নয়, তবে মাইক্রোক্রেডিট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বা মাইক্রোফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন (MFI) একটি ব্যাংকে পরিণত হতে পারে, যদি তারা নির্দিষ্ট আর্থিক ও আইনগত শর্ত পূরণ করে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে লাইসেন্স পায়। গ্রামীণ ব্যাংক শুরু হয়েছিল একটি মাইক্রোক্রেডিট প্রকল্প হিসেবে। পরে এটি সম্পূর্ণরূপে একটি ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়েছে — বিশেষ করে দরিদ্রদের জন্য কাজ করে এমন একটি ব্যাংক।

✔️ মাইক্রোক্রেডিট = ঋণ পরিষেবা (ব্যাংক নয়)✔️ মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠান → ব্যাংকে রূপ নিতে পারে (যদি শর্ত পূরণ করে) 
   
   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *