আজকের খবর ২০২৪

নবী কখন ঘরে নামাজ পড়তেন । বিশ্বনবি মসজিদে ফরজের আগে-পরে কি কোন নামাজ পড়তেন?

ফরজ নামাজের পর বিশ্বনবী দোয়া দরুদ পড়তেন অথচ আমরা ফরজ আদায়ের পর পর নবীর সুন্নত আদায়ের জন্য উঠে যাই এবং নামাজ শেষে দৌড়াই- বিশ্ব নবী যেভাবে নামাজ পড়তেন আমাদেরও সেভাবেই নামাজ আদায় করা উচিৎ নয় কি?– নবী কখন ঘরে নামাজ পড়তেন

সূর্য উদয়ের পর দু’রাকাত নামাজের গুরুত্ব কতটুকু? ফজরের পর নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার জন্য তার উম্মতকে উৎসাহ প্রদান করেন, এবং এতে যে সওয়াব রয়েছে তাও স্মরণ করিয়ে দেন। হাদিসে পাকে এসেছে- হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- مَنْ صَلَّى الْغَدَاةَ فِي جَمَاعَةٍ ثُمَّ قَعَدَ يَذْكُرُ اللَّهَ حَتَّى تَطْلُعَ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ كَانَتْ لَهُ كَأَجْرِ حَجَّةٍ وَعُمْرَةٍ যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায়ের পর বসে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থেকে সূর্য উদয় হওয়ার পর দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ এক হজ্জ ও ওমরার সওয়াব পাবে। ‘পরিপূর্ণ’ এ কথাটি তিনি তিনবার বলেন।’ (তিরমিজি ৫৮৬)

ফরজ নামাজের পর কি ধরনের দোয়া দরূদ পড়া পড়তেন নবী? রাসুল (সা.) প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে ৩ বার আসতাগফিরুল্লাহ্‌ বলতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১২২২) । তারপর ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরাম’ – এটি পরতেন । (মুসলিম, হাদিস : ১২২১) । সুবহানাল্লাহ [৩৩ বার], আলহাদুলিল্লাহ [৩৩ বার], আল্লাহু আকবার [৩৩ বার], [লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকা লাহু; লাহুল মুলকু; ওয়ালাহুল হামদু; ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির) (১ বার)। এগুলো পাঠে গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (মুসলিম, হাদিস : ১২৪০)

কেন আয়াতুল কুরসি পড়বেন? রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাঁধা থাকবে না।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৯৪৪৮; তাবারানি, হাদিস : ৭৮৩২) । ‘আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার’ ৭ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। সে দিন বা সে রাতে মারা গেলে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৮০) । সুরা ইখলাস, ফালাক্ব ও সুরা নাস, প্রত্যেকটি ৩ বার করে, ফজর ও মাগরিবের পর। রাসুল (সা.) বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমার আর কিছুরই দরকার হবে না।

ঘরে বসে ১২ রাকাত নফল নামাজ যা নবী প্রতিদিন আদায় করতেন / নবীর নফল নামাজই আমাদের উপর সুন্নত হিসেবে অবর্তীন হয়েছে

সকল নামাজই আল্লাহ তা’য়ার জন্য আদায় বা পড়া হয়। নবী যে সকল নফল নামাজ আদায় করতেন তাই আমরা সুন্নত হিসেবে আদায় করে থাকি।

নিশ্চয়ই নামাজ মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজ হতে বিরত রাখে: সুরা আল-আনকাবুত, আয়াত ৪৫

ঘরে যে সকল নফল আদায় করতেন । ঘরে নাকি মসজিদে সুন্নত আদায় করবেন?

  1. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু শাকিক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নফল নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন- তিনি (বিশ্বনবি) আমার ঘরে জোহরের (ফরজ নামাজের) আগে চার রাকাত নামাজ আদায় করেন, এরপর বাইরে গিয়ে লোকরেদকে নিয়ে (ফরজ) নামাজ আদায় করেন। পুনরায় আমার ঘরে ফিরে এসে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন। তিনি লোকদেরকে নিয়ে ইশার নামাজ আদায়ের পর আমার ঘরে এসে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। এছাড়া তিনি রাতে বিতরসহ ৯ রাকাত নামাজ আদায় করতেন। তিনি রাতে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে এবং দীর্ঘক্ষণ বসে নামাজ আদায় করতেন। তিনি দাঁড়িয়ে কেরাত পড়ার সময় ওই অবস্থায়ই রুকু ও সিজদা করতেন আর বসাবস্থায় কেরাত পড়লে বসাবস্থায় থেকেই রুকু ও সিজদা করতেন। ফজর উদয় হলে তিনি দুই রাকাত সালাত আদায় করতেন। এরপর বের হয়ে লোকদের নিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করতেন।’ (মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ)
  2. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমার রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোহরের (ফরজ নামাজের) আগে দুই রাকাত ও পরে দুই রাকাত; মাগরিবের পর দুই রাকাত নামাজ তাঁর ঘরে আদায় করতেন। তিনি ইশার পরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। আর জুমার (ফরজ নামাজের) পরে ঘরে এসে দুই রাকাত আদায় করতেন।’ (আবু দাউদ)
  3. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোহরের আগে ৪ রাকাত ও ফজরের আগে ‍দুই রাকাত নামাজ কখনো ছাড়তেন না।’ (বুখারি, আবু দাউদ)
  4. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজরের আগে দুই রাকাত নামাজের চেয়ে অধিক দৃঢ় প্রত্যয় অন্য কোনো নফল নামাজে রাখেননি।’ (বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ)

দরূদ শরিফ কখন পড়বেন?

দরুদ শরিফ ১০ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। কেয়ামতের দিন রাসুল (সা.)-এর শাফাআত লাভ হবে। রাদ্বিতু বিল্লাহি রাব্বা, ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনাঁও, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা— এই দোয়াটি ৩ বার, ফজর ও মাগরিবের পর। এটা পড়লে রাসুল (সা.) হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, আল্লাহ উক্ত ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করবেন। (ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ০৬/৩৬) ।  রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার বলে, «سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ» (সুব্‌হানাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহি) তার পাপগুলো মুছে ফেলা হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির সমান হয়ে থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০৫; মুসলিম, হাদিস : ২৬৯১)
https://www.youtube.com/watch?v=-HpP93mcxIg

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *