আজকের খবর ২০২৫

উৎসে কর বিধিমালা ২০২৫ । কিছু ক্ষেত্রে কর হার বাড়ানো হয়েছে কি?

“উৎসে কর” (Source Tax) বা “উৎসে কর কর্তন” (Tax Deducted at Source – TDS) হলো এমন একটি কর ব্যবস্থা, যেখানে আয় বা লেনদেনের সময়েই নির্দিষ্ট হারে কর কেটে নেওয়া হয় এবং তা সরাসরি সরকারকে প্রদান করা হয়– উৎসে কর বিধিমালা ২০২৫

উৎসে কর কি শুরুতেই কাটা হয়? হ্যাঁ। সহজভাবে বললে উৎসে কর মানে হলো, যেই উৎস থেকে আয় হচ্ছে, সেই উৎস থেকেই আগে কর কেটে নেওয়া হয়। উদাহরণ: যদি আপনি একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং মাসে ৫০,০০০ টাকা বেতন পান, তাহলে কোম্পানি আপনার বেতনের নির্দিষ্ট অংশ (সরকারি হার অনুযায়ী) কেটে নিয়ে সরকারের কাছে জমা দেবে। এটিই উৎসে কর। ব্যাংকে আপনি ফিক্সড ডিপোজিট করলে সুদের ওপর ১০% উৎসে কর কেটে নেয়া হয় যদি সেটা নির্দিষ্ট সীমার বেশি হয়।

উৎসে করের সুবিধা কি? কর আদায় সহজ হয়। কর ফাঁকি কমে। সরকার নিয়মিত আয় পায়। উৎসে কর কোথায় কোথায় কাটা হয়? চাকরির বেতন থেকে, ব্যাংকের সুদ থেকে, বাড়িভাড়া থেকে, ঠিকাদারী বা পেশাগত সেবার ফি থেকে, কোম্পানির লভ্যাংশ, কমিশন, হোনোরারিয়াম ইত্যাদি থেকেও উৎসে কর কর্তন করা হয়।

বাজার থেকে পন্য কিনলে কি উৎসে কর কাটে? না, আপনি যখন বাজার থেকে সাধারণভাবে পণ্য (যেমন চাল, ডাল, জামাকাপড়, ইলেকট্রনিকস ইত্যাদি) কেনেন, তখন উৎসে কর (TDS) কাটা হয় না। তবে কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে উৎসে কর প্রযোজ্য হতে পারে। নিচে বিস্তারিতভাবে বলছি: ✅ সাধারণ ক্রেতা হিসেবে: যদি আপনি একজন সাধারণ ব্যক্তি বা ভোক্তা হন, এবং দোকান থেকে পণ্য কিনছেন: যেমন: মুদি দোকান, শপিং মল, বা অনলাইন শপ থেকে কিনলেন। তাহলে উৎসে কর কাটে না। তবে এই দামে ভ্যাট (VAT) থাকতে পারে, যা পণ্যের দামের সঙ্গে যোগ হয়। এটা আলাদা বিষয়।⚠️ বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে (উৎসে কর কাটতে পারে): যদি আপনি ব্যক্তি নয়, বরং একটি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা বা সরকারি সংস্থা হন, এবং বৃহৎ পরিমাণে পণ্য কিনছেন (যেমন কাঁচামাল, অফিস সরঞ্জাম, নির্মাণসামগ্রী), এবং বিক্রেতা কোনো নির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে পড়েন (যেমন নিবন্ধিত ঠিকাদার, সরবরাহকারী ইত্যাদি) তখন উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য হতে পারে। এটা সরকার নির্ধারিত হার অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কাটা হয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (NBR) জমা দেওয়া হয়।

উৎসে কর বিধিমালা ২০২৫ / উৎসে কর কি ব্যক্তি করের সাথে সমন্বয় করা যায়?

“উৎসে কর” (Utse Kor) একটি বাংলা শব্দগুচ্ছ, যার অর্থ হলো “উৎসে কর কর্তন” বা ইংরেজিতে Tax Deducted at Source (TDS)। এটি এমন এক ধরনের কর যা আয়ের উৎস থেকেই সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট কিছু অর্থ প্রদান করে, তখন সেই প্রদানকারী সংস্থা বা ব্যক্তি আইন অনুযায়ী ওই অর্থের একটি নির্দিষ্ট অংশ কর হিসেবে কেটে রেখে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। যিনি অর্থ গ্রহণ করেন, তিনি কর কর্তনের পর বাকি অর্থ পান এবং এই কর্তিত কর তার মোট করদায়ের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়।

উৎসে কর বিধিমালা ২০২৫ পিডিএফ ডাউনলোড

উৎসে কর কর্তনকারী কর্তৃপক্ষের তালিকা ২০২৫ । বাংলাদেশে উৎসে কর (TDS) কর্তনকারী কর্তৃপক্ষ বা সত্তাগুলো নির্ধারিত আইন ও বিধিমালার আওতায় কাজ করে। এদের মধ্যে কিছু প্রধান কর্তৃপক্ষের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:

  1. জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR)-উৎসে কর ব্যবস্থাপনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ।
  2. সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ- যেমন: মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, আধা-সরকারি সংস্থা ইত্যাদি।
  3. স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ-যেমন: সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ইত্যাদি।
  4. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ- যারা বিভিন্ন লেনদেনের সময় উৎসে কর কর্তন করে থাকে।
  5. বীমা কোম্পানি ও অন্যান্য নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান- যারা নির্দিষ্ট লেনদেনের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন করে।
  6. প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ- যারা বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ প্রদানের সময় উৎসে কর কর্তন করে।

উৎসে কর কর্তনকারীর দায়িত্ব কি?

যিনি অর্থ প্রদান করেন (কর্তনকারী), তার দায়িত্ব হলো সঠিকভাবে কর কর্তন করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিবরণী দাখিল করা। যিনি অর্থ গ্রহণ করেন (করদাতা), তিনি উৎসে কর্তিত করের জন্য সনদপত্র সংগ্রহ করতে পারেন এবং তার বার্ষিক আয়কর রিটার্নে এই কর্তিত করকে মোট করদায়ের বিপরীতে সমন্বয় করতে পারেন। যদি কর্তিত করের পরিমাণ তার প্রদেয় করের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে তিনি ফেরত পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। উৎসে কর কর্তনের হার, পদ্ধতি এবং অন্যান্য নিয়মাবলী আয়কর আইন ও সংশ্লিষ্ট বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত হয়। এগুলো সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে। উৎসে কর বাংলাদেশের কর ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এটি দেশের রাজস্ব সংগ্রহে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এই বিষয়ে বিস্তারিত এবং হালনাগাদ তথ্যের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) এর ওয়েবসাইট অথবা একজন কর পরামর্শকের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

কর সংগ্রহ সহজ করা: সরকারের জন্য কর সংগ্রহ প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত হয়।কর ফাঁকি রোধ করা: আয়ের শুরুতেই কর কেটে নেওয়ায় কর ফাঁকির প্রবণতা হ্রাস পায়।নিয়মিত রাজস্ব প্রবাহ নিশ্চিত করা: সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের একটি নিয়মিত প্রবাহ তৈরি হয়।
করদাতার সুবিধা: করদাতাকে বছরের শেষে একবারে বড় অঙ্কের কর পরিশোধের পরিবর্তে ধাপে ধাপে কর পরিশোধের সুযোগ করে দেয়।  
   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *