জমি বন্ধক রাখা পুরাতন রীতি অর্থাৎ এটি নতুন কিছু নয়, টাকার বিনিময়ে জমি ভোগ করা হয়-টাকা ফেরত পেলে ভোগ দখল ছেড়ে দিতে হয় – জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম

টাকা ফেরত জমি ফেরত শর্ত?– হ্যাঁ। সাধারণত ব্যক্তিগত বা পারিবারিক খরচ নির্বাহ জন্য নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় তপশীলোক্ত ৪০(চল্লিশ ) শতক অর্থাৎ ১,০০০০০ ( এক লক্ষ) বা তার চেয়ে বেশি অর্থ একটি নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখপূর্বক নগদ গ্রহণ করা হয়। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত গ্রহীতা উল্লিখিত জমি ভোগ দখলে রাখিবেন। মেয়াদ পূর্ণ হইলে  প্রদত্ত সমুদয় টাকা বরাবরে ফেরত প্রদান পূর্বক জমি বন্ধক মুক্ত করার শর্ত উল্লেখ করা হয়।

হেবা করা হয় নাই উল্লেখ করতে হবে?– হ্যাঁ। মেয়াদের পরও আপনার আসল টাকা ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত জমি  ভোগ দখলে স্থিত থাকিবে। আসল টাকা ফেরত দেওয়ার পর জমি বন্ধক মুক্ত হইবে। বন্ধককৃত জমি গ্রহিতা ব্যতিত অন্য কাহাকেও কোন প্রকার বন্ধক, হেবা, দান, বা হস্থান্তর করি নাই এমনভাবে উল্লেখ থাকা ভাল। যদি ভোগ দখলে কোন প্রকার বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করি বা করাই আপনার ভোগ দখলে কোন প্রকার সমস্যা হইলে আসল টাকা ফেরত সহ দ্বীগুন ক্ষতিপূরণ দিতে এবং শঠামীর দায়ে আইন আদালতে শাস্তিভোগ করানো যাইবে। আমার সম্পাদিত অত্র বন্ধকনামা সর্বাদালতে গ্রহণযোগ্য ও বলবৎ হইবে এমনভাবে উল্লেখ থাকা ভাল।

জমি বন্ধকের কি সুনির্দিষ্ট আইন আছে? বন্ধকের বা রেহেনের মূল্য নির্বিশেষে, দলিল জমা দেওয়া রেহেন ব্যতীত অন্যান্য রেহেন কেবলমাত্র দলিলদাতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ও দুইজন সাক্ষী কর্তৃক প্রত্যয়িত রেজিস্ট্রি দলিল দ্বারাই সম্পাদন করা যেতে পারে। মূল্য নির্বিশেষে উক্তরূপ স্বাক্ষরিত ও প্রত্যয়িত দলিল দ্বারা অথবা সাধারণ রেহেন ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে সম্পত্তির দখল অর্পণ দ্বারা রেহেন কার্যকর করা যেতে পারে। তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বা ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী কোন তফসিলি ব্যাংক অথবা ১৯৯৩ সালের ফিন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন আইনের সংজ্ঞানুযায়ী কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট স্বত্বের দলিল জমার মাধ্যমে বন্ধকের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রেজিস্ট্রিকৃত দলিলের মাধ্যমে বন্ধক কার্যকর হয়। বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কোন ঋণ বা অগ্রিম অর্থ পরিশোধের জামিন গ্রহণ করা অথবা যে কাজ সম্পন্নে আর্থিক দায়িত্ব রয়েছে, তার জামিন গ্রহণ করা বন্ধক এবং যে দলিলের মাধ্যমে উক্ত বন্ধক প্রদান বা গ্রহণ সম্পন্ন হয়, তাকে বন্ধকনামা বলে।

জমি বন্ধক নামা লেখার নিয়ম,জমি বন্ধক নামা,বন্ধক নামা লেখার নিয়ম। জমি বন্ধকের চুক্তিপত্র নমুনা

