৬০ (ষাট) প্রমিত বিঘার অধিক কৃষি ভূমির মালিক বা তাহার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নূতন কোনো কৃষি ভূমি অর্জন করিতে পারিবেন না -ভূমি সংস্কার আইন ২০২৪

জমির মালিক কে? মালিক অর্থ কৃষি ভূমির অধিকারী কোনো ব্যক্তি, সংস্থা, সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ এবং ‘সংস্থা’ অর্থ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত কোনো সংস্থা বা কোম্পানি, ফার্ম, সোসাইটি, অ্যাসোসিয়েশন, অর্গানাইজেশন বা অথরিটি যে নামে অভিহিত হউক। আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাইবে ।

খাস জমি কোনগুলো? খাস ভূমি অর্থ State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1951) এর section 2 এর clause (15) এ সংজ্ঞায়িত khas land, এবং কোনো ব্যক্তি, সংস্থা বা অন্যান্য সরকারি বিভাগের মালিকানা বহির্ভূত ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খাস ভূমি এবং নিম্নলিখিত প্রকারের ভূমিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে, যথা:— কালেক্টরের ১ নং খতিয়ান বা ৮ নং রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত সকল ভূমি। নদী বা সমুদ্রগর্ভ হইতে জাগিয়া উঠা চরের ভূমি যাহা সিকস্তি ভূমির পয়স্তি হউক অথবা নূতন চর হউক। Bangladesh Land Holding (Limitation) Order, 1972 ( President’s Order No. 98 of 1972 ) এর section 3 অনুযায়ী পরিবার বা সংস্থার মালিকানাধীন ১ (এক) শত বিঘার অতিরিক্ত সরকারের নিকট সমর্পিত বা সমৰ্পণযোগ্য ভূমি এবং সরকার কর্তৃক নিলামে ক্রয়কৃত ভূমি। State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1951) এর section 92 অনুযায়ী মালিকানা ও দাবিদারবিহীন ভূমি; সরকারি বিভাগ বা বিধিবদ্ধ সংস্থার জন্য অধিগ্রহণকৃত ভূমির মধ্যে যে পরিমাণ ভূমি অব্যবহার্য থাকিবার কারণে সরকার পুনগ্রহণ করিয়াছে; এবং ধারা ৪ অনুযায়ী সরকারের নিকট সমর্পিত বা সমৰ্পণযোগ্য ভূমি।

জমি বন্টনের ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্য কে কে? পরিবার অর্থ কোনো ব্যক্তি এবং তাহার স্ত্রী, পুত্র, অবিবাহিতা কন্যা, পুত্রবধূ, পৌত্র ও অবিবাহিতা পৌত্রী; তবে শর্ত থাকে যে, পিতা-মাতা হইতে স্বাধীনভাবে পৃথক অন্নে বসবাস করিয়া আসিতেছেন এবং তাহার নিজ নামে ইউনিয়ন অভিকর (Holding Tax) প্রদান করে এইরূপ সাবালক বা বিবাহিত পুত্র এবং তাহার স্ত্রী, পুত্র ও অবিবাহিতা কন্যা একটি পৃথক পরিবার বলিয়া গণ্য হইবে।

ভূমির স্বত্বাধিকারী অর্থ এইরূপ কোনো ব্যক্তি যাহার নিকট হইতে বর্গাদার বর্গাচুক্তির অধীন চাষের জন্য ভূমি লাভ করিয়াছেন/ বর্গাভূমি অর্থ বর্গাদার হিসাবে কোনো ব্যক্তির চাষাধীন কোনো ভূমি

সারা দেশে কত শতাংশ জমিতে এক বিঘা? প্রমিত বিঘা’ অর্থ ৩৩ (তেত্রিশ) শতকে বিঘা ধরা হবে এবং বর্গাচুক্তি’ অর্থ এইরূপ চুক্তি যাহার অধীন কোনো ব্যক্তি বর্গাদার হিসাবে কোনো ভূমি চাষ করেন।

ভূমি সংস্কার আইন ২০২৩ পিডিএফ ডাউনলোড করুন

বর্গাচুক্তির অধীন চাষের মেয়াদ ২০২৪ । বর্গা গ্রহীতা কি জমি নিজের বলে দাবী করতে পারবে?

