GeTPH সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতন ও ভাতা প্রদান হবে আরও স্বচ্ছ ও সহজতর।

সফ্টওয়্যারটির মাধ্যমে গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে প্রায় সাড়ে নয় কোটি গ্রহীতার ব্যাংক হিসাবে সরাসরি সরকারি অর্থ প্রেরণ করা হয়েছে। সার্বিক আলােচনা শেষে গভর্নর মহােদয় সফ্টওয়্যারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রেস বিজ্ঞপ্তি

প্রধান কার্যালয় ঢাকা

সূত্র নং: ডিসিপি(পিআর) ১/২০২১-১২/৩ তারিখ : ২০ ডিসেম্বর, ২০২১

Government e-Transaction Processing Hub (GeTPH) সফটওয়্যারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা ও পেনশন, মুক্তিযােদ্ধা ভাতা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিধবা, বয়স্ক, পঙ্গুত্ব, প্রতিবন্ধী ইত্যাদি ভাতা, বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিল, জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মুনাফা ও মূলধন, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপবৃত্তির অর্থ EFT-এর মাধ্যমে G2P পদ্ধতিতে দ্রুততম সময়ে সরাসরি স্ব-স্ব হিসাবে জমা করার জন্য সরকার কর্তৃক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। উক্ত উদ্যোগ বাংলাদেশ ব্যাংক এর মাধ্যমে সফলভাবে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব আইটি জনবল কর্তৃক Government e-Transaction Processing Hub (GeTPH) সফ্টওয়্যার উন্নয়ন করা হয়। পরবর্তীতে পরীক্ষামূলক পরিচালনা শেষে ১৯ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে সফ্টওয়্যারটির উদ্বোধন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গভর্নর জনাব ফজলে কবির এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব জনাব আব্দুর রউফ তালুকদার। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর জনাব কাজী ছাইদুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর সর্বজনাব আহমেদ জামাল, আবু ফরাহ্ মােঃ নাছের এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলে। অটোমেশনের মাধ্যমে ‘সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ কর্মসূচিকে আরাে বেগবান করতে Government e-Transaction Processing Hub (GeTPH) সফ্টওয়্যারটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। ২০১২ সালে চালু হওয়া সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পেনশন G2P পদ্ধতিতে ইলেকট্রনিক ফান্ড এর মাধ্যমে স্ব স্ব হিসাবে জমা করার কার্যক্রম পরিচালিত হতাে। তবে সে পরিসর ছিল সীমিত। দৈনিক সক্ষমতা ছিল মাত্র ১,১৫,০০০ (এক লক্ষ পনের হাজার)টি ইএফটি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে। সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদির সাথে সামাজিক নিরপত্তা বেষ্টনীর ভাতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ভাতা, ইএফটি এর মাধ্যমে সরাসরি গ্রহীতাদের হিসাবে (ব্যাংক/এমএফএস) প্রেরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিল ও জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত অনলাইন সঞ্চয়পত্র বিক্রয় ও মুনাফা নগদায়নের অর্থ সরাসরি বিনিয়ােগকারীর হিসাবে প্রেরণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এত ব্যাপক পরিমাণ ইএফটি ডাটা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রসেস করার জন্য একটি নতুন সফটওয়্যার বাস্তবায়ন করা জরুরি হয়ে পড়ে। সঠিক সময়ে GeTPH সফ্টওয়্যারের উন্নয়ন এবং বাস্তবায়ন করা। সম্ভব হওয়ায়, কোভিড-১৯ অতিমারী সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা ও সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অর্থমন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ২০০৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তােলার ঘােষণা দেন। সরকারি বিভিন্ন সেবা স্বল্প সময়ে জনসাধারণের কাছে পৌছে দেয়াই হলাে ডিজিটাল বাংলাদেশ এর অন্যতম লক্ষ্য। আগে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ব্যক্তির কাছে পৌছুতে ৩-৬ মাস সময় লাগতাে। কিন্তু ইএফটির। মাধ্যমে এখন তা মুহূর্তে পৌছে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন এ সফটওয়্যারটির মাধ্যমে এ সেবা এখন আরাে দ্রুততর হবে। এর ফলে সময় যেমন বাচবে একই সাথে সরকারের খরচও কমবে।

যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের পেমেন্ট গেটওয়ে, তাই প্রতিষ্ঠানটি অটোমেশন ও ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় হ্রাস করার কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার বলে তিনি মনে করেন। ডেপুটি গভর্নর জনাব আহমেদ জামাল বলেন, ‘৮০-র দশকে কম্পিউটার উপবিভাগের কার্যক্রম শুরু হওয়ার মাধ্যমে ব্যাংকিং এর ডিজিটাল কার্যক্রমের প্রচলন শুরু। অর্থনৈতিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সুচারুভাবে সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সবসময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। নতুন এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইএফটি কার্যক্রমকে আরাে গতিশীল করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইনহাউজ সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করার মধ্যদিয়ে যেমন নিজেদের প্রয়ােজন মতাে সফটওয়্যার তৈরি করছে একই সাথে এর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটছে। GeTPH সফ্টওয়্যার মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানের সভাপতি ডেপুটি গভর্নর জনাব কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বর্তমান সময়ে এ সমম্বয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব লােকবল দ্বারা উদ্ভাবিত ১২৯টি সফটওয়্যারের মধ্যে ১২৪টি বর্তমানে কার্যকর রয়েছে।

তৃতীয় পক্ষ থেকে কেনা ১০টি সফটওয়্যারের বিকল্প নিয়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি টিম কাজ করছে। সর্বোপরি আর্থিক খাতের আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক, মতিঝিল অফিসের উদ্যোগে প্রস্তুতকৃত GeTPH সফটওয়্যারের সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যা জাতীয় পর্যায়ে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার অক্ষুন্ন রেখেছে। এছাড়াও আয়ােজক হিসেবে স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের নির্বাহী পরিচালক জনাব মােঃ মােশাররফ হােসেন খান অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রমে অটোমেশনের প্রয়ােজনীয়তা ও গুরুত্ব সম্পর্কে আলােকপাত করেন।

উল্লেখ্য যে, আলােচ্য সফ্টওয়্যারটির মাধ্যমে গত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে প্রায় সাড়ে নয় কোটি গ্রহীতার ব্যাংক হিসাবে সরাসরি সরকারি অর্থ প্রেরণ করা হয়েছে। সার্বিক আলােচনা শেষে গভর্নর মহােদয় সফ্টওয়্যারটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

জাতীয় ও ব্যাংকিং স্বার্থে উল্লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি প্রচারের জন্য বিশেষ অনুরােধ করা হলাে।

ধন্যবাদান্তে,

জী, এম, আবুল কালাম আজাদ

মহাব্যবস্থাপক (সহকারী মুখপাত্র, বাংলাদেশ ব্যাংক)

ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন্স এন্ড পাবলিকেশন্স

বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রধান কার্যালয় মতিঝিল, ঢাকা। 

GeTPH সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতন ও ভাতা প্রদান হবে আরও স্বচ্ছ ও সহজতর: ডাউনলোড

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *