আমাদের যাদের ব্যাংক হিসাব রয়েছে, টাকা উত্তোলন বা অন্য কাউকে পাওনা পরিশোধ করার জন্য আমাদেরকে প্রায়শই চেক বই ব্যবহার করতে হয়। তবে আমাদের মধ্যে অনেকেই চেক লিখার সঠিক নিয়ম জানি না। ফলে আমাদের মধ্যে অনেক কনফিউজন ও দ্বিধা-দন্ধ কাজ করে যার দ্বরুন চেকে কাটা-ছেঁড়া হয় যেটি মোটেও উচিত নয়। এছাড়া নতুন গ্রাহকরাও একই সমস্যায় পড়েন। যদিও অনেকেই Debit Card ব্যবহার করেন তবে অনেক ক্ষেত্রে আমাদেরকে চেক ব্যবহার করতেই হয়।

আজকে আমরা জানবো কিভাবে সঠিকভাবে ও চেকের নিরাপত্তা বজায় রেখে কিভাবে ব্যাংকের চেক লিখতে হয়।

ধাপ ১- Date বা তারিখ লিখুন

একটি চেকের ২ টি অংশ থাকে, মুড়ি এবং মূল চেক । মুড়ির আসলে তেমন কোন কাজ নেই। এটি শুধুমাত্র আপনার নিজের হিসাব রাখতে সুবিধা করে যেমন কবে টাকা তুললেন, কবে কাকে চেক প্রদান করলেন ইত্যাদি তথ্য লিখে রাখতে পারেন। সুতরাং মুড়ি এবং মূল চেক দুই জায়গায় শুরুতে তারিখ বসিয়ে নিবেন। ইংরেজি বা বাংলা যেকোন ভাষাতেই আপনি চেক লিখতে পারবেন কোন সমস্যা নেই।

ধাপ ২- Pay to

Pay to এর অর্থ পরিশোধ করুন। চেকে Pay to………………. Or bearer লিখা থাকে। আপনি যাকে চেকের মাধ্যমে টাকা দিচ্ছেন এই অংশে তার নাম লিখবেন। যদি নিজের প্রয়োজনে টাকা উত্তোলন করেন তবে এখানে নিজ বা Self লিখতে পারেন। পাওনাদার বা অন্য কাউকে টাকা দিতে হলে, তার নাম লিখুন। তবে যার নাম লিখছেন তিনি ছাড়াও অন্য কেউ উক্ত চেক টি ব্যাংকে নিয়ে গেলেও তিনি টাকা তুলতে পারবেন কারণ Or bearer আছে। অর্থাৎ Pay to Rahim or bearer থাকলে জনাব করিমও টাকা তুলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে চেকের পেছনে জনাব করিমকে স্বাক্ষর করতে হবে এবং তার NID Copy সংযুক্ত করতে হবে।

তবে Pay to এর জায়গায় কোন ব্যাংক একাউন্ট নম্বর লিখলে তা ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারে পরিশোধ করা যাবে না, তখন সে চেকের টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে তুলতে হবে। একই ভাবে Cross Cheque এর ক্ষেত্রেও Over the Counter টাকা Payment হবেনা, ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা জমা এবং তুলতে হবে।

নিজের চেক এর টাকা নিজে নিজে উত্তোলন না করলে এবং টাকার পরিমাণ বেশি হলে চেকের বাহকের NID Card এর Photocopy সাথে নেয়া ভাল। কারণ ব্যাংক উক্ত ব্যাক্তির পরিচিতি নিশ্চত হতে ব্যাংক NID Card এর Photocopy চাইতে পারে।

ধাপ ৩- Taka বা টাকার পরিমাণ লিখুন

চেকের মূল অংশে টাকা লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই কথায় লিখবেন এবং শেষে মাত্র লিখবেন। লেখার শুরুতে ও শেষে খালি জায়গা থাকলে একটি লাইন টেনে দিতে পারেন যাতে করে নতুন কোন শব্দ কেউ যোগ করতে না পারে।

এছাড়া, Tk. লেখা অংশে একটি বক্স থাকে সেখানে, অংকে টাকার পরিমান লিখুন। টাকার অংকের শেষে /- চিহ্ন ব্যবহার করুন এবং Inverted Comma (কমা) ব্যবহার করুন যেমন “১০,০০০/-” টাকা । টাকার পরিমান লিখার সময় কমা (,) না দিয়ে, টাকার পরিমান লিখা শেষ করে তার পর কমা দিন। এতে করে সংখ্যার মাঝে জায়গা থাকবে না। তাই নতুন কোন সংখ্যা বসানো যাবে না এবং আপনার চেকের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।

ধাপ ৪- A/C Holder’s Signature

চেকের নিচে ডান পাশে যেখানে A/C Holder’s Signature লেখা আছে, তার উপরে আপনাকে স্বাক্ষর দিতে হবে। ব্যাংকে হিসাব খোলার সময় আপনি স্বাক্ষর কার্ডে যে স্বাক্ষর দিয়েছেন, এখানে সেই স্বাক্ষরটিই দিবেন। ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ভিন্ন ভিন্ন স্বাক্ষর ব্যবহার করার ফলে অনেক সময় অনেকে ভুলে যান কোন স্বাক্ষরটি কোন ব্যাংকে ব্যবহার করেছেন। এমতাবস্থায় আপনি আপনার ব্যাংকে গিয়ে স্বাক্ষরটি দেখার জন্য ব্যাংক কর্মকর্তাকে অনুরোধ করতে পারেন।

ধাপ ৫- পেছনের পৃষ্ঠায় অতিরিক্ত স্বাক্ষর

যিনি চেকের টাকা উত্তোলন করবেন তাকে চেকের পেছনে উপর-নিচ করে অতিরিক্ত ২ টি স্বাক্ষর দিতে হবে।

চেক লেখার বাড়তি সতর্কতা

চেক লেখার ক্ষেত্রে খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেন কোন ধরণের ভুল ও কাটা-ছেঁড়া না হয়। যদি সঙ্গত কোন কারণে ভুল হয় তবে তা ১ টানে কেটে তার পাশে/ উপরে/ নীচে শুদ্ধভাবে লিখুন এবং সেখানে আপনার (ব্যাংক হিসাব ধারীর) একটি স্বাক্ষর দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *