সূচীপত্র
সরকার চাপে মুখে বেশ কয়েকটি খাতে ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে- যার মধ্যে আপাতত ওষুধ, রেস্তোরাঁ ও মোবাইল খাতের ওপর বাড়তি করের খড়্গ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে-Govt. VAT NEW RATE 2025
কোন কোন পন্যে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে? চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। তাতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরেক দফা বেড়ে যেতে পারে সাধারণ মানুষের। যেমন মুঠোফোন সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির ফলে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ বাড়বে। আবার পোশাক–আশাকের দামও বাড়তে পারে ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে। বাড়তে পারে রেস্তোরাঁয় খাওয়ার খরচও। এ ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে মিষ্টি, ওষুধ, এলপি গ্যাস, ফলের রস, ড্রিংক, বিস্কুট, চশমার ফ্রেম, সিগারেটসহ নানা পণ্যের।
চাপের মুখে কোন খাতে ভ্যাট কমেছে? এনবিআর সূত্র জানায়, বিভিন্ন পণ্য ও সেবার বিপরীতে ভ্যাট বাড়ানো হলেও এখন ভ্যাট হার কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত ওষুধ, রেস্তোরাঁ ও মোবাইল খাতের ওপর বাড়তি করের খড়্গ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের ভ্যাট ইস্যুতে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আলোচনা শেষে অর্থ উপদেষ্টা ওষুধ, রেস্তোরাঁ ও মোবাইল খাতের ওপর দ্রুততার সঙ্গে ভ্যাট কমাতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এর আগে এক অধ্যাদেশ জারি করে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট হার ২.৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল। রেস্তোরাঁ ব্যবসায় এক লাফে ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয় ভ্যাট। মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করায় এর প্রভাব পড়েছিল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে।
ভ্যাট কেন আরোপ করা হয়? ভ্যাট সরকারের জন্য একটি প্রধান রাজস্ব উৎস। এই রাজস্ব দিয়ে সরকার জনকল্যাণমূলক কাজ, উন্নয়ন প্রকল্প এবং অন্যান্য সরকারি খাতে ব্যয় করে। আগে আবগারী শুল্ক, বিক্রয় কর ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পরোক্ষ কর ছিল। ভ্যাটের মাধ্যমে এই সব করকে একীভূত করা হয়েছে, যা কর সংগ্রহ ব্যবস্থাকে সহজ করেছে। ভ্যাট ব্যবস্থায় প্রতিটি পর্যায়ে কর আরোপ করা হয়, ফলে কর ফাঁকির সুযোগ কমে যায়। ভ্যাট উৎপাদন, বিতরণ এবং খুচরা বিক্রয়ের প্রতিটি পর্যায়ে আরোপ করা হয়, ফলে সম্পূর্ণ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কর আদায় করা হয়। অনেক দেশেই ভ্যাট ব্যবস্থা প্রচলিত, ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভ্যাট সম্পর্কিত বিষয়গুলো পরিচালনা করা সহজ হয়।
ভ্যাট হলো একটি পরোক্ষ কর যা পণ্য বা সেবার উপর আরোপ করা হয়। এই করের টাকা সরকার নেয় এবং জনগণের কল্যাণে ব্যয় করে।
উৎসে ভ্যাট কর্তন হলো একটি কর ব্যবস্থা যেখানে কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়ের সময়ই করের একটি নির্দিষ্ট অংশ কেটে রাখা হয়। এই কর্তিত অংশ সরাসরি সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়া হয়। উদাহরণ: ধরুন, আপনি একটি মোবাইল ফোন কিনছেন। ফোনের মূল্য ১০,০০০ টাকা এবং ভ্যাটের হার ১৫%। আপনাকে মোবাইল বিক্রেতাকে ১১,৫০০ টাকা দিতে হবে। এর মধ্যে ১০,০০০ টাকা ফোনের মূল্য এবং ১,৫০০ টাকা ভ্যাট। বিক্রেতা এই ১,৫০০ টাকা সরকারের কাছে জমা দেবে।
Caption: VAT RATE PDF
উৎসে ভ্যাট ২০২৫ । কেন উৎসে ভ্যাট কর্তন করা হয়?
- কর ফাঁকি রোধ: উৎসে ভ্যাট কর্তনের মাধ্যমে কর ফাঁকির সম্ভাবনা কমে যায়। কারণ, কর ক্রয়ের সময়ই কেটে নেওয়া হয় এবং সরাসরি সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়।
- রাজস্ব আদায় বাড়ানো: এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার দ্রুত এবং নিশ্চিতভাবে রাজস্ব আদায় করতে পারে।
- কার্যকর কর প্রশাসন: উৎসে ভ্যাট কর্তন ব্যবস্থা কর প্রশাসনকে আরও কার্যকর করে তোলে।
উৎসে ভ্যাট কর্তনের প্রক্রিয়া কি?
যখন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করে, তখন তাকে সেই পণ্য বা সেবার মূল্যের উপর নির্ধারিত হারে ভ্যাট দিতে হয়। পণ্য বা সেবা বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করে নিজে রাখে না। বরং নির্ধারিত হারে ভ্যাট কেটে রেখে বাকি টাকা ক্রেতাকে দেয়। কেটে রাখা ভ্যাট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হয়।
https://bdservicerules.info/vat-rate-chart-in-bangladesh/