বন্ধক কি? সম্পত্তি হস্তান্তর আইন , 1882 অনুসারে, একটি বন্ধকী নির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির সুদ হস্তান্তরকে বোঝায়, একটি ঋণের মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ প্রদানের জন্য, একটি বিদ্যমান বা ভবিষ্যতের ঋণ, বা একটি প্রবৃত্তির কার্য সম্পাদন যা প্রদান করতে পারে।

জমি বন্ধকের চুক্তি নামা

স্ট্যাম্প জমি বন্ধক নামা pdf / স্ট্যাম্প জমি বন্ধক নামা Word File

বন্ধকী দলিল (ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান) রেজিস্ট্রেশন ফিস । ব্যক্তি পর্যায়ে কি রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক

  1. রেজিস্ট্রেশন ফিঃ (ক) ঋণের পরিমাণ অনূর্ধ্ব ৫ লক্ষ টাকা হলে – ১%, কিন্তু ২০০ টাকার কম নয় এবং ৫০০ টাকার অধিক নয়। (খ) ঋণের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে কিন্তু অনূর্ধ্ব ২০ লক্ষ টাকা হলে – ০.২৫%, কিন্তু ১,৫০০ টাকার কম নয় এবং ২,০০০ টাকার অধিক নয়। (গ) ঋণের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকার ঊর্ধ্বে হলে – ০.১০%, কিন্তু ৩,০০০ টাকার কম নয় এবং ৫,০০০ টাকার অধিক নয়।
  2. স্ট্যাম্প শুল্কঃ [দফা – ৩৯(২)] (ক) ঋণের পরিমাণ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে – ২,০০০ টাকা। (খ) ঋণের পরিমাণ ৫০ লক্ষ টাকার অধিক কিন্তু ১ কোটি টাকার অধিক না হলে – ৫,০০০ টাকা। (গ) ঋণের পরিমাণ ১ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে হলে – প্রথম ১ কোটি টাকার জন্য ৫,০০০ টাকা এর পরের অবশিষ্ট ঋণের জন্য ০.১০% হারে অতিরিক্ত শুল্ক তবে ৫ কোটির বেশি নয়।
  3. স্থানীয় সরকার করঃ প্রযোজ্য নয়।
  4. উৎসে আয়কর (53H): প্রযোজ্য নয়।
  5. উৎসে আয়কর (53FF): প্রযোজ্য নয়।
  6. মূল্য সংযোজন কর (VAT): প্রযোজ্য নয়।
  7. ই ফিঃ ১০০ টাকা।
  8. এন ফিঃ (ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ১৬ টাকা। (খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা।
  9. এনএন ফি (নকলনবিশগনের পারিশ্রমিক): (ক) বাংলায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ২৪ টাকা। (খ) ইংরেজি ভাষায় প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা উহার অংশ বিশেষের জন্য ৩৬ টাকা। ১০) হলফনামাঃ ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রিন্ট করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
  10. কোর্ট ফিঃ প্রযোজ্য নয়।

বন্ধকী দলিল রেজিস্ট্রেশন ফিস পরিশোধ পদ্ধতি কি?

দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবতীয় ফিসাদি স্থানীয় সোনালী ব্যাংক এর ট্রেজারি শাখায় জমা প্রদান করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন ফি, ই ফি, এন ফি একসাথে একটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-২১৬১-০০০০-১৮২৬ তে জমা প্রদান করতে হবে। স্ট্যাম্প শুল্ক (দলিলে ব্যবহৃত স্ট্যাম্প বাদে) পে-অর্ডারের মাধ্যমে কোড নং ১-১১০১-০০২০-১৩১১ তে জমা প্রদান করতে হবে। দলিলে সর্বোচ্চ ১২০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করা যাবে। এনএন ফি নগদে অফিসে জমা প্রদান করতে হবে। কোন বাণিজ্যিক ব্যাংক বা লিজিং কোম্পানি কর্তৃক ৫ লক্ষাধিক টাকা ঋণ মঞ্জুরের ক্ষেত্রে বন্ধকী দলিলের দাতার TIN সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক। রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত কোর্ট বা আদালতে সেটি গ্রহণযোগ্য হবে না।

ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন দলিলের নমুনা । ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন খরচ কত টাকা?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *