সূচীপত্র
আজ আমরা জানবো হেবা দলিল কি, শর্ত সমূহ, খরচ এবং হেবা দলিল বাতিল করা যায় কি না? আর বাতিল করা গেলে তার নিয়মই বা কি? আসুন প্রথমেই জানি, হেবা দলিল কি? হেবা দলিলের শর্ত কি কি? কে কাকে সম্পত্তি হেবা করে দিতে পারবে? এবং খরচ কত এগুলো জানি।
বাংলায় ‘দান’, ইংরেজিতে ‘Gift’ এবং আরবিতে ‘হেবা’ কিছুটা সমার্থক শব্দ হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। কারণ দান বা Gift যে কাউকে করা গেলেও ‘হেবা’ শুধুমাত্র নিকটাত্মীয় কে করা যায় এবং এর রেজিষ্ট্রেশন খরচ মাত্র ১০০ টাকা। দূরবর্তী আত্নীয় কে কোন সম্পত্তি হেবা করা যায় না এবং দূরবর্তী আত্নীয়কে সম্পত্তি দানে রেজিষ্ট্রেশন খরচ সম্পত্তি মূল্যের উপর ৮%।
অন্য ভাবে বলা যায়, স্বেচ্ছায়, সুস্থ মস্তিষ্কে এবং কোন প্রতিদান ছাড়ায় কোন সম্পত্তি নিকটাত্মীয় কে দান করায় হলো হেবা।
হেবা হতে হলে ৩ টি প্রধান শর্ত রয়েছে। শর্তগুলো নিম্নরূপঃ
- ঘোষণার মাধ্যমে হতে হবে। তবে এই ঘোষণা যেমন নিজেও দিতে পারবেন তেমনি Power of Attorney নিয়োগ করেও দিতে পারবেন।
- যার বরাবর হেবা করছেন তাকে উক্ত হেবা টি গ্রহণ করতে হবে।
- Delivery of the possession অর্থাৎ হেবাকৃত সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দিতে হবে।
উপরোক্ত ৩ টি শর্ত ছাড়া হেবা হয় না।
এবার আসুন কে কাকে হেবা করতে পারবে?
- আপনি আপনার পূর্ব পুরুষ (১ম প্রজন্ম) যেমন বাবা মায়ের নামে হেবা করতে পারবেন।
- আপনি আপনার পরবর্তী ১ প্রজন্ম যেমন ছেলে মেয়ের নামে হেবা করতে পারবেন।
- আপনার পূর্ববর্তী ২য় প্রজন্ম পুরুষ যেমন দাদা দাদী, নানা নানির নামে হেবা করতে পারবেন।
- আপনি আপনার পরবর্তী ২য় প্রজন্ম পুরুষ যেমন ছেলে বা মেয়ের ঘরে নাতি নাতনির নামে হেবা করতে পারবেন।
- স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন একে অপরের নামে হেবা করতে পারবেন।
- মোট ১৪-১৫ শ্রেণীর মানুষকে হেবা করা যায়।
হেবার খরচ কত?
হেবার সরকারি খরচ খুবই কম মাত্র ১০০ টাকা। অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ সহ মোট খরচ ১০০০ থেকে ১২০০ এর মধ্যে।
এবার আসুন জানি, হেবা দলিল বাতিল করা যায় কি না? আর করা গেলে তার পদ্ধতি কি?
বাংলাদেশের রেজিষ্ট্রেশন আইন অনুযায়ী, কোন দলিল রেজিষ্ট্রেশন করার সময় যদি যথাযথ বৈধ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তবে কোন দলিলই বাতিল করা যায় না তা হেবা দলিল হোক, সাব কওলা দলিল হোক আর অন্য যেকোন দলিলই হোক।
তবে, কোর্টে মামলা দায়ের করে এবং মামলার ডিক্রি নিয়ে হেবা দলিল বাতিল করা যাবে।