সূচীপত্র
ব্যক্তি ও কোম্পানি আয়কর বিধিমালা সম্প্রতি জারি হয়েছে- নতুন ফরম প্রকাশ করা হয়েছে- একই সাথে পুরাতন ফরমও কার্যকর থাকবে – আয়কর রিটার্ন বিধিমালা ২০২৩
স্বল্প আয়ধারীদের কি এক পাতার ফরম? হ্যাঁ। দেশে ও বিদেশে যাহার মোট সম্পত্তির মূল্য ৪০,০০,০০০ (চল্লিশ লক্ষ) টাকার অধিক নয়। যাহার মোট সম্পত্তির মূল্য ৪০,০০,০০০ (চল্লিশ লক্ষ) টাকার নিম্নে কিন্তু আয়বর্ষের কোনো সময়ে তিনি মোটরযানের মালিক ছিলেন অথবা সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে গৃহসম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টে বিনিয়োগ করিয়াছেন অথবা বিদেশে কোনো পরিসম্পদের মালিক হইয়াছেন অথবা কোনো কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হইয়াছেন। অনিবাসী বাংলাদেশি স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা এবং স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা যিনি বাংলাদেশি নহেন তাহারা কেবল বাংলাদেশে অবস্থিত সকল সম্পদের তথ্য প্রদান করিবেন।
বেতন আয়ের ক্ষেত্রে বেতন বিবরণী, ব্যাংক মুনাফা/সুদের ক্ষেত্রে ব্যাংক বিবরণী যুক্ত করতে হবে? হ্যাঁ। সঞ্চয়পত্রের উপর সুদের ক্ষেত্রে প্রদানকারী ব্যাংকের সনদপত্র, গৃহ সম্পত্তি আয়ের ক্ষেত্রে ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌর কর ও খাজনা প্রদানের রশিদ, গৃহ ঋণের উপর সুদ থাকিলে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সনদপত্র/বিবরণী, বিমা কিস্তি প্রদত্ত থাকিলে কিস্তি প্রদানের রশিদ, অংশীদারি ফার্মের আয়ের অংশ থাকিলে অংশীদারি ফার্মের কর নির্ধারণ আদেশের কপি/আয়-ব্যয়ের হিসাব ও স্থিতিপত্র, মূলধনি মুনাফা থাকিলে প্রমাণাদি, ডিভিডেন্ট আয় থাকিলে ডিভিডেন্ট প্রাপ্তির সনদপত্র, অন্যান্য উৎসের আয় থাকিলে উহার বিবরণী এবং সঞ্চয়পত্র, এল.আই.পি, ডিপিএস, যাকাত, স্টক/শেয়ার ক্রয় ইত্যাদিতে বিনিয়োগ থাকিলে প্রমাণাদি যুক্ত করতে হবে।
সম্পদ ও দায় দেখাতে হবে কি? আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী আয় পরিগণনার ক্ষেত্রে পরিবারের আয় অন্তর্ভূক্ত হবে। প্রয়োজনে পৃথক বিবরণী সংযুক্ত করতে হবে। করদাতার স্ত্রী বা স্বামী (করদাতা না হইলে), নাবালক সন্তান ও নির্ভরশীলের নামে কোনো আয় থাকিলে সংশ্লিষ্ট তফসিল এবং এস.আর.ও. অনুযায়ী কর অব্যাহতি প্রাপ্ত ও করমুক্ত আয়ের বিবরণ যুক্ত করতে হবে। আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১ অনুযায়ী ঘোষিত কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয় দাখিলকৃত দলিলপত্রাদি করদাতা অথবা করদাতার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
আয়কর নির্দেশিকা ২০২৩-২০২৪ । আয়কর রিটার্ন দাখিলের নিয়ম । আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণের নিয়ম । আয়কর রিটার্ন কত টাকা?
জীবনযাপন বা পারিবারিক খরচে কি কি আসবে? ব্যক্তিগত ও পরিবারের ভরণপোষণ খরচ, আবাসন সংক্রান্ত ব্যয়, ব্যক্তিগত যানবাহন সংক্রান্ত ব্যয়, ইউটিলিটি সংক্রান্ত ব্যয় (বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস, পানি, টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট ইত্যাদি), শিক্ষা ব্যয়, নিজ খরচে দেশে ও বিদেশ ভ্রমণ, অবকাশ ইত্যাদি সংক্রান্ত ব্যয়, উৎসব ও অন্যান্য বিশেষ ব্যয়, উৎসে কর্তিত/সংগৃহীত কর (সঞ্চয়পত্রের মুনাফার উপর, কর্তিত করসহ) ও বিগত বৎসরে রিটার্নের ভিত্তিতে প্রদত্ত আয়কর ও সারচার্জ, প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যান্য উৎস হইতে গৃহীত ব্যক্তিগত ঋণের সুদ পরিশোধ ইত্যাদি আসবে।
আয়কর রিটার্ন বিধিমালা ২০২৩ । Return form 2023
আয়কর ফরম ফিলার নিয়ম ২০২৩ । রিটার্ন ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় নির্দেশাবলি
- এই আয়কর রিটার্ন আইনে বর্ণিত নির্ধারিত ব্যক্তি কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও প্রতিপাদিত হইতে হইবে।
- রিটার্নের সহিত আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭৩ মোতাবেক নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী দাখিল করিতে হইবে।
- ব্যাংক মুনাফা/সুদের ক্ষেত্রে ব্যাংক বিবরণী, কৃষি আয় থাকিলে সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী আয়ের বিবরণী, সঞ্চয়পত্রের উপর সুদের ক্ষেত্রে প্রদানকারী ব্যাংকের সনদপত্র, গৃহ সম্পত্তি আয়ের ক্ষেত্রে ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌর কর ও খাজনা প্রদানের রশিদ, গৃহ ঋণের উপর সুদ থাকিলে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সনদপত্র/বিবরণী, বিমা কিস্তি প্রদত্ত থাকিলে কিস্তি প্রদানের রশিদ, মূলধনি মুনাফা থাকিলে প্রমাণাদি, ডিভিডেন্ড আয় থাকিলে ডিভিডেন্ড প্রাপ্তির সনদপত্র, অন্যান্য উৎসের আয় থাকিলে উহার বিবরণী;
- সংশ্লিষ্ট তফসিল অনুযায়ী অবচয় দাবি সম্বলিত অবচয় বিবরণী;
- আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী আয় পরিগণনা।
- সংশ্লিষ্ট তফসিল এবং এস.আর.ও. অনুযায়ী কর অব্যাহতি প্রাপ্ত ও করমুক্ত আয়ের বিবরণ;
- আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ১ অনুযায়ী ঘোষিত কর অব্যাহতি প্রাপ্ত আয়।
- দাখিলকৃত দলিলপত্রাদি করদাতা অথবা আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩২৭ অনুযায়ী অনুমোদিত প্রতিনিধি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইতে হইবে।
- করদাতা বা তাঁহার অনুমোদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক।
- স্থান সংকুলান না হইলে প্রয়োজনে পৃথক কাগজ ব্যবহার করা যাইবে।
- কোনো আয়বর্ষে আন্তর্জাতিক লেনদেন রহিয়াছে এইরূপ ক্ষেত্রে ধারা ২৩৮ এর অধীন আন্তর্জাতিক লেনদেন সম্পর্কিত বিবরণী দাখিল করিতে হইবে।
প্রদেয় কর পরিগণনায় যে বিষয়গুলো আসবে?
মোট আয়ের উপর আরোপযোগ্য আয়কর নির্ণয় করতে হবে। আয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কর রেয়াত নির্ণয় করতে হবে। বিনিয়োগের উপর রেয়াত-পরবর্তী প্রদেয় করদায় বের করতে হবে। করযোগ্য আগের লিমিট ক্রস করলে প্রদেয় কর শুন্য বা নেগেটিভ হলেও ন্যূনতম কর পরিশোধ করতে হবে। টার্নওভার কর উল্লেখ করতে হবে যদি থাকে। সর্বশেষ প্রদেয় কর (ক্রমিক ১১, ১২ ও ক্রমিক ১৩ এর মধ্যে যাহা অধিক) নির্ণয় করতে হবে। রিটার্ণ পরিশোধের সময় সীমা অতিক্রম করলে বিলম্ব সুদ, জরিমানা অথবা আয়কর আইনের অধীন প্রদেয় অন্য কোনো অঙ্ক (যদি থাকে) তা উল্লেখ করতে হবে এবং মোট প্রদেয় কর (১৪+১৫) ই চূড়ান্ত কর দায়।