  • এই আইনের অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে চুক্তি সম্পাদন না করিয়া, কোনো ব্যক্তি তাহার ভূমি চাষ করিবার জন্য অন্য কোনো ব্যক্তিকে অনুমতি প্রদান করিবেন না এবং কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ভূমি তাহাদের মধ্যে উক্ত ভূমির উৎপন্ন ফসল ভাগ করিয়া নেওয়ার শর্তে চাষ করিতে পারিবেন না ।
  • কোনো বর্গাচুক্তি উহা সম্পাদনের তারিখ হইতে কমপক্ষে ১ (এক) বৎসরের জন্য কার্যকর থাকিবে ।
  • এই আইন কার্যকর হইবার অব্যবহিত পূর্বে অন্য কোনো ব্যক্তির ভূমির বর্গাদার হিসাবে চাষকারী কোনো ব্যক্তি এই আইন অনুযায়ী উক্ত ভূমি সংক্রান্ত বর্গাদার বলিয়া গণ্য হইবেন ।
  • এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত কোনো ভূমির স্বত্বাধিকারী এবং বর্গাদার ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) অনুযায়ী বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে একটি চুক্তি সম্পাদন করিবেন।
  • পক্ষগণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করিতে ব্যর্থ হইলে তাহাদের মধ্যে যে কোনো একজন চুক্তি সম্পাদন করাইবার জন্য সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে আবেদন করিতে পারিবেন ।
  • সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রয়োজনীয় অনুসন্ধানপূর্বক ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।
  • যদি নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, আবেদনকারী আবেদনে উল্লিখিত কোনো সম্পত্তি সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন করাইবার অধিকারী, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ বিরোধীপক্ষকে নির্দেশ প্রদানের তারিখ হইতে ২ (দুই) সপ্তাহের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবেন এবং যদি উক্ত পক্ষ চুক্তি সম্পাদন করিতে ব্যর্থ হন তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত পক্ষের হইয়া ইহা সম্পাদন করিবেন ।
  • এই ধারার অধীনে সম্পাদিত বর্গাচুক্তি এই আইন কার্যকর হইবার তারিখ হইতে কার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত তারিখ হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসর মেয়াদের জন্য বৈধ থাকিবে।
  • কোনো বর্গাদার বর্গাচুক্তির মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে মারা গেলে, উহার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা এই আইনের অধীন বর্গাচুক্তির অবসান না হওয়া পর্যন্ত মৃত বর্গাদারের পরিবারের জীবিত সদস্য উক্ত বর্গাভূমির চাষ অব্যাহত রাখিতে পারিবেন।

ক্রয় করা জমিও ষাট বিঘার বেশি থাকা যাবে না?

না। ৬০ (ষাট) প্রমিত বিঘার কম কৃষি ভূমির মালিক বা তাহার পরিবার যে কোনো উপায়ে নূতন কৃষি ভূমি অর্জন করিতে পারিবেন, তবে উক্তরূপে অর্জিত নূতন ভূমি তাহার মালিকানায় থাকা কৃষি ভূমিসহ একত্রে ৬০ (ষাট) প্রমিত বিঘার অধিক হইবে না । যদি কোনো ভূমির মালিক এই ধারার বিধান লঙ্ঘন করিয়া ক্রয়সূত্রে কোনো নূতন কৃষি ভূমি অর্জন করেন, তাহা হইলে যে পরিমাণ ভূমি ৬০ (ষাট) প্রমিত বিঘার অতিরিক্ত হইবে তাহা সরকারের অনুকূলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সমর্পিত হইবে এবং উক্ত সমর্পিত ভূমির মূল্য বাবদ কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদেয় হইবে না।  তবে শর্ত থাকে যে, উত্তরাধিকার, দান বা উইল এর মাধ্যমে অর্জিত ভূমির ক্ষেত্রে উক্ত বিধান প্রযোজ্য হইবে না । উত্তরাধিকার সূত্রে অর্জিত ভূমি ৬০ (ষাট) প্রমিত বিঘার অধিক হইলে ভূমির মালিক তাহার পছন্দ অনুযায়ী ৬০ (ষাট) বিঘা ভূমি রাখিতে পারিবে এবং অবশিষ্ট ভূমি সরকার বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ প্রদানপূর্বক খাস করিতে পারিবে।

ভূমি আইন ২০২৩ । ভূমি ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ আইন ২০২০ খসড়া কপি

দলিল যার জমি তার আইন পাশ ২০২৩ । ভূমিমন্ত্রী বিলটি পাশের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়

ওয়ারিশ বন্টন ক্যালকুলেটর । ভূমি বাটোয়ারা আইন না জেনেও বাবার সম্পত্তি বুঝে নিবেন কিভাবে?

One thought on “ভূমি সংস্কার আইন ২০২৪ । জমি বর্গাচুক্তির বিধি -বিধান জেনে নিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *